১১:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চট্টগ্রামে ভোক্তার নাগালের বাইরে নিত্যপণ্যের দাম

চট্টগ্রামে একের পর এক বেড়েই চলেছে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। এতে সাধারণ ভোক্তার নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে এসব পণ্যের দাম।
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আসার পর বাজার তদারকিতে প্রশাসনের পাশাপাশি সহযোগী হিসেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও শিক্ষার্থীরাও রয়েছে। তবুও নানা ইস্যুতে বাজারে নিত্যপণ্যের দাম কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। সাধারণ ভোক্তার নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে এসব পণ্যের দাম। এতে নাভিশ্বাস উঠেছে ক্রেতাদের।

সরকার ডিম খুচরা পর্যায়ে প্রতি পিস ১১ টাকা ৮৭ পয়সা দরে নির্ধারণ করে দিলেও বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা প্রতি হালি। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম নগরীর কয়েকটি কাঁচাবাজারে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়।

বাজারে প্রতি কেজি সোনালী মুরগি ২৭০ টাকা, ব্রয়লার ১৮০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৫০ টাকা, দেশি হাঁস ৬৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। এছাড়াও প্রতি কেজি বেগুন ১শ টাকা, সিম ২শ টাকা, শসা ৬০-৮০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা ও কাঁকরোল ১শ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে লাউ প্রতি পিস ৬০ টাকা, ফুলকপি প্রতি পিস ৭০ টাকা ও মাঝারি সাইজের লেবুর হালি ৫০ টাকা। প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১১৫ থেকে ১২৫ টাকা, আলু ৬০ টাকা, আদা ৩শ টাকা ও রসুন ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ভরা মৌসুমেও ইলিশের দাম ধরাছোঁয়ার বাইরে। দেড় কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ২শ থেকে ২ হাজার ৩শ টাকায়। এক কেজি ওজনের ইলিশ ১ হাজার ৭শ থেকে ১ হাজার ৮শ টাকা। ৮শ থেকে ৯শ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১ হাজার ৫শ থেকে ১ হাজার ৬শ টাকা এবং ৫শ থেকে ৬শ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১২শ থেকে ১৩শ টাকা।
মাছের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বন্যায় বেশকিছু অঞ্চলে চাষিদের মাছ ভেসে গেছে। ফলে বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় মাছের দাম কিছুটা বাড়তি।

সপ্তাহের ব্যবধানে সবজি, পেঁয়াজ, মাছ-মাংসের ভিন্ন ভিন্ন চিত্র দেখা গেলেও দীর্ঘদিন ধরে অপরিবর্তিত রয়েছে প্রায় সব মুদিপণ্যের দাম। বাজারে ছোট মসুর ডাল ১৪০ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৬০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৮০ টাকা, খেসারি ডাল ১২০ টাকা, বুটের ডাল ১১৫ টাকা, ডাবলি ৮০ টাকা, ছোলা ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৭ টাকা, খোলা সয়াবিন ১৪৭ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১৩০ টাকা।
খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, কিছু অসাধু পাইকার ও আমদানিকারক ব্যবসায়ী ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছে। বাজারে নিয়মিত অভিযান চালালে অসাধুদের দৌরাত্ম্য কমবে।

বহদ্দারহাট কাঁচা বাজারে নজরুল ইসলাম ডিম কিনতে এসে বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের এমন উর্ধ্বমুখীতায় আমরা খুবই হতাশ। সিন্ডিকেটের অবসান হলেও জিনিসপত্রের দাম কমছে না।
তিনি বলেন, সরকার তো পরিবর্তন হলো কিন্তু এর কোনো প্রভাব এখানে দেখতে পাচ্ছি না। আগে যা ছিল, এখনও তাই আছে।

সবজি বিক্রেতা মো. রুবেল বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৫ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে শাক-সবজির দাম। সম্প্রতি বন্যায় ফসলের ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে সরবরাহ কমেছে, যার প্রভাবে দাম বাড়ছে।

মো. সাইফুল করিম নামে এক ক্রেতা বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় সব নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। প্রশাসনের তদারকি থাকলেও এর কোনো সুফল মিলছে না। গত সপ্তাহে মাছ-মাংসের দাম বাড়তি ছিল, এই সপ্তাহে পাল্লা দিয়ে সবজির দামও বেড়েছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

