০২:৩৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নির্বাচনে হলফনামায়

দশবছরে বীর বাহাদুরে সম্পদ বেড়েছে সাতগুণ

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পার্বত্য অঞ্চলের বান্দরবানের ৩০০ নম্বর আসনে টানা ৭ম বারের মতো আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বীর বাহাদুর উশৈসিং। বান্দরবান আসনে বীর বাহাদুর উশৈসিং একমাত্র ব্যক্তি যিনি টানা সাতবার মেয়াদে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। টানা ৬ষ্ঠ মেয়াদে সংসদ সদস্য হওয়ার পার্বত্যমন্ত্রী স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে কয়েকগুণ।
গত ২৯ নভেম্বর বান্দরবান রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে জমা দেওয়া হলফনামা ও বিগত দুই নির্বাচনের হলফনামা বিশ্লেষণ করে মিলেছে এসব তথ্য। গত ১০ বছরে বীরের বাৎসরিক আয় বেড়েছে সাতগুণ ও অস্থাবর, স্থাবর মিলে সম্পত্তি বেড়েছে কয়েকগুণ। এছাড়াও বীরের স্ত্রী বাৎসরিক আয় বেড়েছে চারগুণ ও অস্থাবর দুইগুণ, তবে কমেছে স্থাবরের সম্পত্তি পরিমান।
বিগত দুই নির্বাচনের হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় বীর বাহাদুর উশৈসিং হলফনামায় ব্যবসার (রাবার) খাতে বাৎসরিক আয় ছিল ৪৫ লাখ টাকা। ২০১৮ সালে যেটি দাঁড়ায় ১ কোটি ৫৮ লাখ ৮১ হাজার ৬৮৭ টাকা। ২০২৩ সালের হলফনামায় এ আয় বেড়ে হয়েছে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৫১ হাজার ৪০৯ টাকা। আয়ের সবচেয়ে বড়খাত হোটেল ব্যবসা। সেখান থেকে তিনি ২ কোটি ৮২ লাখ ৩৫ হাজার ৯৩১ টাকা আয় দেখিয়েছেন। দ্বিতীয় আয়ের খাত এপার্টমেন্ট ও দোকান (অনান্য) ভাড়া দেখিয়েছেন। এই ব্যবসা থেকে আয় এসেছে ১৫ লক্ষ ৭২ হাজার ৩১২ টাকা। এছাড়াও বিভিন্ন এফডিআর, সঞ্চয়ী জামানত ও অংশীদারী বিনিয়োগ থেকে আয় দেখানো হয়েছে। ২০১৮ সালে কৃষিখাত, অনান্য ভাড়া, ব্যবসা, সঞ্চয় ও চাকুরীসহ বার্ষিক আয় ছিল ১ কোটি ৫৮ লাখ ৮১ হাজার টাকা। আর ২০১৪ সালে এর পরিমাণ ছিল ৪৫ লাখ টাকা।
হলফনামায় দেখা গেছে, গত দশবছরে ব্যাংকে কমেছে দেনা পরিমানের টাকা। ২০১৪ সালের হলফনামায় ব্যাংক কিংবা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে কোনো ঋণ নেওয়ার তথ্য না থাকলেও ২০১৮ সালের হলফনামায় সিসি লোনের দায় লেখা হয়েছে। বাংলাদেশ শিল্প ইসলামি ব্যাংক থেকে ১ কোটি ৮২ লাখ ৩৯ হাজার ৯৭৮ টাকা সিসি লোন নেওয়ার তথ্য দেখা যায় ২০১৮ সালের হলফনামায়। তবে ২০২৩ সালে এসে কমেছে দায়ের বোঝা। ইসলামী ব্যাংকের বান্দরবান শাখা অনুকূলে ৩০ লাখ ৮১হাজার ৯৭০ টাকার সিসি লোন দেখানো হয়েছে।
গত দশ বছরের স্বর্ণলঙ্কা পরিমান মূল্যে পূর্বের মতন রয়েছে। ২০১৪ সালে প্রার্থী ও স্ত্রীর নামে স্বর্ণালংকারের দাম উল্লেখ করা হয়েছিল ৫ লাখ ও ৪ লাখ টাকা। ২০২৩ সালে হলফনামায় স্বর্ণালংকারের বাজার মূল্য একই দেখানো হয়েছে।
গত ১০ বছরের বীর বাহাদুর উশৈসিং সম্পদ বেড়েছে কয়েকগুন। ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচন হলফনামায় বার্ষিক আয় ছিল ৪৫ লাখ টাকা, ২০১৮ সালে হলফনামায় ১ কোটি ৫৮ লাখ ৮১ হাজার ৬২৭ টাকা ও ২০২৩ সালে হলফনামায় বার্ষিক আয় ৩ কোটি ১৫ লাখ ৫১ হাজার ৪০৯ টাকা দেখিয়েছেন। যা গত ১০ বছরের তুলনায় বার্ষিক আয় বেড়েছে সাতগুণ।
২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনে হলফনামায় অস্থাবর সম্পত্তি পরিমান ছিল ২ কোটি ২১ লাখ ৪৭ হাজার  ২০০ টাকা, ২০১৮ সালে একাদশ নির্বাচনে হলফনামায় ৬ কোটি ৪১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ও ২০২৩ সালে দ্বাদশ নির্বাচনের হলফনামায় সম্পদ বেড়েছে ১০ কোটি ৯ লাখ ২২ হাজার ৭২১ টাকা। গত ১০ বছরে আয় বেড়েছে প্রায় সাড়ে চারগুণ।
২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনে হলফনামায় স্থাবর সম্পত্তি ছিল ১ কোটি ৪৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকা তবে হলফনামায় বাড়ি মূল্য উল্লেখ করেননি। ২০১৮ একাদশ নির্বাচনে হলফনামায় ৫ কোটি ৫৬ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ও ২০২৩ দ্বাদশ নির্বাচনে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন ১১ কোটি ৭৪ লাখ ৩ হাজার ৬০০টাকা। গত ১০বছরের আয় বেড়েছে প্রায় আটগুণ।
এছাড়াও বান্দরবান পৌরসভা এলাকায় ছয়তলা বিশিষ্ট বাসভবন রয়েছে দুইটি। ২০২৩ সালের হলফনামায় যার দাম দেখানো হয়েছে ৩ কোটি ৫০ লাখ ও ২ কোটি ৫২ লাখ টাকা।  ২টি বাস,২টি জীপ ও কার ১টিসহ অর্থ উল্লেখ করেছেন ৩ কোটি ৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা।  এছাড়াও বেড়েছে জায়গা পরিমান ও রিসোর্টে ভবন।
এদিকে ছয়বারের সংসদ সদস্য  ২০২৩ সালের হলফনামায় অস্থাবর সম্পত্তির কলামে ৬ কোটি ১লাখ ২০ হাজার ৬৩৯ টাকার এফডিআর। ডিপিএস(সঞ্চয়) উল্লেখ করেছেন ৪ লাখ ৮৩ হাজার ১১৬ টাকা । গত বছরে তুলনায় কমেছে ডিপিএস ও অস্থাবর সম্পদের নগদ অর্থও।
জনপ্রিয় সংবাদ

