০৭:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রীতির জালে বাঁধা এক ফুটবল ম্যাচ

সোনালী অতীত ফুটবল ক্লাব, পলাশ ২-০ দুরন্ত ইঞ্জিনিয়ার্স অব জিপিএস (ঘোড়াশাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অফিসারদের দল)
  • রুমেল খান
  • আপডেট সময় : ০২:২৯:১৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫
  • 449

প্রীতি ম্যাচ শুরুর আগে অংশগ্রহণকারী দুই দল, প্রধান ও বিশেষ অতিথিসহ অন্যরা

নরসিংদীর ঘোড়াশালের ওয়াপদা গেট। এখান থেকেই শুরু হয়েছিল নতুন এক স্বপ্নযাত্রা। ২০২৩ সালের ১৭ জুন প্রতিষ্ঠিত হয় ‘পলাশ উপজেলা সোনালী অতীত ফুটবল ক্লাব, নরসিংদী’ (পরবর্তীতে পরিমার্জিত নামকরণ ‘সোনালী অতীত ফুটবল ক্লাব, পলাশ’) । এই ক্লাবের স্লোগান হচ্ছে- “ক্রীড়াই শক্তি, ঐক্যের ভিত্তি”। রাজনৈতিক গণ্ডি পেরিয়ে একেবারেই স্বেচ্ছাসেবী ও অসাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়ে এগোতে থাকা এই সংগঠনের লক্ষ্য একটাই— ফুটবলের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনা এবং নতুন প্রজন্মকে খেলায় অনুপ্রাণিত করা।

ঐক্যের ছায়াতলে সোনালী অতীত

ক্লাবের গঠনতন্ত্র, নিজস্ব মনোগ্রাম, বিশেষ টি-শার্ট ও জার্সি— সবই এখন এক পরিচয়ের প্রতীক। পলাশ উপজেলার সাবেক ফুটবলার, সংগঠক ও ক্রীড়ামোদীদের মিলনমেলায় এই ক্লাব হয়ে উঠেছে এক ঐক্যের প্ল্যাটফর্ম। প্রীতি ম্যাচ আয়োজন থেকে শুরু করে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ— প্রতিটি কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়েই ফুটবলের প্রতি ভালোবাসাকে নতুন করে জাগিয়ে তুলছে তারা।

ম্যাচ শুরুর আগে দুই দলের অধিনায়কের ব্যাজ বিনিময়

শাকিলের আগমনে নস্টালজিয়া

সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ আবহ তৈরি করে সাবেক কৃতী ফুটবলার ও অস্ট্রিয়া প্রবাসী শাকিল উদ্দিনের আগমন। যিনি ক্লাবের কার্যপরিচালনা পরিষদের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক। দীর্ঘদিন পর নিজের মাটিতে ফিরে আসায় তাকে ঘিরে উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ে। তার উপস্থিতিকে স্মরণীয় করে রাখতে পলাশ কো-অপারেটিভ স্কুল মাঠে গত ১৫ আগস্ট আয়োজন করা হয় এক প্রীতি ম্যাচ।

প্রীতির ম্যাচে উচ্ছ্বাস

সেখানে মুখোমুখি হয় সোনালী অতীত ফুটবল ক্লাব, পলাশ বনাম দুরন্ত ইঞ্জিনিয়ার্স অব জিপিএস (ঘোড়াশাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অফিসারদের দল)। লড়াই জমে ওঠে শুরু থেকেই। বয়সকে হার মানিয়ে দু’দলের খেলোয়াড়রা উপহার দেন দারুণ প্রাণবন্ত ফুটবল। খেলায় স্বাগতিক সোনালী অতীত জয়লাভ করে ২-০ গোলে। রাসেল ও কলিম উদ্দিনের গোলে উল্লাসে ভাসে মাঠ। যথেষ্ট প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এই খেলাটি দেখে মাঠে উপস্থিত দর্শকরা অনেক আনন্দ পেয়েছেন।

