১২:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চবিতে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. হাসান মোহাম্মদ স্মারক বক্তৃতা ২০২৫ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের উদ্যোগে “রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. হাসান মোহাম্মদ স্মারক বক্তৃতা ২০২৫” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ইসলামের বিশ্বায়ন, বাংলাদেশ ও আমাদের জাতিসত্তা বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়।
সোমবার (৭ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০ টায় বিশ্বিবদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ অডিটোরিয়ামে এটি অনুষ্ঠিত হয়।
রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এ. জি. এম. নিয়াজ উদ্দীনের সঞ্চালনায় এতে সভাপতিত্ব করেন বিভাগটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মাহফুজ পারভেজ এবং স্বাগত বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের প্রধান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ এনায়েত উল্ল্যা পাওয়ারী।
এ সময় স্মারক বক্তা হিসেবে লেখক, চিন্তক ও গবেষক মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান তাঁর বক্তব্যে ইসলাম প্রচারের ইতিহাস, বৈচিত্র্য ও তাৎপর্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “ইসলামের বিস্তার শুধুমাত্র ধর্মীয় চেতনা নয়, বরং এটি ছিল একটি ন্যায়ভিত্তিক সামাজিক বিপ্লব। ইসলামের ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ক্রুসেড যুদ্ধ ছিল পাশ্চাত্যের প্রতিক্রিয়া, আর ইসলাম এসেছে মুক্তির বার্তা নিয়ে।”

তিনি বলেন, “বাংলাদেশে ইসলামের আগমন কোনো হঠাৎ ঘটনা নয়। এর পেছনে রয়েছে সুদীর্ঘ ইতিহাস ও আরবদের সঙ্গে প্রাচীন যোগাযোগের ভিত্তি। সপ্তম শতাব্দীর শুরুতেই, অর্থাৎ শশাঙ্ক থেকে মাৎস্যন্যায়ের (৬৩৫–৭৫০) সময়কালেই আরব বণিক ও সুফিদের মাধ্যমে এ অঞ্চলে ইসলামের প্রাথমিক সংযোগ ঘটে। এরপর আব্বাসীয় যুগ (৭৫০–১২৫৮), পাল আমল (৭৫০–১১৬২) ও সেস শাসন (১১৬২–১২০৩) পেরিয়ে ১২০৪ সালে বাংলাদেশে মুসলিম শাসনের সূচনা হয়।”
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান বলেছেন, “ইসলামের বিশ্বায়ন বলতে বোঝায়—ইসলামের সংস্কৃতি, আদর্শ ও মূল্যবোধকে বিশ্বব্যাপী প্রচার ও প্রসার করা। আমরা যদি ইসলামের মূলনীতি ও দর্শনকে আন্তর্জাতিক পরিসরে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই, তাহলে আগে প্রমাণ করতে হবে যে ইসলামী অর্থনীতি, সমাজনীতি, দর্শন ও সংস্কৃতির দৃষ্টিভঙ্গি অন্য সব দৃষ্টিভঙ্গির তুলনায় শ্রেষ্ঠ, কার্যকর ও মানবকল্যাণে সহায়ক। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আজকের মুসলমানরা নিজেরাই ইসলামের মৌলিক শিক্ষা ও আদর্শ যথাযথভাবে অনুসরণ করছেন না।
তিনি আরও বলেন, “ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, ইসলামের বিজয় কখনোই তরবারির মাধ্যমে হয়নি। ইসলামের বিজয় হয়েছে আদর্শ, ন্যায়নীতি ও উত্তম চরিত্রের মাধ্যমে। সেই আদর্শিক শক্তিই ইসলামকে যুগে যুগে বিজয়ী করেছে।”
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন। প্যানেল আলোচক হিসেবে অংশ নেন রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ভূইয়া মনোয়ার কবির, লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. আমির মোহাম্মদ নাসরুল্লাহ এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. ফুয়াদ হাসান।
এমআর/সবা