সানজিদা তন্বীর বিয়ের খবর জানালেন ফেসবুকে নিজের হৃদয়গ্রাহী পোস্টে

নির্বাচনে হলফনামায়

দশবছরে বীর বাহাদুরে সম্পদ বেড়েছে সাতগুণ

আপডেট সময় : ০৯:২৬:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পার্বত্য অঞ্চলের বান্দরবানের ৩০০ নম্বর আসনে টানা ৭ম বারের মতো আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বীর বাহাদুর উশৈসিং। বান্দরবান আসনে বীর বাহাদুর উশৈসিং একমাত্র ব্যক্তি যিনি টানা সাতবার মেয়াদে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। টানা ৬ষ্ঠ মেয়াদে সংসদ সদস্য হওয়ার পার্বত্যমন্ত্রী স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে কয়েকগুণ।
গত ২৯ নভেম্বর বান্দরবান রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে জমা দেওয়া হলফনামা ও বিগত দুই নির্বাচনের হলফনামা বিশ্লেষণ করে মিলেছে এসব তথ্য। গত ১০ বছরে বীরের বাৎসরিক আয় বেড়েছে সাতগুণ ও অস্থাবর, স্থাবর মিলে সম্পত্তি বেড়েছে কয়েকগুণ। এছাড়াও বীরের স্ত্রী বাৎসরিক আয় বেড়েছে চারগুণ ও অস্থাবর দুইগুণ, তবে কমেছে স্থাবরের সম্পত্তি পরিমান।
বিগত দুই নির্বাচনের হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় বীর বাহাদুর উশৈসিং হলফনামায় ব্যবসার (রাবার) খাতে বাৎসরিক আয় ছিল ৪৫ লাখ টাকা। ২০১৮ সালে যেটি দাঁড়ায় ১ কোটি ৫৮ লাখ ৮১ হাজার ৬৮৭ টাকা। ২০২৩ সালের হলফনামায় এ আয় বেড়ে হয়েছে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৫১ হাজার ৪০৯ টাকা। আয়ের সবচেয়ে বড়খাত হোটেল ব্যবসা। সেখান থেকে তিনি ২ কোটি ৮২ লাখ ৩৫ হাজার ৯৩১ টাকা আয় দেখিয়েছেন। দ্বিতীয় আয়ের খাত এপার্টমেন্ট ও দোকান (অনান্য) ভাড়া দেখিয়েছেন। এই ব্যবসা থেকে আয় এসেছে ১৫ লক্ষ ৭২ হাজার ৩১২ টাকা। এছাড়াও বিভিন্ন এফডিআর, সঞ্চয়ী জামানত ও অংশীদারী বিনিয়োগ থেকে আয় দেখানো হয়েছে। ২০১৮ সালে কৃষিখাত, অনান্য ভাড়া, ব্যবসা, সঞ্চয় ও চাকুরীসহ বার্ষিক আয় ছিল ১ কোটি ৫৮ লাখ ৮১ হাজার টাকা। আর ২০১৪ সালে এর পরিমাণ ছিল ৪৫ লাখ টাকা।
হলফনামায় দেখা গেছে, গত দশবছরে ব্যাংকে কমেছে দেনা পরিমানের টাকা। ২০১৪ সালের হলফনামায় ব্যাংক কিংবা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে কোনো ঋণ নেওয়ার তথ্য না থাকলেও ২০১৮ সালের হলফনামায় সিসি লোনের দায় লেখা হয়েছে। বাংলাদেশ শিল্প ইসলামি ব্যাংক থেকে ১ কোটি ৮২ লাখ ৩৯ হাজার ৯৭৮ টাকা সিসি লোন নেওয়ার তথ্য দেখা যায় ২০১৮ সালের হলফনামায়। তবে ২০২৩ সালে এসে কমেছে দায়ের বোঝা। ইসলামী ব্যাংকের বান্দরবান শাখা অনুকূলে ৩০ লাখ ৮১হাজার ৯৭০ টাকার সিসি লোন দেখানো হয়েছে।
