১১:১১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাবির আইন অনুষদে ‘সাংবিধানিক অধিকার ও প্রতিকার’ বিষয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আইন অনুষদের ‘ডিন’স লেকচার সিরিজ অন কন্টেম্পোরারি লিগ্যাল ইস্যুজ’-এর অংশ হিসেবে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেমিনারের বিষয় ছিল ‘সাংবিধানিক অধিকার ও প্রতিকার: বাংলাদেশের সংস্কার কর্মপরিকল্পনা’।
মঙ্গলবার (২০ মে) বিকেল তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের আয়োজনে শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ সিনেট ভবনে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক আ.ন.ম. ওয়াহিদ-এর সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন এবং সংবিধান সংস্কার কমিশনের সদস্য প্রখ্যাত সংবিধান বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মুহাম্মদ একরামুল হক। এছাড়াও অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, সংবিধান, আইন ও রাষ্ট্রব্যবস্থার বিষয়গুলো নিয়ে সবার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি থাকতে পারে। তবে এসব বোঝার জন্য কেবল আইন নয়, সমাজ, ইতিহাস ও দর্শনের জ্ঞানও প্রয়োজন। সংবিধান নাগরিকদের সম্পদ—এটি সবার জন্য বোধগম্য হওয়া উচিত, যেন সাধারণ মানুষও তা সহজে বুঝতে পারে।
তিনি আরও বলেন, অনেক দেশে লিখিত সংবিধান না থাকলেও সুশাসন আছে। অথচ আমাদের দেশে সংবিধান থাকা সত্ত্বেও নাগরিক অধিকার বারবার লঙ্ঘিত হচ্ছে। শুধু আইনবিদরাই আইনের সচেতন বাহক—এই ধারণা ভুল। বহু উদাহরণ আছে যেখানে আইনজ্ঞরাই নিয়ম ভেঙেছেন। তাই যারা আইনে পড়েনি, তারাও সচেতন নাগরিক হতে পারে।
প্রধান বক্তার আলোচনায় অধ্যাপক মুহাম্মদ একরামুল হক বলেন, রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব হলো—সাধারণ জনগণকে তাদের সাংবিধানিক অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা। প্রতিটি নাগরিকের জানা উচিত যে, সংবিধান তাকে কী কী অধিকার দিয়েছে, সেই অধিকারগুলো কেন গুরুত্বপূর্ণ এবং দৈনন্দিন জীবনে সেগুলোর প্রয়োগ কোথায় হয়। এই সচেতনতা না থাকলে নাগরিক সমাজ একটি ধোঁয়াশাচ্ছন্ন অবস্থায় বসবাস করে, যেখানে তারা জানতেই পারে না—তাদের অধিকার কখন, কোথায় এবং কীভাবে হরণ করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্র যদি নাগরিকদের শিক্ষিত করে তোলে তাদের মৌলিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিকার সম্পর্কে, তবে জনগণ নিজেরাই বুঝতে পারবে—রাষ্ট্রের কোন কোন নীতি বা আইন তাদের অধিকার লঙ্ঘন করছে, কোন কোন সিদ্ধান্ত সংবিধানের পরিপন্থি। এই সচেতনতা না থাকলে গণতন্ত্র শুধু কাগজে-কলমে থেকে যায়, বাস্তবে তার প্রতিফলন ঘটে না। তাই সংবিধান শুধু আইনবিদ বা শাসকদের বিষয় নয়। এটি প্রত্যেক নাগরিকের জানার ও বোঝার বিষয়। রাষ্ট্রের উচিত নাগরিককে এই জ্ঞানে সম্পৃক্ত করা, যাতে তারা একটি অধিকারের ভিত্তিতে গঠিত রাষ্ট্রব্যবস্থায় সচেতনভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে।
এমআর/সব

জনপ্রিয় সংবাদ

শেষবারের মতো ছেলের বাসায় খালেদা জিয়ার নিথর দেহ

রাবির আইন অনুষদে ‘সাংবিধানিক অধিকার ও প্রতিকার’ বিষয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত

আপডেট সময় : ০৮:০৬:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আইন অনুষদের ‘ডিন’স লেকচার সিরিজ অন কন্টেম্পোরারি লিগ্যাল ইস্যুজ’-এর অংশ হিসেবে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেমিনারের বিষয় ছিল ‘সাংবিধানিক অধিকার ও প্রতিকার: বাংলাদেশের সংস্কার কর্মপরিকল্পনা’।
মঙ্গলবার (২০ মে) বিকেল তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের আয়োজনে শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ সিনেট ভবনে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক আ.ন.ম. ওয়াহিদ-এর সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন এবং সংবিধান সংস্কার কমিশনের সদস্য প্রখ্যাত সংবিধান বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মুহাম্মদ একরামুল হক। এছাড়াও অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, সংবিধান, আইন ও রাষ্ট্রব্যবস্থার বিষয়গুলো নিয়ে সবার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি থাকতে পারে। তবে এসব বোঝার জন্য কেবল আইন নয়, সমাজ, ইতিহাস ও দর্শনের জ্ঞানও প্রয়োজন। সংবিধান নাগরিকদের সম্পদ—এটি সবার জন্য বোধগম্য হওয়া উচিত, যেন সাধারণ মানুষও তা সহজে বুঝতে পারে।
তিনি আরও বলেন, অনেক দেশে লিখিত সংবিধান না থাকলেও সুশাসন আছে। অথচ আমাদের দেশে সংবিধান থাকা সত্ত্বেও নাগরিক অধিকার বারবার লঙ্ঘিত হচ্ছে। শুধু আইনবিদরাই আইনের সচেতন বাহক—এই ধারণা ভুল। বহু উদাহরণ আছে যেখানে আইনজ্ঞরাই নিয়ম ভেঙেছেন। তাই যারা আইনে পড়েনি, তারাও সচেতন নাগরিক হতে পারে।
প্রধান বক্তার আলোচনায় অধ্যাপক মুহাম্মদ একরামুল হক বলেন, রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব হলো—সাধারণ জনগণকে তাদের সাংবিধানিক অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা। প্রতিটি নাগরিকের জানা উচিত যে, সংবিধান তাকে কী কী অধিকার দিয়েছে, সেই অধিকারগুলো কেন গুরুত্বপূর্ণ এবং দৈনন্দিন জীবনে সেগুলোর প্রয়োগ কোথায় হয়। এই সচেতনতা না থাকলে নাগরিক সমাজ একটি ধোঁয়াশাচ্ছন্ন অবস্থায় বসবাস করে, যেখানে তারা জানতেই পারে না—তাদের অধিকার কখন, কোথায় এবং কীভাবে হরণ করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্র যদি নাগরিকদের শিক্ষিত করে তোলে তাদের মৌলিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিকার সম্পর্কে, তবে জনগণ নিজেরাই বুঝতে পারবে—রাষ্ট্রের কোন কোন নীতি বা আইন তাদের অধিকার লঙ্ঘন করছে, কোন কোন সিদ্ধান্ত সংবিধানের পরিপন্থি। এই সচেতনতা না থাকলে গণতন্ত্র শুধু কাগজে-কলমে থেকে যায়, বাস্তবে তার প্রতিফলন ঘটে না। তাই সংবিধান শুধু আইনবিদ বা শাসকদের বিষয় নয়। এটি প্রত্যেক নাগরিকের জানার ও বোঝার বিষয়। রাষ্ট্রের উচিত নাগরিককে এই জ্ঞানে সম্পৃক্ত করা, যাতে তারা একটি অধিকারের ভিত্তিতে গঠিত রাষ্ট্রব্যবস্থায় সচেতনভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে।
এমআর/সব