তারকাদের উপস্থিতি

এই রোমাঞ্চকর ম্যাচটি উপভোগ করেন ১৯৮৯ সালের প্রেসিডেন্ট গোল্ডকাপ জয়ী বাংলাদেশ লাল ফুটবল দলের সদস্য ও সাবেক জাতীয় গোলরক্ষক আওলাদ হোসেন লিটন। তিনি বর্তমানে সোনালী অতীত ফুটবল ক্লাব, পলাশের নির্বাহী পরিষদের প্রধানও। বিশেষ অতিথি ছিলেন শাকিল উদ্দিন, যার কথা আগেই বলা হয়েছে। মাঠে আরও উপস্থিত ছিলেন সোনালী অতীত ফুটবল ক্লাব, পলাশের কার্যপরিচালনা পরিষদের অন্যান্য সদস্যরাও। অগুণিত দর্শকের উল্লাসে ম্যাচটি যেন হয়ে ওঠে স্মৃতিময় এক উৎসব।

আগামীর স্বপ্ন

সোনালী অতীত ফুটবল ক্লাব, পলাশ সূত্র জানায়, সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ২৩ আগস্ট তারা আরেকটি প্রীতি ম্যাচ খেলবে। তবে এখানেই থেমে থাকতে চায় না সোনালী অতীত। তাদের স্বপ্ন— স্থানীয় পর্যায়ে প্রতিভা খুঁজে বের করা, নতুন প্রজন্মকে খেলার সঙ্গে যুক্ত করা, এবং দেশের বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠিত সোনালী অতীত ফুটবল টুর্নামেন্টে নিয়মিত অংশগ্রহণ করা।

স্লোগানের প্রতিধ্বনি

খেলা শেষে মাঠে প্রতিধ্বনিত হয়েছে তাদের স্লোগান— “ক্রীড়াই শক্তি, ঐক্যের ভিত্তি।”

উপসংহার

একটি প্রীতি ম্যাচই প্রমাণ করে দিল— ফুটবল শুধু খেলা নয়, এটি ঐক্যের সেতুবন্ধন, প্রজন্মের মিলনস্থল এবং হারানো গৌরব ফিরে পাওয়ার অঙ্গীকার।

খেলা আরম্ভ হওয়ার আগে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখছেন আওলাদ হোসেন লিটন (ছবিতে মাঝে)। তাঁর ডানে শাকিল উদ্দিন

* সোনালী অতীত ফুটবল ক্লাব, পলাশ ॥ বাচ্চু,  ফারুক হোসেন (অধিনায়ক), কামরুল ইসলাম, নাজমুল ইসলাম মানিক, জাকির, জাকির-২, শফিক, রাসেল, কলিম উদ্দিন, মারুফ, মাসুদ রানা, সংগ্রাম চন্দ, মাসুদুল আলম, সম্রাট, মোখলেসুর রহমান; কোচ : সেলিম ভূঁইয়া; ম্যানেজার : নূর মোহাম্মদ বাবু।

* দুরন্ত ইঞ্জিনিয়ার্স অব জিপিএস, (ঘোবিকে) ॥ জোবায়ের হোসেন, জহিরুল ইসলাম, আরিফ হোসেন সাগর, রানা কান্ত দাস, জাকির হোসেন, মাসুদ রানা, সোহেল খান তুহিন, শাকিল আহমেদ, মাহফুজ রহমান, শেখ সাদী, অনুপ কুমার রায়, সোহেল সামাদ, লিংকন মণ্ডল, আরিফ আযম (অধিনায়ক), পলাশ মিয়া, মোহাম্মদ আসিফ; কোচ : ইমরান হোসেন; ম্যানেজার : বেলাল হোসেন।

* রেফারি : ভারত চন্দ্র (ফিফা রেফারি), সহকারী রেফারি : জুবায়ের ও হামজা।

* ধারাভাষ্যকার ॥ জাহাঙ্গীর আলম এবং এমএ হাশমি।

আরকে/সবা

 

জনপ্রিয় সংবাদ

মালিকানা বদলের পর ১ কোটি ১০ লাখ টাকা কী পাবেন নাঈম?