গত দশ বছরের স্বর্ণলঙ্কা পরিমান মূল্যে পূর্বের মতন রয়েছে। ২০১৪ সালে প্রার্থী ও স্ত্রীর নামে স্বর্ণালংকারের দাম উল্লেখ করা হয়েছিল ৫ লাখ ও ৪ লাখ টাকা। ২০২৩ সালে হলফনামায় স্বর্ণালংকারের বাজার মূল্য একই দেখানো হয়েছে।
গত ১০ বছরের বীর বাহাদুর উশৈসিং সম্পদ বেড়েছে কয়েকগুন। ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচন হলফনামায় বার্ষিক আয় ছিল ৪৫ লাখ টাকা, ২০১৮ সালে হলফনামায় ১ কোটি ৫৮ লাখ ৮১ হাজার ৬২৭ টাকা ও ২০২৩ সালে হলফনামায় বার্ষিক আয় ৩ কোটি ১৫ লাখ ৫১ হাজার ৪০৯ টাকা দেখিয়েছেন। যা গত ১০ বছরের তুলনায় বার্ষিক আয় বেড়েছে সাতগুণ।
২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনে হলফনামায় অস্থাবর সম্পত্তি পরিমান ছিল ২ কোটি ২১ লাখ ৪৭ হাজার  ২০০ টাকা, ২০১৮ সালে একাদশ নির্বাচনে হলফনামায় ৬ কোটি ৪১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ও ২০২৩ সালে দ্বাদশ নির্বাচনের হলফনামায় সম্পদ বেড়েছে ১০ কোটি ৯ লাখ ২২ হাজার ৭২১ টাকা। গত ১০ বছরে আয় বেড়েছে প্রায় সাড়ে চারগুণ।
২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনে হলফনামায় স্থাবর সম্পত্তি ছিল ১ কোটি ৪৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকা তবে হলফনামায় বাড়ি মূল্য উল্লেখ করেননি। ২০১৮ একাদশ নির্বাচনে হলফনামায় ৫ কোটি ৫৬ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ও ২০২৩ দ্বাদশ নির্বাচনে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন ১১ কোটি ৭৪ লাখ ৩ হাজার ৬০০টাকা। গত ১০বছরের আয় বেড়েছে প্রায় আটগুণ।
এছাড়াও বান্দরবান পৌরসভা এলাকায় ছয়তলা বিশিষ্ট বাসভবন রয়েছে দুইটি। ২০২৩ সালের হলফনামায় যার দাম দেখানো হয়েছে ৩ কোটি ৫০ লাখ ও ২ কোটি ৫২ লাখ টাকা।  ২টি বাস,২টি জীপ ও কার ১টিসহ অর্থ উল্লেখ করেছেন ৩ কোটি ৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা।  এছাড়াও বেড়েছে জায়গা পরিমান ও রিসোর্টে ভবন।
এদিকে ছয়বারের সংসদ সদস্য  ২০২৩ সালের হলফনামায় অস্থাবর সম্পত্তির কলামে ৬ কোটি ১লাখ ২০ হাজার ৬৩৯ টাকার এফডিআর। ডিপিএস(সঞ্চয়) উল্লেখ করেছেন ৪ লাখ ৮৩ হাজার ১১৬ টাকা । গত বছরে তুলনায় কমেছে ডিপিএস ও অস্থাবর সম্পদের নগদ অর্থও।