১০:২৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
 প্রার্থিতার বয়সসীমা সর্বোচ্চ ৩০ বছর

অবশেষে অনুমোদন পেল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) নতুন গঠনতন্ত্র

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনের পথে এক বড় অগ্রগতি হলো। নানা আলোচনার পর অবশেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৫৯তম সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদন পেল চাকসুর নতুন গঠনতন্ত্র। এতে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের সুযোগ আরও সুসংগঠিত ও সময়োপযোগী করার লক্ষ্যে সংযোজন-বিয়োজন হয়েছে একাধিক দিক।

নতুন গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, প্রার্থিতা ও ভোটাধিকার পাওয়া শিক্ষার্থীদের বয়সসীমা সর্বোচ্চ ৩০ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে। একইসঙ্গে কেবলমাত্র নিয়মিত ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল-সংযুক্ত শিক্ষার্থীরাই চাকসু নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। সান্ধ্যকালীন, এক্সিকিউটিভ, সার্টিফিকেট ও ভাষা কোর্স এবং সংযুক্ত কলেজ বা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা এ সুযোগ থেকে বাদ থাকবেন।

নতুন কাঠামোয় মোট ২৮টি পদ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে নির্বাহী সদস্য ৫টি, যা পূর্বের ১০টি থেকে কমিয়ে আনা হয়েছে। তবে যোগ হয়েছে নতুন ১২টি পদ, যার মধ্যে রয়েছে— গবেষণা ও উদ্ভাবন, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ও আবাসন, দপ্তর, ছাত্রীকল্যাণসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ক সম্পাদক ও সহকারী সম্পাদক পদ।

এছাড়া ‘সমাজসেবা সম্পাদক’ ও ‘উপ-সমাজসেবা সম্পাদক’ পদদ্বয়কে রূপান্তর করে এখন রাখা হয়েছে ‘সমাজসেবা, পরিবেশ ও মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক’ এবং ‘সহ-সমাজসেবা, পরিবেশ ও মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক’ হিসেবে।

গঠনতন্ত্রে স্বাধীনতা সংগ্রাম, মহান মুক্তিযুদ্ধ, ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানসহ দেশের সকল গণতান্ত্রিক চেতনা ও ধর্মীয় মূল্যবোধ সমুন্নত রাখার প্রতিশ্রুতি সংযোজন করা হয়েছে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের অধিকার, চাহিদা ও সমস্যাগুলো যথাযথভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সামনে উপস্থাপন ও সমাধানের পথ সুগম করতেই এই কাঠামো সংস্কার করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম গঠনতন্ত্র অনুমোদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এ বিষয়ে চাকসু নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন জানান, “গঠনতন্ত্রটি হাতে পাওয়ার পর দ্রুত সভা ডাকা হবে। এরপর যত দ্রুত সম্ভব তফসিল ঘোষণা করা হবে।”

প্রসঙ্গত, ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত চাকসুর সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯০ সালের ফেব্রুয়ারিতে। ওই বছরের ডিসেম্বরে ছাত্রনেতা ফারুকুজ্জামান খুনের ঘটনার পর থেকে দীর্ঘ ৩৪ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে চাকসুর কার্যক্রম।

এই গঠনতন্ত্র অনুমোদনের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বহুল প্রতীক্ষিত প্রতিনিধি নির্বাচনের পথ সুগম হলো। এখন শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা—নির্বাচনের তফসিল দ্রুত ঘোষণা করে কার্যকর ও স্বচ্ছ একটি ছাত্র সংসদ গঠন নিশ্চিত করা হোক।

এমআর/সবা

জনপ্রিয় সংবাদ

কাবা শরীফ চত্বরে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যার চেষ্টা এক ব্যক্তির

 প্রার্থিতার বয়সসীমা সর্বোচ্চ ৩০ বছর

অবশেষে অনুমোদন পেল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) নতুন গঠনতন্ত্র

আপডেট সময় : ০৬:০৯:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ অগাস্ট ২০২৫

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনের পথে এক বড় অগ্রগতি হলো। নানা আলোচনার পর অবশেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৫৯তম সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদন পেল চাকসুর নতুন গঠনতন্ত্র। এতে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের সুযোগ আরও সুসংগঠিত ও সময়োপযোগী করার লক্ষ্যে সংযোজন-বিয়োজন হয়েছে একাধিক দিক।

নতুন গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, প্রার্থিতা ও ভোটাধিকার পাওয়া শিক্ষার্থীদের বয়সসীমা সর্বোচ্চ ৩০ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে। একইসঙ্গে কেবলমাত্র নিয়মিত ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল-সংযুক্ত শিক্ষার্থীরাই চাকসু নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। সান্ধ্যকালীন, এক্সিকিউটিভ, সার্টিফিকেট ও ভাষা কোর্স এবং সংযুক্ত কলেজ বা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা এ সুযোগ থেকে বাদ থাকবেন।

নতুন কাঠামোয় মোট ২৮টি পদ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে নির্বাহী সদস্য ৫টি, যা পূর্বের ১০টি থেকে কমিয়ে আনা হয়েছে। তবে যোগ হয়েছে নতুন ১২টি পদ, যার মধ্যে রয়েছে— গবেষণা ও উদ্ভাবন, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ও আবাসন, দপ্তর, ছাত্রীকল্যাণসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ক সম্পাদক ও সহকারী সম্পাদক পদ।

এছাড়া ‘সমাজসেবা সম্পাদক’ ও ‘উপ-সমাজসেবা সম্পাদক’ পদদ্বয়কে রূপান্তর করে এখন রাখা হয়েছে ‘সমাজসেবা, পরিবেশ ও মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক’ এবং ‘সহ-সমাজসেবা, পরিবেশ ও মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক’ হিসেবে।

গঠনতন্ত্রে স্বাধীনতা সংগ্রাম, মহান মুক্তিযুদ্ধ, ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানসহ দেশের সকল গণতান্ত্রিক চেতনা ও ধর্মীয় মূল্যবোধ সমুন্নত রাখার প্রতিশ্রুতি সংযোজন করা হয়েছে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের অধিকার, চাহিদা ও সমস্যাগুলো যথাযথভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সামনে উপস্থাপন ও সমাধানের পথ সুগম করতেই এই কাঠামো সংস্কার করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম গঠনতন্ত্র অনুমোদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এ বিষয়ে চাকসু নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন জানান, “গঠনতন্ত্রটি হাতে পাওয়ার পর দ্রুত সভা ডাকা হবে। এরপর যত দ্রুত সম্ভব তফসিল ঘোষণা করা হবে।”

প্রসঙ্গত, ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত চাকসুর সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯০ সালের ফেব্রুয়ারিতে। ওই বছরের ডিসেম্বরে ছাত্রনেতা ফারুকুজ্জামান খুনের ঘটনার পর থেকে দীর্ঘ ৩৪ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে চাকসুর কার্যক্রম।

এই গঠনতন্ত্র অনুমোদনের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বহুল প্রতীক্ষিত প্রতিনিধি নির্বাচনের পথ সুগম হলো। এখন শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা—নির্বাচনের তফসিল দ্রুত ঘোষণা করে কার্যকর ও স্বচ্ছ একটি ছাত্র সংসদ গঠন নিশ্চিত করা হোক।

এমআর/সবা