০৬:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হাসপাতালোত ওষুধ না পায়া ফিরি যাগং  বাহে 

হাসপাতালোত ওষুধ না পায়া ফিরি যাগং কি করমো বাহে হাসপাতালটা নিজে অসুস্থ হয়ে পরছে। আর তো হামরা এ কথা গুলো বলছিলেন  চিলমারী হাসপাতালে আসা  রমনা মডেল  ইউনিয়নের  জোড়গাছ এলাকায় আছিয়া বেগম।
কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০ জন চিকিৎসকসহ ৫২টি পদ শুন্য থাকার ফলে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। চিকিৎসক-সংকটের কারণে প্রতিদিন অসংখ্য রোগী যথাযথ সরকারি চিকিৎসা সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। পাশাপাশি তদারকি আর সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে চিকিৎসা ব্যবস্থা মূলতঃ ন্যুয়ে পড়েছে সরকারি এ হাসপাতালটিতে।
জানা গেছে, কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও সেভাবে সেবার মানের হয়নি উন্নয়ন। ২০ জন ডাক্তারসহ শুন্যপদ রয়েছে ৫২টি পদ। বিভিন্ন শুন্যপদসহ নানা সমস্যা নিয়ে চলছে হাসপাতালটি। এখানে চিকিৎসকসহ ১৪৪টি পদ থাকলেও কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৯২ জন। জরুরী প্রসূতী সেবা কার্যক্রম যেখানে ২৪ ঘন্টা চালু থাকার কথা, সেখানে চলে মাত্র কয়েক ঘণ্টা। এ সময় জরুরী প্রসূতী সেবার জন্য কোন রোগী আসলে তাকে স্থানীয় ও কুড়িগ্রামের  ক্লিনিকে প্রেরনের চেষ্টা করা হয়। শুধু প্রসূতী রোগী নয় জরুরী বিভাগে রোগী আসলে বেশির ভাগ রোগীতে রেফার্ড করা হয় কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে। ফলে রোগীদের পরিবহন খরচসহ অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে হয় বলে জানান রোগীর স্বজনরা।
অপরদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্সরে মেশিনটি দীর্ঘদিন থেকে বিকল হয়ে পড়ে আছে। আবারো নতুন একটি এক্সরে মেশিন আসলেও টেকনিশিয়ান না থাকায় পড়ে আছে সেটিও। যার ফলে রোগীদের সামান্য পরীক্ষার জন্যই যেতে হচ্ছে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে। আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন থাকলেও নেই সনোলজিষ্ট বা প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত চিকিৎসক। এ্যাম্বুলেন্স থাকলে নেই ড্রাইভার। স্টোর কিপারের পদ শুন্য ফলে দায়িত্ব পালনে অফিস সহায়ক থাকায় ক্ষমতার বলে কিছু স্টাফ বিভিন্ন ফায়দা লুটছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। এমনকি জরুরী বিভাগে বেশির ভাগ সময় চিকিৎসক না থাকায় অনেক সময় উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার দিয়ে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয় রোগীদের।
চিকিৎসা নিতে আসা রমনা মডেল ইউনিয়নের আমেনা   বেগম বলেন, আমরা জনসাধারণ হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা-সেবা নিতে গিয়ে প্রতিদিন নানা হয়রানি ও সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছি। হাসপাতালের যারা দায়িত্বে আছে তারা দেখেও না দেখার ভান করে থাকে।অনেক কষ্টে ডাক্তার দেখাইলাম  ওষুধ লেখি দিলো কিন্তু হাসপাতালে ওষুধ নাই এখন বাড়ি যাচ্ছি বাড়ি থাকি  টাকা আনি বাইরের ওষুধের দোকান থাকি ওষুধ কেনা লাগবে। এই হইলো হামার হাসপাতালের অবস্থা। হাসপাতালে আসা রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের ফকিরের হাট এলাকার জাহিদুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালটিতে প্রায় প্রতিদিনই ওষুধ থাকে না হাসপাতালে যারা দায়িত্বে থাকেন তাইরাই ভালো জানেন ওষুধ কোথায় যায়। হাসপাতাল যখন থাকি শুরু হইছে তখন থাকি হাসপাতালে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়। দেখার কেউ নেই। তার সরকারের কাছে আমার দাবি হাসপাতালটি যেন ভালো ভাবে চলে নেই দিখে নজর রাখা।
চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আমিনুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালের সমস্যা সমাধানের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখনো সাড়া মেলেনি। তিনি আরো বলেন, লোকবল কম থাকলেও আমরা আন্তরিকভাবে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছি। রোগীদেরকে  ওষুধ প্রতিনিয়ত দেয়া হয়। এছাড়াও হাসপাতালের সকল ধরনের  সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।
মমিনুল ইসলাম বাবু
জনপ্রিয় সংবাদ

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের পানিতে কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া, বন্দিরা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে

হাসপাতালোত ওষুধ না পায়া ফিরি যাগং  বাহে 

আপডেট সময় : ০৯:৪৮:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ অক্টোবর ২০২৩
হাসপাতালোত ওষুধ না পায়া ফিরি যাগং কি করমো বাহে হাসপাতালটা নিজে অসুস্থ হয়ে পরছে। আর তো হামরা এ কথা গুলো বলছিলেন  চিলমারী হাসপাতালে আসা  রমনা মডেল  ইউনিয়নের  জোড়গাছ এলাকায় আছিয়া বেগম।
কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০ জন চিকিৎসকসহ ৫২টি পদ শুন্য থাকার ফলে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। চিকিৎসক-সংকটের কারণে প্রতিদিন অসংখ্য রোগী যথাযথ সরকারি চিকিৎসা সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। পাশাপাশি তদারকি আর সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে চিকিৎসা ব্যবস্থা মূলতঃ ন্যুয়ে পড়েছে সরকারি এ হাসপাতালটিতে।
জানা গেছে, কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও সেভাবে সেবার মানের হয়নি উন্নয়ন। ২০ জন ডাক্তারসহ শুন্যপদ রয়েছে ৫২টি পদ। বিভিন্ন শুন্যপদসহ নানা সমস্যা নিয়ে চলছে হাসপাতালটি। এখানে চিকিৎসকসহ ১৪৪টি পদ থাকলেও কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৯২ জন। জরুরী প্রসূতী সেবা কার্যক্রম যেখানে ২৪ ঘন্টা চালু থাকার কথা, সেখানে চলে মাত্র কয়েক ঘণ্টা। এ সময় জরুরী প্রসূতী সেবার জন্য কোন রোগী আসলে তাকে স্থানীয় ও কুড়িগ্রামের  ক্লিনিকে প্রেরনের চেষ্টা করা হয়। শুধু প্রসূতী রোগী নয় জরুরী বিভাগে রোগী আসলে বেশির ভাগ রোগীতে রেফার্ড করা হয় কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে। ফলে রোগীদের পরিবহন খরচসহ অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে হয় বলে জানান রোগীর স্বজনরা।
অপরদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্সরে মেশিনটি দীর্ঘদিন থেকে বিকল হয়ে পড়ে আছে। আবারো নতুন একটি এক্সরে মেশিন আসলেও টেকনিশিয়ান না থাকায় পড়ে আছে সেটিও। যার ফলে রোগীদের সামান্য পরীক্ষার জন্যই যেতে হচ্ছে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে। আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন থাকলেও নেই সনোলজিষ্ট বা প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত চিকিৎসক। এ্যাম্বুলেন্স থাকলে নেই ড্রাইভার। স্টোর কিপারের পদ শুন্য ফলে দায়িত্ব পালনে অফিস সহায়ক থাকায় ক্ষমতার বলে কিছু স্টাফ বিভিন্ন ফায়দা লুটছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। এমনকি জরুরী বিভাগে বেশির ভাগ সময় চিকিৎসক না থাকায় অনেক সময় উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার দিয়ে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয় রোগীদের।
চিকিৎসা নিতে আসা রমনা মডেল ইউনিয়নের আমেনা   বেগম বলেন, আমরা জনসাধারণ হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা-সেবা নিতে গিয়ে প্রতিদিন নানা হয়রানি ও সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছি। হাসপাতালের যারা দায়িত্বে আছে তারা দেখেও না দেখার ভান করে থাকে।অনেক কষ্টে ডাক্তার দেখাইলাম  ওষুধ লেখি দিলো কিন্তু হাসপাতালে ওষুধ নাই এখন বাড়ি যাচ্ছি বাড়ি থাকি  টাকা আনি বাইরের ওষুধের দোকান থাকি ওষুধ কেনা লাগবে। এই হইলো হামার হাসপাতালের অবস্থা। হাসপাতালে আসা রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের ফকিরের হাট এলাকার জাহিদুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালটিতে প্রায় প্রতিদিনই ওষুধ থাকে না হাসপাতালে যারা দায়িত্বে থাকেন তাইরাই ভালো জানেন ওষুধ কোথায় যায়। হাসপাতাল যখন থাকি শুরু হইছে তখন থাকি হাসপাতালে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়। দেখার কেউ নেই। তার সরকারের কাছে আমার দাবি হাসপাতালটি যেন ভালো ভাবে চলে নেই দিখে নজর রাখা।
চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আমিনুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালের সমস্যা সমাধানের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখনো সাড়া মেলেনি। তিনি আরো বলেন, লোকবল কম থাকলেও আমরা আন্তরিকভাবে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছি। রোগীদেরকে  ওষুধ প্রতিনিয়ত দেয়া হয়। এছাড়াও হাসপাতালের সকল ধরনের  সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।
মমিনুল ইসলাম বাবু