১১:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কক্সবাজারে কড়া নিরাপত্তায় প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসব উদযাপন। 

কক্সবাজারে কড়া নিরাপত্তায় শুরু হয়েছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা। বুধবার (১৬ অক্টোবর) সকাল থেকে বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও রাত ৯টা ১২ মিনিটে পূর্ণিমা তিথি শুরু হয়, যা বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা ২৬ মিনিটে শেষ হবে।
বুদ্ধপূজা, উপোসথ শীল গ্রহণ, সদ্ধর্মদেশনা শ্রবণ, সন্ধ্যায় প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, সন্ধ্যার আকাশে আকাশ প্রদীপ হিসেবে ফানুস উত্তোলন এবং দেশ ও বিশ্বশান্তি কামনায় সমবেত প্রার্থনায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে ২দিন ব্যাপী প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসব।
প্রবারণা পূর্ণিমাকে ঘিরে উৎসব মূখর হয়ে উঠে কক্সবাজারের বিহারগুলো। বিহারে বিহারে বর্ণিল আলোকসজ্জার আলোয়  বিহারগুলো হয়ে উঠে দৃষ্টিনন্দন। বুদ্ধ নরনারীরা তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাকে সজ্জিত হয়ে আসে বিহার।
কক্সবাজারের ঐতিহাসিক মাহাসিংদোগ্রী প্রাঙ্গণ ও বেশ কয়েকটি মন্দির ঘুরে দেখা যায়, নান্দনিক কারুকার্যময় প্র্যাছেট (কল্প মন্দির) তৈরি করা হয়েছে। বর্ণিল আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে।
কথা বলছিলাম, রাখাইন নেত্রী, কক্সবাজার মডেল হাইস্কুলের সহকারি প্রধান শিক্ষকা, মা উন টিন রাখাইনের সাথে তিনি বলেন, ভগবান বুদ্ধ তিন মাস ব্যাপী তাবতিংশ স্বর্গে দেবতাদের অভিধম্ম দেশনা শেষে সাংকাশ্য নগরীতে অবতরণ করার ফলে নগরীটি আলো ঝলমলে হয়ে উঠেছিল। এই স্মৃতিকে উদ্দেশ্য করে বর্ণিল আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয় মাহাসিংদোগ্রী প্রাঙ্গণ।
কেন ফানুস বাতি উত্তোলন করা হয়, এমন প্রশ্নের জবাবে, কক্সবাজার হলি চাইল্ড স্কুলের শিক্ষিকা, সাংস্কৃতিক কর্মী নেভী বড়ুয়া বলেন, কুমার সিদ্ধার্থ জগতের সকল দুঃখকষ্ট লাঘবের উপায় অন্বেষণে পবিত্র আষাঢ়ী পূর্ণিমা তিথিতে গৃহত্যাগ করেন। পথিমধ্যে আনোমা নদীর তীরে নিজের কেশ গুচ্ছ ছেদন করে শূণ্যে তুলে ধরেন এবং এই অধিষ্ঠান করেন যে- “আমি যদি বুদ্ধত্ব লাভ করার সামর্থ্য রাখি তাহলে এই কেশ গুচ্ছ মাটিতে পতিত হবে না।” সাথে সাথে দেবতারা কেশ গুচ্ছটিকে স্বর্গে নিয়ে গেলেন এবং সেখানে চুলামুনি জাদি তৈরি করে পূজা দিতে লাগলেন। আমরা মর্ত্যবাসীদের পক্ষে স্বর্গে গিয়ে বুদ্ধের কেশগুচ্ছ রক্ষিত স্থান চুলামুনি জাদিকে পূজা দেওয়া সম্ভব নয়। তাই আমরা সাধারণ মানুষেরা এই পূর্ণিমা তিথিতে আকাশ প্রদীপ(ফানুস) উড়িয়ে চুলামুনি জাদির উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা নিবেদন করে থাকি।
প্রবারণা পূর্ণিমার উৎসবকে ঘিরে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন, সেনাবাহিনীর বিশেষ টিম মন্দিরে মন্দিরে সতর্ক অবস্থানে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সাদা পোশাকেও পুলিশি টহল ছিল চোখে পড়ার মতো।
মহামতি গৌতম বুদ্ধ নির্বাণ লাভের পর আষাঢ়ি পূর্ণিমা থেকে অশ্বিনী পূর্ণিমা তিথি পর্যন্ত তিন মাস বর্ষাবাস শেষে প্রবারণা পালন করেন। সেই থেকে বৌদ্ধধর্মীয় গুরুরা বর্ষাবাস শেষে দিনটি পালন করে আসছেন। এটি আশ্বিনী পূর্ণিমা নামেও পরিচিত।
জনপ্রিয় সংবাদ

