চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) প্রায় ৩ যুগ পর অবশেষে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচন। সর্বশেষ চাকসু নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালে, এরপর নানা কারণে এ প্রক্রিয়া বন্ধ ছিল। দীর্ঘদিনের এই স্থবিরতা ভেঙে নতুন করে বিশ্ববিদ্যাল ক্যাম্পাস জুড়ে আলোচনা হচ্ছে চাকসু নির্বাচন নিয়ে।
চাকসু কেবল রাজনৈতিক সংগঠনের প্ল্যাটফর্ম নয়, বরং এটি হচ্ছে শিক্ষার্থীদের নানাবিধ সমস্যা সমাধান ও অধিকার আদায়ের জায়গা। সেশনজট নিরসন, আবাসন সংকট, গণপরিবহন, চিকিৎসা সুবিধা, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা, খাদ্যের মানোন্নয়নসহ নানা বিষয় নিয়ে কাজ করে এই চাকসু।
শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে গণতন্ত্র চর্চায় এক সময় চাকসুর যারা ভিপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের একজন হলেন এসএম ফজলুল হক। যিনি ৩৫ বছর পর চাকসু নির্বাচন নিয়ে তার অনুভূতি ও প্রত্যাশা শেয়ার করেছেন দৈনিক আজাদীর সাথে।
অনুভূতি ও প্রত্যাশা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, চাকসু হলো শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের মাধ্যম।
আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদে (চাকসু) দায়িত্ব পালন করেছিলাম ১৯৭২ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত। চাকসুতে কয়েকবার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচন হয়েছে। শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পেরেছে। চাকসুতে যারা দায়িত্ব পালন করেছেন সবাই শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করে গেছেন। পরবর্তিতে দেশের বড় বড় লিডার হিসেবে নিজেদেরকে গড়ে তুলেছেন এবং দেশে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এখনও যারা জীবিত আছে তারা নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। তারা চাকসুর প্রতিনিধি হিসেবে শিক্ষার্থীদের আবাসিক সমস্যা, যাতায়াত ব্যবস্থা, সেশন-জট ইত্যাদি নিয়ে কাজ করেছে। এবং গণতান্ত্রিক যে প্রক্রিয়া সেটা তারা সবসময় চর্চা করেছে।
আমি বলতে চাই, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াটা শুধু ভোটাধিকার প্রয়োগ করা নয়। বরং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াটা জীবনের সর্বক্ষেত্রে প্রয়োগ করা। চাকসু নির্বাচনটাও হবে চবি শিক্ষার্থীদের জীবনে গণতান্ত্রিক চর্চার প্রয়োগ ও একটা শিক্ষা। গণতন্ত্রটা কি তারা সেটা বাস্তব জীবনে প্রতিফলন ঘটাতে পারবে। আমাদের দেশে প্রকৃত লিডারশীপের সংকট আছে। সেই সংকট কেটে উঠার মাধ্যম হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন দিয়ে যোগ্য নেতৃত্ববান নেতা তৈরী করা।
নতুন যারা নেতৃত্বে আসবে, তাদের কাছে প্রত্যাশা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বিগত ৩৫ বছর কোনো ছাত্র সংসদ নির্বাচন ছিল না। যার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গণতন্ত্র বাস্তবায়নে শিক্ষার্থীদের জটিতা পোহাতে হয়েছে। আমি আশা করবো নতুন নেতৃত্বে যারা আসবে তারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে পুনরুদ্ধার করবে। শিক্ষার্থীদের যে অধিকার, সেই অধিকার আদায় করার জন্য সবসময় সোচ্চার থাকবে এবং কাজ করে যাবে।
৩৫ বছর পর আসন্ন এই নির্বাচন শুধুই ভোটের উৎসব নয় এটি শিক্ষার্থীদের জন্য গণতন্ত্রের বাস্তব পাঠ। এর মাধ্যমে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে নতুন নেতৃত্বের সূচনা হবে বলেও আশা করছেন শিক্ষার্থীরা।
এসএস/সবা
শিরোনাম
প্রায় ৩ যুগ পর চাকসু নির্বাচন: সাবেক ভিপির অনুভূতি ও প্রত্যাশা
-
মো. শামীম হোসাইন, চবি - আপডেট সময় : ১০:১৩:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫
- ।
- 78
জনপ্রিয় সংবাদ


