প্রীতির জালে বাঁধা এক ফুটবল ম্যাচ

আপডেট সময় : ০২:২৯:১৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫

নরসিংদীর ঘোড়াশালের ওয়াপদা গেট। এখান থেকেই শুরু হয়েছিল নতুন এক স্বপ্নযাত্রা। ২০২৩ সালের ১৭ জুন প্রতিষ্ঠিত হয় ‘পলাশ উপজেলা সোনালী অতীত ফুটবল ক্লাব, নরসিংদী’ (পরবর্তীতে পরিমার্জিত নামকরণ ‘সোনালী অতীত ফুটবল ক্লাব, পলাশ’) । এই ক্লাবের স্লোগান হচ্ছে- “ক্রীড়াই শক্তি, ঐক্যের ভিত্তি”। রাজনৈতিক গণ্ডি পেরিয়ে একেবারেই স্বেচ্ছাসেবী ও অসাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়ে এগোতে থাকা এই সংগঠনের লক্ষ্য একটাই— ফুটবলের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনা এবং নতুন প্রজন্মকে খেলায় অনুপ্রাণিত করা।

ঐক্যের ছায়াতলে সোনালী অতীত

ক্লাবের গঠনতন্ত্র, নিজস্ব মনোগ্রাম, বিশেষ টি-শার্ট ও জার্সি— সবই এখন এক পরিচয়ের প্রতীক। পলাশ উপজেলার সাবেক ফুটবলার, সংগঠক ও ক্রীড়ামোদীদের মিলনমেলায় এই ক্লাব হয়ে উঠেছে এক ঐক্যের প্ল্যাটফর্ম। প্রীতি ম্যাচ আয়োজন থেকে শুরু করে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ— প্রতিটি কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়েই ফুটবলের প্রতি ভালোবাসাকে নতুন করে জাগিয়ে তুলছে তারা।

ম্যাচ শুরুর আগে দুই দলের অধিনায়কের ব্যাজ বিনিময়

শাকিলের আগমনে নস্টালজিয়া

সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ আবহ তৈরি করে সাবেক কৃতী ফুটবলার ও অস্ট্রিয়া প্রবাসী শাকিল উদ্দিনের আগমন। যিনি ক্লাবের কার্যপরিচালনা পরিষদের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক। দীর্ঘদিন পর নিজের মাটিতে ফিরে আসায় তাকে ঘিরে উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ে। তার উপস্থিতিকে স্মরণীয় করে রাখতে পলাশ কো-অপারেটিভ স্কুল মাঠে গত ১৫ আগস্ট আয়োজন করা হয় এক প্রীতি ম্যাচ।

প্রীতির ম্যাচে উচ্ছ্বাস

সেখানে মুখোমুখি হয় সোনালী অতীত ফুটবল ক্লাব, পলাশ বনাম দুরন্ত ইঞ্জিনিয়ার্স অব জিপিএস (ঘোড়াশাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অফিসারদের দল)। লড়াই জমে ওঠে শুরু থেকেই। বয়সকে হার মানিয়ে দু’দলের খেলোয়াড়রা উপহার দেন দারুণ প্রাণবন্ত ফুটবল। খেলায় স্বাগতিক সোনালী অতীত জয়লাভ করে ২-০ গোলে। রাসেল ও কলিম উদ্দিনের গোলে উল্লাসে ভাসে মাঠ। যথেষ্ট প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এই খেলাটি দেখে মাঠে উপস্থিত দর্শকরা অনেক আনন্দ পেয়েছেন।

