সাহরি খাওয়া সুন্নত। রোজা রেখে শারীরিক সুস্থতার জন্য সাহরি করা অত্যন্ত জরুরি। রমজানের রোজা শুরু করার জন্য মুসলমানেরা শেষ রাতে ফজরের ওয়াক্তের আগে সাহরির খাবার খান ও রোজার নিয়ত করেন।
যেকোনো ইবাদতের জন্য নিয়ত করা জরুরি। নিয়ত ছাড়া কোনো ইবাদত কবুল করবেন না আল্লাহ তায়ালা। হাদিসে রাসূল (সা.) বলেছেন, প্রত্যেক আমল নিয়তের ওপর নির্ভর করে।
রোজা রাখার জন্য আরবিতে দোয়া পড়া হয়। অনেকে মনে করেন দোয়া না পড়লে রোজার নিয়ত হবে না। তবে আলেমদের মতে, বাংলায় মনে মনে নিয়ত করলেও হবে। আবার অনেকের মতে রোজা রাখার জন্য শেষ রাতে সাহরি খেতে ওঠা ও সাহরি খাওয়ার মাধ্যমেই রোজার নিয়ত হয়ে যায়।
কেউ যদি রাতের শেষ প্রহরের আগে সাহরি খেয়ে রোজার নিয়ত করে, এরপর সাহরির সময় শেষ হওয়ার আরও বাকি থাকে, এমন সময় সে ব্যক্তি স্ত্রী সহবাস করে ফেললে তার রোজা হয়ে যাবে।
কারণ, রমজান মাসে দিনের বেলা রোজা রেখে স্ত্রী সহবাস নিষিদ্ধ। রোজা রেখে স্বামী-স্ত্রী মিলিত হলে রোজা ভেঙে যায়, যেমন ইচ্ছাকৃত খেলে বা পান করলে রোজা ভেঙে যায় এবং কাজা ও কাফফারা ওয়াজিব হয়।
রমজানের রাতে অর্থাৎ সূর্যাস্তের পর থেকে সুবহে সাদিক পর্যন্ত ইতেকাফকারী ছাড়া অন্যদের জন্য স্ত্রী সহবাস নিষিদ্ধ নয়। ইতেকাফকারীদের জন্য রাতেও যৌনমিলন নিষিদ্ধ।
আল্লাহ তাআলা বলেছেন, রমজানের রাতে তোমাদের জন্য স্ত্রীদের নিকট গমন হালাল করা হয়েছে। তারা তোমাদের জন্য পরিচ্ছদ ও তোমরা তাদের জন্য পরিচ্ছদ। আল্লাহ জেনেছেন যে, তোমরা নিজদের সাথে খেয়ানত করছিলে। অতঃপর তিনি তোমাদের তওবা কবুল করেছেন এবং তোমাদের ক্ষমা করেছেন। এখন তোমরা তাদের সাথে মিলিত হও, এবং আল্লাহ তোমাদের জন্য যা লিখে দিয়েছেন, তা অনুসন্ধান কর। আর আহার কর ও পান কর যতক্ষণ না ফজরের সাদা রেখা কাল রেখা থেকে স্পষ্ট হয়। অতঃপর রাত পর্যন্ত রোজা পূর্ণ কর। আর তোমরা মসজিদে ইতিকাফরত অবস্থায় স্ত্রীদের সাথে মিলিত হইও না। এটা আল্লাহর সীমারেখা, সুতরাং তোমরা তার নিকটবর্তী হইও না। এভাবেই আল্লাহ তাঁর আয়াতসমূহ মানুষের জন্য স্পষ্ট করেন, যাতে তারা তাকওয়া অবলম্বন করে। (সুরা বাকারা: ১৮৭)।
রোজার নিয়ত করে ফেলার পরও সুবহে সাদিক পর্যন্ত যেমন খাওয়া-দাওয়া জায়েজ থাকে, স্ত্রী সহবাস করাও জায়েজ থাকে। অনেকে মনে করেন রোজার নিয়তের পর আর স্ত্রী সহবাস করা যাবে না। এ ধারণা সঠিক নয়।


























