ফুটবল তারকা হওয়ার স্বপ্ন ছিল ২০ বছর বয়সী ব্রিটিশ ফুটবলার আবদুল লতিফ পুজের। তার প্রতিভা তাকে ইউরোপের শীর্ষস্থানীয় এক ক্লাবের চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছে দিয়েছিল। কিন্তু একটি নির্মম ছুরিকাঘাত থামিয়ে দেয় তার জীবনের গতি। মঙ্গলবার ওল্ড বেইলি আদালত তার হত্যার দায়ে ওগুজকান ডেরেলিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন।
বিচারক সারাহ হোয়াইটহাউস কেসি রায়ে জানান, খুনের দায়ে ডেরেলিকে ন্যূনতম ২৪ বছর কারাগারে কাটাতে হবে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক অস্ত্র বহনের দায়ে আরো দুই বছরের সাজা দেওয়া হলেও তা মূল সাজার সঙ্গে একযোগে চলবে।
রায়ের সময় বিচারক বলেন, ‘আমরা হয়তো কখনোই জানতে পারব না কেন সেদিন তুমি গাড়ি থেকে নেমে গিয়ে লতিফকে হত্যা করলে।’
২০২৩ সালের ১৮ অক্টোবরে উত্তর লন্ডনের ক্লারকেনওয়েলে মোপেডে দাঁড়িয়েছিলেন আবদুল লতিফ।
হঠাৎ একটি নীল রঙের ফোর্ড ফোকাস থেকে নেমে দুই ফুট লম্বা ছুরি হাতে হামলা চালান ডেরেলি। মাত্র ১৫ সেকেন্ডের সেই বর্বর হামলায় লতিফের ডান উরুতে আঘাত লাগে। রক্তক্ষরণে তিনি গুরুতর আহত হন এবং তিন দিন পর ২১ অক্টোবর হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
ছয় ভাই ও এক বোনের মধ্যে বড় হয়ে উঠেছিলেন লতিফ।
পড়াশোনা করেছেন ক্রিস্টোফার হাটন ও সেন্ট্রাল ফাউন্ডেশন স্কুলে। খেলেছেন সেমি-প্রো ফুটবল ক্লাবে। তুরস্কের একটি শীর্ষ ক্লাব থেকে পেয়েছিলেন চুক্তির প্রস্তাবও। তবে কেবল ফুটবল নয়, ব্যবসা এবং দর্শন নিয়েও গভীর আগ্রহ ছিল তার।
আদালতে আবেগঘন এক বিবৃতিতে লতিফের মা কাওসার পুজেট বলেন, ‘এটা শুধু আমার ছেলেকে হারানো নয়, মনে হয় আমাদের প্রত্যেককে ছুরি মারা হয়েছে।
যদি পারতাম, আমরা কেউ একজন সেই আঘাত নিজের গায়ে নিতাম, শুধু যেন লতিফ বেঁচে থাকে।’
তার ভাই বদরুদ্দিন পুজে বলেন, ‘তুমি আমার ভাইকে চিনলে মাত্র কয়েক সেকেন্ড, আমি চিনেছি ২০ বছর। সেই ২০ বছরের বন্ধুত্ব, হাসি, স্বপ্ন এক আঘাতে শেষ করে দিলে।’
আরকে/সবা


























