আর মাত্র তিন দিন পর শুরু হবে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এ উৎসবকে ঘিরে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ১১৮টি পূজামণ্ডপে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে, এখন চলছে সাজসজ্জা ও রঙতুলির চূড়ান্ত স্পর্শ।
রবিবার বিকেলে উপজেলার বিভিন্ন মণ্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিমা শিল্পীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউ প্রতিমায় রঙ তুলির আঁচড়ে প্রাণ দিচ্ছেন, কেউবা অলংকার ও সাজসজ্জা সম্পন্ন করছেন। শিশু-কিশোররাও ভিড় জমাচ্ছে প্রতিমা দেখতে। এদিকে বাজারে পোশাক, অলংকার, প্রসাধনী ও মিষ্টির দোকানেও ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
জগন্নাথ আশ্রমের পুরোহিত রতন চক্রবর্তী বলেন, “প্রতিমা তৈরির সব কাজ প্রায় শেষ। পূজার তিন দিন আগে প্রতিমা শাড়ি পরিয়ে মঞ্চে স্থাপন করা হবে।”
সম্প্রীতির প্রতীক এই দুর্গাপূজা সম্পর্কে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক বিভাগীয় সভাপতি ড. শিপক নাথ বলেন, “শারদীয় দুর্গোৎসব শুধু অসুর বিনাশের প্রতীক নয়, বরং অহংকার, বিদ্বেষ ও হিংসা দূর করার শিক্ষা দেয়। সব সম্প্রদায়ের মানুষ মিলেমিশে একসঙ্গে উদযাপন করলে এ উৎসব আমাদের ঐতিহ্যকে আরও সমৃদ্ধ করবে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিন বলেন, “শারদীয় দুর্গোৎসবকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি মণ্ডপে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি থাকবে। প্রতিটি পুজা মন্ডপে সিসি ক্যামরা স্থাপনের নির্দেশনা দেওয়া হয়ছে।
১১৮টি পূজামণ্ডপে তিনস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশের টহল,ও স্বেচ্ছাসেবকদের সহযোগিতায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা হবে।”
উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাংবাদিক বাবলু দাশ বলেন, “এবার হাটহাজারীতে সর্বাধিক সংখ্যক মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় আনন্দঘন পরিবেশে পূজা উদযাপন হবে বলে আমরা আশাবাদী।”
এদিকে নন্দীরহাট, মেখল, চারিয়া, সরকারহাট, ফতেয়াবাদ, কাটিরহাট ও লালিয়ারহাট এলাকায় প্রতিমা তৈরির কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। রঙতুলির আঁচড়ে দেবী দুর্গা ও অন্যান্য দেব-দেবীর প্রতিমা শৈল্পিক কারুকার্যে ফুটে উঠছে।
মৃৎশিল্পীরা জানান “আষাঢ় মাস থেকে প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করেছি। কাঠামো তৈরি, শুকানো ও রঙের কাজ শেষে এখন চলছে সাজসজ্জা ও অলংকার বসানোর কাজ।”
আজ ২১ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মাধ্যমে শুরু হয়েছে দেবীপক্ষ। এরপর ২৮ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠীর বোধনে মর্ত্যে আগমন ঘটবে দেবী দুর্গার। ২ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হবে এবারের শারদীয় দুর্গোৎসব।


























