০৭:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফলাফল বাতিল ও খাতা পুনর্মূল্যায়নের দাবিতে চবিতে মানববন্ধন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের(চবি) বাংলা বিভাগের স্নাতকোত্তরের অবিচারমূলক ফলাফল বাতিল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের খাতা পুনর্মূল্যায়নের সুযোগ নিশ্চিত করার দাবিতে মানববন্ধন করেছে ৫৪ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (২৯ জুন) সকাল ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন চত্বরে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।এতে অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীরাও সংহতি জানিয়ে অংশগ্রণ করেন।একই সাথে মানববন্ধনে অংশ নেয় বিভিন্ন রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরাও।
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী শাহ রিয়াজ মোহাম্মদ বলেন,আমাদের এমন পরিস্থিতি হয়েছে এখানো দাড়ানো ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। খাতা পূনমূল্যায়নের বিষয়টা শিক্ষার্থীদের নৈতিক অধিকার হওয়ার কথা ছিল। শিক্ষক যে সবসময় সঠিক থাকবে এমন কোন বিষয় না, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় এমন এক অধ্যাদেশ দিয়ে রেখেছে যার মাধ্যমে তারা বোঝানোর চেষ্টা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা কখনো ভুলই করতে পারে না। অথচ আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয় অনেক নজির দেখেছি যেখানে শিক্ষক শতভাগ ঠিক মূল্যায়ন বলার পরেও বিভিন্ন তদন্তের মাধ্যমে দেখা গেছে সেখানে ঠিকই শিক্ষকের ভুল হয়েছে। শিক্ষকদের এই ভুলের কারণে শিক্ষার্থীদের ভোগার তো কোন কথা ছিল না। শিক্ষকরা তাদের ভুল স্বীকার করবে না কেন? খাতা পুনর্মূল্যায়নে সুযোগ না থাকায় শিক্ষকরা স্বৈরাচার হয়ে উঠেছেন,এটা শুধু বাংলা বিভাগের চিত্র না পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এমন চিত্র।যে নিয়মের কথা বলে বলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে সে নিয়ে পরিবর্তন হবে না কেন ৭৩ এর এ্যাক্ট তো কোনো ঐশি বাণী না।
তিনি আরও বলেন,আমরা বিভাগের বিভিন্ন সংস্কার নিয়ে কথা বলেছিলাম,জুলাই আন্দোলনে শিক্ষকদের নির্লিপ্ততার কথা করেছিলাম,আমরা যখন আমাদের ন্যায্য অধিকারের কথা বলেছিলাম,তখনই আমরা হয়ে গেছি তাদের চোখের বালি। তারা তো স্কুল কলেজের শিক্ষকদের মত পিটাতে পারে না তারা অপেক্ষায় থাকে কখন খাতা মূল্যায়নের সুযোগ পাবে এবং সেখানে তারা তাদের সমস্ত ক্ষোভ স্বৈরাচারী মনোভাব ঝাড়বে।আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলবো আপনারা জুলাইয়ের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে প্রশাসনে বসেছেন,আপনারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের কাজ করবেন আপনাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করার সময় এসে গেছে,আপনারা শিক্ষার্থীদের খাতা পূর্নঃমূল্যায়নের সুযোগ করে দেন।
আজিজুর রহমান নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন,আমাদের বেশির ভাগেরই রেজাল্ট ৩ এর উপরে ছিল কি এমন হলো হঠাৎ রেজাল্টা কমে গেল।এই রেজাল্ট নিয়ে আমরা যেখানে যাচ্ছি সেখানেই অপমানিত হচ্ছি।আমাদের মাস্ট্রাস শেষ যে সময়ে আমাদের প্রকৃতি দেখতে আসার কথা সেখানে মানববন্ধন করতে আসতে হচ্ছে।প্রশাসনের কাছে আমাদের আবেদন আমাদের রেজাল্ট পূনঃমূল্যায়নের সুযোগ করে দেন।
বাংলা বিভাগের সাথে সংহতি জানিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের অর্থসম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, “যারা এখানে ভর্তি হয়েছিল তারা মেধার পরিচয় দিয়ে হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে পিছনে ফেলে বিশ্ববিদ্যালয় টিকেছিল এবং তারা অনার্সেও ভালো ফলাফল করেছে হঠাৎ কি এমন হলো যে তাদের রেজাল্টের এই ভরাডুবি। আমরা আগেও জানিয়েছি যেন শিক্ষার্থীদের খাতা পুনর্মূল্যায়নের সুযোগ দেয়া হয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের দাবির কর্ণপাত করেননি, তাহলে কি এভাবেই যুগের পর যুগ শিক্ষার্থীরা নির্যাতনের শিকার হবে? আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জোর দাবি জানাচ্ছি বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যাক্ট পরিবর্তন করে শিক্ষার্থীদের অনতিবিলম্বে খাতা পুনর্মূল্যায়নের সুযোগ করে দিন।”