জনপ্রিয় সংবাদ

চবিতে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. হাসান মোহাম্মদ স্মারক বক্তৃতা ২০২৫ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

আপডেট সময় : ০৫:৫৯:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ জুলাই ২০২৫

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের উদ্যোগে “রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. হাসান মোহাম্মদ স্মারক বক্তৃতা ২০২৫” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ইসলামের বিশ্বায়ন, বাংলাদেশ ও আমাদের জাতিসত্তা বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়।
সোমবার (৭ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০ টায় বিশ্বিবদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ অডিটোরিয়ামে এটি অনুষ্ঠিত হয়।
রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এ. জি. এম. নিয়াজ উদ্দীনের সঞ্চালনায় এতে সভাপতিত্ব করেন বিভাগটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মাহফুজ পারভেজ এবং স্বাগত বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের প্রধান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ এনায়েত উল্ল্যা পাওয়ারী।
এ সময় স্মারক বক্তা হিসেবে লেখক, চিন্তক ও গবেষক মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান তাঁর বক্তব্যে ইসলাম প্রচারের ইতিহাস, বৈচিত্র্য ও তাৎপর্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “ইসলামের বিস্তার শুধুমাত্র ধর্মীয় চেতনা নয়, বরং এটি ছিল একটি ন্যায়ভিত্তিক সামাজিক বিপ্লব। ইসলামের ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ক্রুসেড যুদ্ধ ছিল পাশ্চাত্যের প্রতিক্রিয়া, আর ইসলাম এসেছে মুক্তির বার্তা নিয়ে।”

তিনি বলেন, “বাংলাদেশে ইসলামের আগমন কোনো হঠাৎ ঘটনা নয়। এর পেছনে রয়েছে সুদীর্ঘ ইতিহাস ও আরবদের সঙ্গে প্রাচীন যোগাযোগের ভিত্তি। সপ্তম শতাব্দীর শুরুতেই, অর্থাৎ শশাঙ্ক থেকে মাৎস্যন্যায়ের (৬৩৫–৭৫০) সময়কালেই আরব বণিক ও সুফিদের মাধ্যমে এ অঞ্চলে ইসলামের প্রাথমিক সংযোগ ঘটে। এরপর আব্বাসীয় যুগ (৭৫০–১২৫৮), পাল আমল (৭৫০–১১৬২) ও সেস শাসন (১১৬২–১২০৩) পেরিয়ে ১২০৪ সালে বাংলাদেশে মুসলিম শাসনের সূচনা হয়।”
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান বলেছেন, “ইসলামের বিশ্বায়ন বলতে বোঝায়—ইসলামের সংস্কৃতি, আদর্শ ও মূল্যবোধকে বিশ্বব্যাপী প্রচার ও প্রসার করা। আমরা যদি ইসলামের মূলনীতি ও দর্শনকে আন্তর্জাতিক পরিসরে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই, তাহলে আগে প্রমাণ করতে হবে যে ইসলামী অর্থনীতি, সমাজনীতি, দর্শন ও সংস্কৃতির দৃষ্টিভঙ্গি অন্য সব দৃষ্টিভঙ্গির তুলনায় শ্রেষ্ঠ, কার্যকর ও মানবকল্যাণে সহায়ক। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আজকের মুসলমানরা নিজেরাই ইসলামের মৌলিক শিক্ষা ও আদর্শ যথাযথভাবে অনুসরণ করছেন না।
তিনি আরও বলেন, “ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, ইসলামের বিজয় কখনোই তরবারির মাধ্যমে হয়নি। ইসলামের বিজয় হয়েছে আদর্শ, ন্যায়নীতি ও উত্তম চরিত্রের মাধ্যমে। সেই আদর্শিক শক্তিই ইসলামকে যুগে যুগে বিজয়ী করেছে।”
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন। প্যানেল আলোচক হিসেবে অংশ নেন রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ভূইয়া মনোয়ার কবির, লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. আমির মোহাম্মদ নাসরুল্লাহ এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. ফুয়াদ হাসান।
এমআর/সবা