বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস এসোসিয়েশনের (বিএসপিএ) আজীবন সদস্য বিমান ভট্টাচার্য্যের স্মরণসভা আজ শনিবার (২৬ জুলাই) ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামের মহানগরী ফুটবল লিগ কমিটির সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ৭ মার্চ সবাইকে কাঁদিয়ে পরপারে চলে যান বিমান ভট্টাচার্য্য। বিএসপিএ সভাপতি রেজওয়ান উজ জামান রাজিবের সঞ্চালনায় এ স্মরণসভায় বিমান ভট্টাচার্য্যের স্মৃতিচারণা করেন বিএসপিএ’র সাবেক সভাপতি হাসানউল্লাহ খান রানা, সাবেক সভাপতি সনৎ বাবলা, আজীবন সদস্য ইকরামুজ্জামান, সিনিয়র সদস্য সেলিম নজরুল হক, খায়রুল ইসলাম শাহীন, তালহা বিন নজরুল, জাহিদ রহমান, ইয়াহিয়া মুন্না, বিএসপিএ সহ-সভাপতি কাজী শহীদুল ইসলাম, রাকীবুর রহমান, মহিউদ্দিন পলাশ, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি বিল্লাল হোসেন রবিন, সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন পন্টি, সিনিয়র সাংবাদিক সুকুমার সরকার বিমান ভট্টাচার্য্যের স্মৃতিচারণা করেন।
স্মরণসভায় আজীবন সদস্য সানাউল হক খান, বিমান ভট্টাচার্য্যের স্ত্রী শিখা চক্রবর্তী, ছেলে স্বপ্নীল ভট্টাচার্য্য, মেয়ে শতাব্দী ভট্টাচার্য্য, মেয়ের জামাতা রবিন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
ইকরামুজ্জামান বলেন, ‘বিমান দাকে প্রথম দেখেছি, বাংলার বাণীর অফিসে। স্বাধীনতার আগে ওনাকে চিনতাম না। এত দায়িত্বশীল মানুষ আর হবে না। ওনার অনেক স্মৃতি রয়ে গেছে। নীতির প্রশ্নে আপোষহীন ছিলেন। কতগুলো জিনিসের কারণে বিমান দাকে মানুষ ভুলতে পারবে না। ওনার অনেক জিনিস কারো সঙ্গে মিলবে না। আমরা বিমান দা ধারণ করতে পারব, যদি ওনার আদর্শ আমরা অনুসরণ করতে পারি।’
অতীত স্মৃতিচারণ করে সেলিম নজরুল হক বলেন, ‘আমার সঙ্গে ওনার অনেক স্মৃতি। বিশেষ করে বাংলার বাণীতে। বিমান দার সঙ্গে ট্যুরও করতাম। ওনার সঙ্গে আমাদের পারিবারিক সম্পর্কও ছিল। একজন মানুষ যে বছরের পর বছর বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকতে পারেন, সেটি বিমান দাকে দেখলেই বোঝা যায়। আমার মা-বাবার পর বিমান দাকে ভুলতে পারব না। আজীবন স্মরণ থাকবে।’
হাসানউল্লাহ খান রানা বলেন, ‘বিমান দাকে নিয়ে কথা বললে নির্বাচন আসবেই। আমি বিমান দার সঙ্গে দুই নির্বাচনের নির্বাচন কমিশনার হিসেবে কাজ করেছি। আমার উপলব্ধি হয়েছে, যদি সৎ লোকের সঙ্গে কাজ করা যায়, তাহলে অনেক কিছুই সহজ হয়ে যায়। আমরা যারা নির্বাচন করেছি, কেউই আমার ফেবার পায়নি। কতটা সৎ ছিলেন তিনি, সেটি বাড়িয়ে বলার অপেক্ষা রাখে না। ক্রীড়ালেখক সমিতিতে সবচেয়ে কাউকে মানার কথা বলা হলে, সেখানে আমার কাছে সবার আগে থাকবে বিমান ভট্টাচার্য্যরে নাম। যারা সমিতিতে নির্বাচনের দায়িত্বে থাকবেন- বিমান দাকে যেন অনুসরণ করা হয়।’
সনৎ বাবলা বলেন, ‘বিমান দা ক্রীড়ালেখক সমিতির নির্বাচনকে এমন এক জায়গায় সেট করে দিয়ে গেছেন, একমাত্র সংগঠন এটি গঠনতন্ত্র অক্ষরে অক্ষরে পালন করেন। এমন নির্বাচন বাংলাদেশের অন্য কোথাও হয় কি না, জানি না। এই স্বচ্ছ নির্বাচনের নায়ক বিমান দা।’
নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন পন্টি স্মৃতিচারণে বলেন,‘ নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সঙ্গে বিমান দার অনেক স্মৃতি। তিনি বিনা পয়সায় প্রতিবছর নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের অডিট করে দিতেন’। বিমান ভট্টাচার্য্যের মেয়ে শতাব্দী ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘সব জায়গায় বাবা একই সততা সারাজীবন দেখিয়ে গেছেন। আমার বাবার কোনো শত্রু ছিল না। আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন- যেন চিরশান্তিতে থাকেন।’
ছেলে স্বপ্নীল ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘ক্রীড়ালেখক সমিতির পক্ষকে যে স্মরণসভা আয়োজন করা হয়েছে, এজন্য আমি আমার পরিবারের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আজকে বাবার সততা শিক্ষাটা পরিবারিক অনেক বড় শিক্ষা। এই সততটা ও পারিবারিক শিক্ষা যদি কারোর মধ্যে থাকে, তাহলে সে অনেক দূর এগিয়ে যাবে।’
স্ত্রী শিখা চক্রবর্তী বলেন, ‘ধন্যবাদ, ক্রীড়ালেখক সমিতিকে এই আয়োজন করার বিমান ভট্টাচার্য্য জন্য। আমি খুবই অসুস্থ। সবাই আমার স্বামীর জন্য সবাই দোয়া করবেন।’
বিএসপিএ সাধারণ সম্পাদক সামন হোসেন বলেন, ‘বিমান দার মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। আমরা তার পরিবারের পাশে আছি। আমাদের চেষ্টা থাকবে তার আদর্শকে ধারণ করে আমাদের মধ্যে বাঁচিয়ে রাখতে চাই।’
আরকে/সবা


