সব রেকর্ড ভেঙে স্বর্ণের দামে নতুন ইতিহাস, ভরি ছাড়াল দুই লাখ ২৭ হাজার

কক্সবাজারে কড়া নিরাপত্তায় প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসব উদযাপন। 

আপডেট সময় : ০৬:৩৯:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪
কক্সবাজারে কড়া নিরাপত্তায় শুরু হয়েছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা। বুধবার (১৬ অক্টোবর) সকাল থেকে বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও রাত ৯টা ১২ মিনিটে পূর্ণিমা তিথি শুরু হয়, যা বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা ২৬ মিনিটে শেষ হবে।
বুদ্ধপূজা, উপোসথ শীল গ্রহণ, সদ্ধর্মদেশনা শ্রবণ, সন্ধ্যায় প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, সন্ধ্যার আকাশে আকাশ প্রদীপ হিসেবে ফানুস উত্তোলন এবং দেশ ও বিশ্বশান্তি কামনায় সমবেত প্রার্থনায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে ২দিন ব্যাপী প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসব।
প্রবারণা পূর্ণিমাকে ঘিরে উৎসব মূখর হয়ে উঠে কক্সবাজারের বিহারগুলো। বিহারে বিহারে বর্ণিল আলোকসজ্জার আলোয়  বিহারগুলো হয়ে উঠে দৃষ্টিনন্দন। বুদ্ধ নরনারীরা তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাকে সজ্জিত হয়ে আসে বিহার।
কক্সবাজারের ঐতিহাসিক মাহাসিংদোগ্রী প্রাঙ্গণ ও বেশ কয়েকটি মন্দির ঘুরে দেখা যায়, নান্দনিক কারুকার্যময় প্র্যাছেট (কল্প মন্দির) তৈরি করা হয়েছে। বর্ণিল আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে।
কথা বলছিলাম, রাখাইন নেত্রী, কক্সবাজার মডেল হাইস্কুলের সহকারি প্রধান শিক্ষকা, মা উন টিন রাখাইনের সাথে তিনি বলেন, ভগবান বুদ্ধ তিন মাস ব্যাপী তাবতিংশ স্বর্গে দেবতাদের অভিধম্ম দেশনা শেষে সাংকাশ্য নগরীতে অবতরণ করার ফলে নগরীটি আলো ঝলমলে হয়ে উঠেছিল। এই স্মৃতিকে উদ্দেশ্য করে বর্ণিল আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয় মাহাসিংদোগ্রী প্রাঙ্গণ।
কেন ফানুস বাতি উত্তোলন করা হয়, এমন প্রশ্নের জবাবে, কক্সবাজার হলি চাইল্ড স্কুলের শিক্ষিকা, সাংস্কৃতিক কর্মী নেভী বড়ুয়া বলেন, কুমার সিদ্ধার্থ জগতের সকল দুঃখকষ্ট লাঘবের উপায় অন্বেষণে পবিত্র আষাঢ়ী পূর্ণিমা তিথিতে গৃহত্যাগ করেন। পথিমধ্যে আনোমা নদীর তীরে নিজের কেশ গুচ্ছ ছেদন করে শূণ্যে তুলে ধরেন এবং এই অধিষ্ঠান করেন যে- “আমি যদি বুদ্ধত্ব লাভ করার সামর্থ্য রাখি তাহলে এই কেশ গুচ্ছ মাটিতে পতিত হবে না।” সাথে সাথে দেবতারা কেশ গুচ্ছটিকে স্বর্গে নিয়ে গেলেন এবং সেখানে চুলামুনি জাদি তৈরি করে পূজা দিতে লাগলেন। আমরা মর্ত্যবাসীদের পক্ষে স্বর্গে গিয়ে বুদ্ধের কেশগুচ্ছ রক্ষিত স্থান চুলামুনি জাদিকে পূজা দেওয়া সম্ভব নয়। তাই আমরা সাধারণ মানুষেরা এই পূর্ণিমা তিথিতে আকাশ প্রদীপ(ফানুস) উড়িয়ে চুলামুনি জাদির উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা নিবেদন করে থাকি।
প্রবারণা পূর্ণিমার উৎসবকে ঘিরে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন, সেনাবাহিনীর বিশেষ টিম মন্দিরে মন্দিরে সতর্ক অবস্থানে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সাদা পোশাকেও পুলিশি টহল ছিল চোখে পড়ার মতো।
মহামতি গৌতম বুদ্ধ নির্বাণ লাভের পর আষাঢ়ি পূর্ণিমা থেকে অশ্বিনী পূর্ণিমা তিথি পর্যন্ত তিন মাস বর্ষাবাস শেষে প্রবারণা পালন করেন। সেই থেকে বৌদ্ধধর্মীয় গুরুরা বর্ষাবাস শেষে দিনটি পালন করে আসছেন। এটি আশ্বিনী পূর্ণিমা নামেও পরিচিত।