জনপ্রিয় সংবাদ

ফলাফল বাতিল ও খাতা পুনর্মূল্যায়নের দাবিতে চবিতে মানববন্ধন

আপডেট সময় : ০৬:০৭:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের(চবি) বাংলা বিভাগের স্নাতকোত্তরের অবিচারমূলক ফলাফল বাতিল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের খাতা পুনর্মূল্যায়নের সুযোগ নিশ্চিত করার দাবিতে মানববন্ধন করেছে ৫৪ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (২৯ জুন) সকাল ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন চত্বরে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।এতে অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীরাও সংহতি জানিয়ে অংশগ্রণ করেন।একই সাথে মানববন্ধনে অংশ নেয় বিভিন্ন রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরাও।
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী শাহ রিয়াজ মোহাম্মদ বলেন,আমাদের এমন পরিস্থিতি হয়েছে এখানো দাড়ানো ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। খাতা পূনমূল্যায়নের বিষয়টা শিক্ষার্থীদের নৈতিক অধিকার হওয়ার কথা ছিল। শিক্ষক যে সবসময় সঠিক থাকবে এমন কোন বিষয় না, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় এমন এক অধ্যাদেশ দিয়ে রেখেছে যার মাধ্যমে তারা বোঝানোর চেষ্টা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা কখনো ভুলই করতে পারে না। অথচ আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয় অনেক নজির দেখেছি যেখানে শিক্ষক শতভাগ ঠিক মূল্যায়ন বলার পরেও বিভিন্ন তদন্তের মাধ্যমে দেখা গেছে সেখানে ঠিকই শিক্ষকের ভুল হয়েছে। শিক্ষকদের এই ভুলের কারণে শিক্ষার্থীদের ভোগার তো কোন কথা ছিল না। শিক্ষকরা তাদের ভুল স্বীকার করবে না কেন? খাতা পুনর্মূল্যায়নে সুযোগ না থাকায় শিক্ষকরা স্বৈরাচার হয়ে উঠেছেন,এটা শুধু বাংলা বিভাগের চিত্র না পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এমন চিত্র।যে নিয়মের কথা বলে বলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে সে নিয়ে পরিবর্তন হবে না কেন ৭৩ এর এ্যাক্ট তো কোনো ঐশি বাণী না।
তিনি আরও বলেন,আমরা বিভাগের বিভিন্ন সংস্কার নিয়ে কথা বলেছিলাম,জুলাই আন্দোলনে শিক্ষকদের নির্লিপ্ততার কথা করেছিলাম,আমরা যখন আমাদের ন্যায্য অধিকারের কথা বলেছিলাম,তখনই আমরা হয়ে গেছি তাদের চোখের বালি। তারা তো স্কুল কলেজের শিক্ষকদের মত পিটাতে পারে না তারা অপেক্ষায় থাকে কখন খাতা মূল্যায়নের সুযোগ পাবে এবং সেখানে তারা তাদের সমস্ত ক্ষোভ স্বৈরাচারী মনোভাব ঝাড়বে।আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলবো আপনারা জুলাইয়ের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে প্রশাসনে বসেছেন,আপনারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের কাজ করবেন আপনাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করার সময় এসে গেছে,আপনারা শিক্ষার্থীদের খাতা পূর্নঃমূল্যায়নের সুযোগ করে দেন।
আজিজুর রহমান নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন,আমাদের বেশির ভাগেরই রেজাল্ট ৩ এর উপরে ছিল কি এমন হলো হঠাৎ রেজাল্টা কমে গেল।এই রেজাল্ট নিয়ে আমরা যেখানে যাচ্ছি সেখানেই অপমানিত হচ্ছি।আমাদের মাস্ট্রাস শেষ যে সময়ে আমাদের প্রকৃতি দেখতে আসার কথা সেখানে মানববন্ধন করতে আসতে হচ্ছে।প্রশাসনের কাছে আমাদের আবেদন আমাদের রেজাল্ট পূনঃমূল্যায়নের সুযোগ করে দেন।
বাংলা বিভাগের সাথে সংহতি জানিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের অর্থসম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, “যারা এখানে ভর্তি হয়েছিল তারা মেধার পরিচয় দিয়ে হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে পিছনে ফেলে বিশ্ববিদ্যালয় টিকেছিল এবং তারা অনার্সেও ভালো ফলাফল করেছে হঠাৎ কি এমন হলো যে তাদের রেজাল্টের এই ভরাডুবি। আমরা আগেও জানিয়েছি যেন শিক্ষার্থীদের খাতা পুনর্মূল্যায়নের সুযোগ দেয়া হয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের দাবির কর্ণপাত করেননি, তাহলে কি এভাবেই যুগের পর যুগ শিক্ষার্থীরা নির্যাতনের শিকার হবে? আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জোর দাবি জানাচ্ছি বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যাক্ট পরিবর্তন করে শিক্ষার্থীদের অনতিবিলম্বে খাতা পুনর্মূল্যায়নের সুযোগ করে দিন।”