রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে ভরপুর বেতানি বিল এখন গোলাপি পদ্মে ঢেকে আছে। বর্ষা মৌসুমে ফুটে থাকা হাজার হাজার পদ্মফুল বিলটিকে পরিণত করেছে এক অপার সৌন্দর্যের উৎসে। প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে প্রকৃতি প্রেমীরা ছুটে আসছেন এই মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে। কেউ ছবি তুলছেন, কেউ বা হাতে করে ফুল নিয়ে যাচ্ছেন বাড়ি।
প্রতিবছর বর্ষাকালে আরকে রোডের দুই পাশে বিস্তৃত এই বিলজুড়ে দেখা যায় গোলাপি পদ্মের সমারোহ। দিনে দিনে দর্শনার্থীদের সংখ্যা বাড়লেও, সেই সঙ্গে বাড়ছে পদ্মফুল তুলে বিক্রির প্রবণতা। অনেকেই নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে ফুল তুলে তা বিক্রি করছেন রাস্তার পাশে বা স্থানীয় বাজারে।
স্থানীয় ফুল বিক্রেতা শিশু সাঈদ, বকুল ও সোহাগ বলেন, “আমরা প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ শত টাকার ফুল বিক্রি করে সংসারের কিছু খরচ চালাই। প্রতিটি পদ্মফুল ৫ থেকে ১০ টাকায় বিক্রি হয়।”
রংপুর মহানগর থেকে আসা পদ্ম প্রেমী মো. ইব্রাহিম বলেন, “বিলে ঘোরার জন্য নৌকা বা অন্য কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই দূর থেকেই ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করেই ফিরতে হলো। কিছু ফুল ১০ টাকা করে কিনে নিয়ে যাচ্ছি।”
পরিবেশবাদীরা বলছেন, ফুলের এই অবাধ বিক্রয় পদ্মবিলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে হুমকির মুখে ফেলেছে। এখনই যদি সংরক্ষণের ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, ভবিষ্যতে বিলের এই নান্দনিকতা হারিয়ে যেতে পারে।
পদ্ম প্রেমী দর্শনার্থী জান্নাতুল ফেরদৌসী বলেন, “বিলটি যদি সংরক্ষণের আওতায় আনা হয় এবং ঘুরে দেখার জন্য নৌকা বা পর্যটকদের উপযোগী কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়, তাহলে এটি হতে পারে একটি আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র।”
এ বিষয়ে কাউনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিদুল হক বলেন, “বেতানি বিলে পদ্মফুল ফুটেছে তা আমরা জানি। কিছু মানুষ ফুল ছিঁড়ে নিয়ে যাচ্ছেন বলেও শুনেছি। আমরা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করছি এবং বিল সংরক্ষণের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সকলের প্রতি অনুরোধ, অনুগ্রহ করে কেউ যেন ফুল ছিঁড়ে বিলের সৌন্দর্য নষ্ট না করেন।”
প্রকৃতি প্রেমীদের দাবি, বিলটি সংরক্ষণ করে এটিকে একটি ট্যুরিস্ট স্পট হিসেবে গড়ে তোলা গেলে একদিকে যেমন বিলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষা পাবে, অন্যদিকে স্থানীয় মানুষও উপকৃত হবে পর্যটন থেকে।
এমআর/সবা


