সানজিদা তন্বীর বিয়ের খবর জানালেন ফেসবুকে নিজের হৃদয়গ্রাহী পোস্টে

চট্টগ্রামে ভোক্তার নাগালের বাইরে নিত্যপণ্যের দাম

আপডেট সময় : ০৪:১১:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

চট্টগ্রামে একের পর এক বেড়েই চলেছে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। এতে সাধারণ ভোক্তার নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে এসব পণ্যের দাম।
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আসার পর বাজার তদারকিতে প্রশাসনের পাশাপাশি সহযোগী হিসেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও শিক্ষার্থীরাও রয়েছে। তবুও নানা ইস্যুতে বাজারে নিত্যপণ্যের দাম কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। সাধারণ ভোক্তার নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে এসব পণ্যের দাম। এতে নাভিশ্বাস উঠেছে ক্রেতাদের।

সরকার ডিম খুচরা পর্যায়ে প্রতি পিস ১১ টাকা ৮৭ পয়সা দরে নির্ধারণ করে দিলেও বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা প্রতি হালি। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম নগরীর কয়েকটি কাঁচাবাজারে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়।

বাজারে প্রতি কেজি সোনালী মুরগি ২৭০ টাকা, ব্রয়লার ১৮০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৫০ টাকা, দেশি হাঁস ৬৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। এছাড়াও প্রতি কেজি বেগুন ১শ টাকা, সিম ২শ টাকা, শসা ৬০-৮০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা ও কাঁকরোল ১শ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে লাউ প্রতি পিস ৬০ টাকা, ফুলকপি প্রতি পিস ৭০ টাকা ও মাঝারি সাইজের লেবুর হালি ৫০ টাকা। প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১১৫ থেকে ১২৫ টাকা, আলু ৬০ টাকা, আদা ৩শ টাকা ও রসুন ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ভরা মৌসুমেও ইলিশের দাম ধরাছোঁয়ার বাইরে। দেড় কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ২শ থেকে ২ হাজার ৩শ টাকায়। এক কেজি ওজনের ইলিশ ১ হাজার ৭শ থেকে ১ হাজার ৮শ টাকা। ৮শ থেকে ৯শ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১ হাজার ৫শ থেকে ১ হাজার ৬শ টাকা এবং ৫শ থেকে ৬শ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১২শ থেকে ১৩শ টাকা।
মাছের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বন্যায় বেশকিছু অঞ্চলে চাষিদের মাছ ভেসে গেছে। ফলে বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় মাছের দাম কিছুটা বাড়তি।

সপ্তাহের ব্যবধানে সবজি, পেঁয়াজ, মাছ-মাংসের ভিন্ন ভিন্ন চিত্র দেখা গেলেও দীর্ঘদিন ধরে অপরিবর্তিত রয়েছে প্রায় সব মুদিপণ্যের দাম। বাজারে ছোট মসুর ডাল ১৪০ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৬০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৮০ টাকা, খেসারি ডাল ১২০ টাকা, বুটের ডাল ১১৫ টাকা, ডাবলি ৮০ টাকা, ছোলা ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৭ টাকা, খোলা সয়াবিন ১৪৭ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১৩০ টাকা।
খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, কিছু অসাধু পাইকার ও আমদানিকারক ব্যবসায়ী ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছে। বাজারে নিয়মিত অভিযান চালালে অসাধুদের দৌরাত্ম্য কমবে।

বহদ্দারহাট কাঁচা বাজারে নজরুল ইসলাম ডিম কিনতে এসে বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের এমন উর্ধ্বমুখীতায় আমরা খুবই হতাশ। সিন্ডিকেটের অবসান হলেও জিনিসপত্রের দাম কমছে না।
তিনি বলেন, সরকার তো পরিবর্তন হলো কিন্তু এর কোনো প্রভাব এখানে দেখতে পাচ্ছি না। আগে যা ছিল, এখনও তাই আছে।

সবজি বিক্রেতা মো. রুবেল বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৫ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে শাক-সবজির দাম। সম্প্রতি বন্যায় ফসলের ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে সরবরাহ কমেছে, যার প্রভাবে দাম বাড়ছে।

মো. সাইফুল করিম নামে এক ক্রেতা বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় সব নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। প্রশাসনের তদারকি থাকলেও এর কোনো সুফল মিলছে না। গত সপ্তাহে মাছ-মাংসের দাম বাড়তি ছিল, এই সপ্তাহে পাল্লা দিয়ে সবজির দামও বেড়েছে।