অন্য দেশের নাম ব্যবহার করে নিজ দেশের সহনাগরিকদের ওপর হামলার ঘটনা জাতির জন্য লজ্জাজনক বলে মন্তব্য করেছেন কক্সবাজারের সাংস্কৃতিক কর্মীরা।
২২ ডিসেম্বর, সোমবার বিকেলে কক্সবাজার পৌরসভা চত্বরে আয়োজিত এক প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশে বক্তারা বলেন, দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় গণমাধ্যম প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার, ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানট এবং প্রগতিশীল সংগঠন উদীচীর ওপর হামলা করে বিশ্ব দরবারে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা হচ্ছে।
সমাবেশে কক্সবাজার জেলা উদীচীর সাধারণ সম্পাদক সৌরভ দেব বলেন, অন্য দেশের নাম নিয়ে নিজের দেশের সহনাগরিকদের ওপর হামলা করছেন আপনারা। প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, ছায়ানট ও উদীচীর মতো প্রতিষ্ঠানগুলো আপনাদেরই নাগরিকদের গড়ে তোলা। এসব ঘটনায় বিশ্বের কাছে মাথা নিচু হয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
কক্সবাজারের ক্রিয়াশীল বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত এ সমাবেশে গান, কবিতা ও নৃত্যের মাধ্যমে জুলাই যোদ্ধা শরীফ ওসমান হাদি হত্যা, ময়মনসিংহে দিপু ও শিশু আয়েশাকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা, পাশাপাশি গণমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানানো হয়।

জাসাসের সাধারণ সম্পাদক আরাফাত সাইফুল আদর বলেন, হাদির রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আপনারা হাদির আদর্শের সঙ্গে বেঈমানি করেছেন। হাদি বলেছিল- পারলে আরও দশটা প্রথম আলো, উদীচী, ছায়ানট তৈরি করতে। আর আপনারা সেগুলো ধ্বংসে নেমেছেন। তার মানে আপনারা গড়তে পারবেন না, তাই ভাঙছেন।
সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক মনির মোবারকের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদ কক্সবাজারের সাধারণ সম্পাদক রাজিব কর্মকার। তিনি বলেন, উগ্রতা দিয়ে কখনো শান্তি প্রতিষ্ঠা হয় না। ছায়ানট রাজনীতি করে না; সংস্কৃতির মধ্য দিয়ে মানবিক মানুষ গড়ে তোলে। সেখানে হামলা মানে কি আপনারা অমানবিক সমাজ চান?
খেলাঘর সংগঠক কলিম উল্লাহ বলেন, ময়মনসিংহে ধর্মীয় উন্মাদনা ছড়িয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারা হয়েছে- এটি মধ্যযুগীয় বর্বরতা। যারা এসবের বিরুদ্ধে কথা বলছে, তাদের ওপরও হামলা চালানো হচ্ছে। হাদি হত্যা থেকে শুরু করে গণমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে হামলা—সবকিছু একই ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মনে হচ্ছে।
খেলাঘর সংগঠক ধ্রুব সেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে অংশ নেন ঝিনুকমালা খেলাঘর আসর, সিমুনিয়া খেলাঘর আসর, দরিয়ানগর শিল্পীগোষ্ঠী, রবীন্দ্রনাথ সংগীত সম্মিলন পরিষদ, সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, জাসাস, অঁলা ব্যান্ড, ছাইলোক, শ্রুতি আবৃত্তি অঙ্গন, সাংস্কৃতিক ইউনিয়ন, যুব ইউনিয়ন, ছাত্র ইউনিয়নসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।





















