১০:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হাসপাতালের কর্মস্থলে অনুপস্থিত মেডিকেল টেকনোলজিস্ট

 চরম ভোগান্তিতে রোগীরা 

Oplus_131072

মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্যাথলজি বিভাগের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) একে.এম ফরহাদ হোসেন মাসের পর মাস কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এতে রোগীরা যেমন ভোগান্তিতে পড়ছেন, তেমনি সরকারি কোষাগার থেকে তার নিয়মিত বেতন-ভাতা তোলার বিষয়টিও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্র ও হাসপাতালের রেজিস্ট্রার খাতা থেকে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত আট দিন একে.এম ফরহাদ হোসেন অফিসে এসে ডিজিটাল হাজিরা মেশিনে উপস্থিতি নিশ্চিত করে হাসপাতালে দায়িত্ব পালন না করেই চলে গেছেন। এছাড়া তিন মাসে তিনি ১৫ দিন ঐচ্ছিক ছুটি কাটিয়েছেন, যা সরকারি চাকরি বিধির পরিপন্থী।
৫০ শয্যা বিশিষ্ট শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন শিবালয়, ঘিওর ও দৌলতপুর উপজেলার কয়েক হাজার রোগী সেবা নিতে আসেন। হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগে ৩৮ ধরনের পরীক্ষা হলেও গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরীক্ষার কাঁচামাল না থাকায় তা সাময়িক বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সিবিসি (Complete Blood Count) পরীক্ষাও।
পরীক্ষা করাতে আসা রোগীরা জানান, নির্ধারিত সময়েও দায়িত্বপ্রাপ্ত কেউ উপস্থিত থাকেন না, ফলে তারা দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও পরীক্ষার সুযোগ পান না। রোগী নাসিমা আক্তার বলেন, “সাড়ে নয়টায় রক্ত নেওয়ার কথা থাকলেও সাড়ে ১০টা পর্যন্ত কেউ আসেনি। আমি কখন পরীক্ষা করাবো আর রিপোর্ট কবে পাবো?”
রোগী সৌরভ বলেন, “যেখানে রিপোর্ট দুই ঘণ্টার মধ্যে দরকার, সেখানে দুই দিনেও পাওয়া যাচ্ছে না। ঠিক সময়ে কাউকে পাওয়া যায় না।”
প্যাথলজি বিভাগের অন্য মেডিকেল টেকনোলজিস্ট আব্দুল হালিম জানান, ফরহাদ হোসেন নিয়মিত অফিস করেন না এবং হাজিরা দিয়েই চলে যান। রোগীদের চাপ সামলাতে তাকে ফোন করে ডাকতে হয়। এভাবে কাজের চাপ বাড়ায় রোগীরাও দুর্ভোগে পড়ছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে একে.এম ফরহাদ হোসেন বলেন, “ছুটি ছাড়া আমি কর্মস্থল ত্যাগ করিনি। যদি এরকম কিছু ঘটে থাকে, তাহলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দেখবেন এবং ব্যবস্থা নেবেন।”
শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এবং মানিকগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. মো. আনিসুর রহমান বলেন, “আমার জানামতে, ফরহাদ হোসেন অসুস্থতার কারণে ছুটিতে ছিলেন এবং বদলির জন্য চেষ্টা করছেন। তবে তদন্ত করে যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
রোগীদের দুর্ভোগ কমাতে এবং সরকারি স্বাস্থ্যসেবার কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
জনপ্রিয় সংবাদ

স্মৃতিসৌধে তারেক রহমান

হাসপাতালের কর্মস্থলে অনুপস্থিত মেডিকেল টেকনোলজিস্ট

আপডেট সময় : ০৪:৩৬:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫
মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্যাথলজি বিভাগের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) একে.এম ফরহাদ হোসেন মাসের পর মাস কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এতে রোগীরা যেমন ভোগান্তিতে পড়ছেন, তেমনি সরকারি কোষাগার থেকে তার নিয়মিত বেতন-ভাতা তোলার বিষয়টিও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্র ও হাসপাতালের রেজিস্ট্রার খাতা থেকে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত আট দিন একে.এম ফরহাদ হোসেন অফিসে এসে ডিজিটাল হাজিরা মেশিনে উপস্থিতি নিশ্চিত করে হাসপাতালে দায়িত্ব পালন না করেই চলে গেছেন। এছাড়া তিন মাসে তিনি ১৫ দিন ঐচ্ছিক ছুটি কাটিয়েছেন, যা সরকারি চাকরি বিধির পরিপন্থী।
৫০ শয্যা বিশিষ্ট শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন শিবালয়, ঘিওর ও দৌলতপুর উপজেলার কয়েক হাজার রোগী সেবা নিতে আসেন। হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগে ৩৮ ধরনের পরীক্ষা হলেও গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরীক্ষার কাঁচামাল না থাকায় তা সাময়িক বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সিবিসি (Complete Blood Count) পরীক্ষাও।
পরীক্ষা করাতে আসা রোগীরা জানান, নির্ধারিত সময়েও দায়িত্বপ্রাপ্ত কেউ উপস্থিত থাকেন না, ফলে তারা দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও পরীক্ষার সুযোগ পান না। রোগী নাসিমা আক্তার বলেন, “সাড়ে নয়টায় রক্ত নেওয়ার কথা থাকলেও সাড়ে ১০টা পর্যন্ত কেউ আসেনি। আমি কখন পরীক্ষা করাবো আর রিপোর্ট কবে পাবো?”
রোগী সৌরভ বলেন, “যেখানে রিপোর্ট দুই ঘণ্টার মধ্যে দরকার, সেখানে দুই দিনেও পাওয়া যাচ্ছে না। ঠিক সময়ে কাউকে পাওয়া যায় না।”
প্যাথলজি বিভাগের অন্য মেডিকেল টেকনোলজিস্ট আব্দুল হালিম জানান, ফরহাদ হোসেন নিয়মিত অফিস করেন না এবং হাজিরা দিয়েই চলে যান। রোগীদের চাপ সামলাতে তাকে ফোন করে ডাকতে হয়। এভাবে কাজের চাপ বাড়ায় রোগীরাও দুর্ভোগে পড়ছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে একে.এম ফরহাদ হোসেন বলেন, “ছুটি ছাড়া আমি কর্মস্থল ত্যাগ করিনি। যদি এরকম কিছু ঘটে থাকে, তাহলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দেখবেন এবং ব্যবস্থা নেবেন।”
শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এবং মানিকগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. মো. আনিসুর রহমান বলেন, “আমার জানামতে, ফরহাদ হোসেন অসুস্থতার কারণে ছুটিতে ছিলেন এবং বদলির জন্য চেষ্টা করছেন। তবে তদন্ত করে যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
রোগীদের দুর্ভোগ কমাতে এবং সরকারি স্বাস্থ্যসেবার কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।