দীর্ঘ ২৩ মাস ৯ দিন বন্ধ থাকার পর যমুনা ফার্টিলাইজার কোম্পানী লিমিটেডে (জেএফসিএল)-এ ইউরিয়া সার উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এতে জামালপুর, শেরপুর, টাঙ্গাইলসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় সারের সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ার আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। দীর্ঘদিনের অচলাবস্থা কাটিয়ে যমুনা সার কারখানায় আবারও উৎপাদনের চাকা ঘুরতে শুরু করায় স্থানীয়দের মাঝে আনন্দের সুবাতাস বইছে।
এরআগে ২৩ ডিসেম্বর দুপুরে দৈনিক সবুজ বাংলা পত্রিকার অনলাইনে “গ্যাসের চাপ কম, উৎপাদন শুরু করতে পারছে না যমুনা সার কারখানা” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হলে কতৃপক্ষের নজরে আসলে সন্ধ্যায় গ্যাসের চাপ বাড়ে এবং সার করখানাটিতে উৎপদন শুরু হয়।
যমুনা সার কারখানা কতৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড কারখানায় গ্যাস সংযোগ পুনরায় দেওয়ার পর উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। গ্যাস সংযোগ পাওয়ার পর যান্ত্রিক ত্রুটি মেরামত করে উৎপাদন প্রক্রিয়া চালুর প্রস্তুতির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কারখানায় উৎপাদন শুরু হয়।
বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) নিয়ন্ত্রণাধীন কেপিআই-১ মানসম্পন্ন যমুনা সার কারখানাটি ১৯৯১ সাল থেকে দৈনিক প্রায় ১ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন ইউরিয়া উৎপাদন করে আসছে। নিরবিচ্ছিন্ন উৎপাদনের জন্য দৈনিক ৪২–৪৩ পিএসআই গ্যাসের প্রয়োজন হয়। তবে গ্যাসের চাপ কমে যাওয়ায় ও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে উৎপাদন কমে দৈনিক প্রায় ১ হাজার ২০০ মেট্রিক টনে নেমে আসে।
কারখানা সূত্র জানায়, ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার কোম্পানীতে উৎপাদন অব্যাহত রাখতে ২০২৪ সালের ১৫ জানুয়ারি থেকে যমুনা সার কারখানায় গ্যাসের চাপ কমিয়ে দেওয়া হয়। এর ফলে যমুনায় ইউরিয়া উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।
বিসিআইসি’র নিবন্ধিত সার ডিলার চান মিয়া চানু বলেন, যমুনা সার কারখানা থেকে জামালপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইলসহ উত্তরাঞ্চলের ১৯ জেলার প্রায় আড়াই হাজার ডিলার সার উত্তোলন করেন। দীর্ঘদিন উৎপাদন বন্ধ থাকায় কমান্ডিং এলাকায় সার সংকট দেখা দিয়েছিল। উৎপাদন শুরু হওয়ায় সেই সংকট কমবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
যমুনা সার কারখানার শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ আলম তালুকদার বলেন, ‘দীর্ঘদিন কারখানা বন্ধ থাকায় শ্রমিক-কর্মচারীরা চরম কষ্টে ছিলেন। গ্যাস সংযোগ ফিরে আসায় পর কারখানায় উৎপাদন শুরু হওয়ায় সবার মধ্যে নতুন করে প্রাণচাঞ্চলতা ফিরে এসেছে।’
কারখানার মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) দেলোয়ার হোসেন বলেন, গ্যাস সংকটের কারণে ২০২৪ সালের ১৫ জানুয়ারি থেকে উৎপাদন বন্ধ ছিল। এখন গ্যাসের চাপ বাড়ানো হয়েছে। কিছু যন্ত্রাংশের মেরামত শেষে পূর্ণমাত্রায় অ্যামোনিয়া ও ইউরিয়া উৎপাদনে যেতে পেরে আমরা আনন্দিত। তিনি আরো বলেন, আজ মঙ্গলবার সোয়া চারটার দিকে সকল বাধাবিপত্তি অতিক্রম করে কারখানায় নিয়মিত ইউরিয়া উৎপাদন শুরু হয়েছে।