তারকাদের উপস্থিতি

এই রোমাঞ্চকর ম্যাচটি উপভোগ করেন ১৯৮৯ সালের প্রেসিডেন্ট গোল্ডকাপ জয়ী বাংলাদেশ লাল ফুটবল দলের সদস্য ও সাবেক জাতীয় গোলরক্ষক আওলাদ হোসেন লিটন। তিনি বর্তমানে সোনালী অতীত ফুটবল ক্লাব, পলাশের নির্বাহী পরিষদের প্রধানও। বিশেষ অতিথি ছিলেন শাকিল উদ্দিন, যার কথা আগেই বলা হয়েছে। মাঠে আরও উপস্থিত ছিলেন সোনালী অতীত ফুটবল ক্লাব, পলাশের কার্যপরিচালনা পরিষদের অন্যান্য সদস্যরাও। অগুণিত দর্শকের উল্লাসে ম্যাচটি যেন হয়ে ওঠে স্মৃতিময় এক উৎসব।

আগামীর স্বপ্ন

সোনালী অতীত ফুটবল ক্লাব, পলাশ সূত্র জানায়, সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ২৩ আগস্ট তারা আরেকটি প্রীতি ম্যাচ খেলবে। তবে এখানেই থেমে থাকতে চায় না সোনালী অতীত। তাদের স্বপ্ন— স্থানীয় পর্যায়ে প্রতিভা খুঁজে বের করা, নতুন প্রজন্মকে খেলার সঙ্গে যুক্ত করা, এবং দেশের বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠিত সোনালী অতীত ফুটবল টুর্নামেন্টে নিয়মিত অংশগ্রহণ করা।

স্লোগানের প্রতিধ্বনি

খেলা শেষে মাঠে প্রতিধ্বনিত হয়েছে তাদের স্লোগান— “ক্রীড়াই শক্তি, ঐক্যের ভিত্তি।”

উপসংহার

একটি প্রীতি ম্যাচই প্রমাণ করে দিল— ফুটবল শুধু খেলা নয়, এটি ঐক্যের সেতুবন্ধন, প্রজন্মের মিলনস্থল এবং হারানো গৌরব ফিরে পাওয়ার অঙ্গীকার।

খেলা আরম্ভ হওয়ার আগে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখছেন আওলাদ হোসেন লিটন (ছবিতে মাঝে)। তাঁর ডানে শাকিল উদ্দিন

* সোনালী অতীত ফুটবল ক্লাব, পলাশ ॥ বাচ্চু,  ফারুক হোসেন (অধিনায়ক), কামরুল ইসলাম, নাজমুল ইসলাম মানিক, জাকির, জাকির-২, শফিক, রাসেল, কলিম উদ্দিন, মারুফ, মাসুদ রানা, সংগ্রাম চন্দ, মাসুদুল আলম, সম্রাট, মোখলেসুর রহমান; কোচ : সেলিম ভূঁইয়া; ম্যানেজার : নূর মোহাম্মদ বাবু।

* দুরন্ত ইঞ্জিনিয়ার্স অব জিপিএস, (ঘোবিকে) ॥ জোবায়ের হোসেন, জহিরুল ইসলাম, আরিফ হোসেন সাগর, রানা কান্ত দাস, জাকির হোসেন, মাসুদ রানা, সোহেল খান তুহিন, শাকিল আহমেদ, মাহফুজ রহমান, শেখ সাদী, অনুপ কুমার রায়, সোহেল সামাদ, লিংকন মণ্ডল, আরিফ আযম (অধিনায়ক), পলাশ মিয়া, মোহাম্মদ আসিফ; কোচ : ইমরান হোসেন; ম্যানেজার : বেলাল হোসেন।

* রেফারি : ভারত চন্দ্র (ফিফা রেফারি), সহকারী রেফারি : জুবায়ের ও হামজা।

* ধারাভাষ্যকার ॥ জাহাঙ্গীর আলম এবং এমএ হাশমি।

আরকে/সবা