০৯:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নাটকের উৎসব

জুলহাস আহমেদ

প্রতিবছরের মতো এবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় বার্ষিক নাট্যোৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। গতকাল সোমবার শুরু হয়েছে ১৭তম এ নাট্যোৎসব। বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান তরুণ নাট্যশিল্পীদের জন্য এ আয়োজন উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রোভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। পরে মঞ্চায়িত হয় আবদুল্লাহ আল মামুনের নাটক ‘কোকিলারা’। এবারের নাট্যোৎসবে বিশেষ সম্মাননা পেয়েছেন নাট্যকার, অভিনেতা, নির্দেশক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ। ৯ দিনব্যাপী উৎসব শেষ হবে মঙ্গলবার। বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের স্নাতক সমাপনী সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের নির্দেশনায় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে ৯ দিনে ১৫টি নাটক মঞ্চস্থ হবে।
আয়োজকরা জানান, উদ্বোধনী দিনে মঞ্চায়িত হয়েছে ইফতি শাহরিয়ার রাইয়ানের নির্দেশনায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কালজয়ী সৃষ্টি ‘ডাকঘর’। উৎসবের দ্বিতীয় দিনে ছিল শাওনের নির্দেশনায় সেলিম আল দীনের নাটক ‘সংবাদ কার্টুন’ ও রিফাত করবীর নির্দেশনায় আহমদ ছফার নাটক ‘বিলাস’। ৪ অক্টোবর রিজভীর নির্দেশনায় মুজাহিদুল ইসলাম রিফাতের ঠাকুর নাটক ‘চণ্ডালিকা’। ৫ অক্টোবর তাহিয়া তাসনিমের নির্দেশনায় সৈয়দ শামসুল হকের ‘ঈর্ষা’ এবং মৌমিতা সরকারের রচনা ও নির্দেশনায় নাটক ‘বৈদেহী’। ৬ অক্টোবর ছিল মিরহাজুল শিবলীর নির্দেশনায় বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের নাটক কমলাকান্তের জবানবন্দী এবং জাদিদ ইমতিয়াজ আহমেদের নির্দেশনায় আবদুল্লাহ আল মামুনের কোকিলারা। ৭ অক্টোবরে তরিকুল সরদারের নির্দেশনায় উৎপল দত্তের মেঘ ও সালমানের নূরের নির্দেশনায় নুরুল মোমেনের নেমেসিস। ৮ অক্টোবর প্রদর্শন হয়েছে প্রাণ কৃষ্ণ বণিকের নির্দেশনায় শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাটক সত্যান্বেষী ও এস এ তানভীরের নির্দেশনায় রবীন্দ্রনাথের স্ত্রীর পত্র। সমাপনী দিনে থাকছে দেবলীনা চন্দ্র দৈবীর নির্দেশনায় বদরুজ্জামান আলমগীরের নাটক ‘অহরকন্ডল’ ও জয়া মারিয়া কস্তার নির্দেশনায় মুনীর চৌধুরীর নাটক দণ্ডকারণ্য।
নাট্য উৎসবের প্রভাব প্রসঙ্গে বিভাগের চেয়ারম্যান বলেন, ‘মানুষে মানুষে সম্পর্কের বিষয়টি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। একজন হয়তো থিওরি পরীক্ষায় খারাপ করেছে, অথচ দেখা গেল অভিনয়ে সে সেরা। আরেকজন হয়তো ভালো লিখতে পারে, কিন্তু যোগাযোগের দক্ষতা নেই বিশেষ। আমাদের কাজ যার ভেতরে যে প্রতিভা আছে, সেটা বের করে আনা। যেন সে ভবিষ্যতে তার শক্তিশালী দিকটা পেশাজীবনে কাজে লাগিয়ে ভালো করতে পারে।’ বিভাগের চেয়ারম্যান আরো জানান, পাঁচ বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা এত পরিশ্রম করেন যে, সব রকম অভিজ্ঞতা তাঁদের হয়ে যায়, এটা অনেকটা কমান্ডোদের সারভাইভাল ট্রেনিংয়ের মতো।
এবারের নাট্যোৎসবে নাট্যকার, অভিনেতা, নির্দেশক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মামুনুর রশিদকে এবারের নাট্যোৎসবে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হবে। এর আগে সেলিম আল দীন, ফেরদৌসী মজুমদার, সৈয়দ শামসুল হক, আলী যাকের, আতাউর রহমান, রামেন্দু মজুমদার ও আসাদুজ্জামান নূর এই সম্মাননা পেয়েছেন। এ ছাড়া এবারের নাট্যেৎসবে দর্শক উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। বাংলা নাটকের সঞ্জীবনী শক্তি দর্শকের কাছে কতটা গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে তা বলার অবকাশ রাখে না।

জনপ্রিয় সংবাদ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নাটকের উৎসব

আপডেট সময় : ১০:৪৮:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ অক্টোবর ২০২৩

জুলহাস আহমেদ

প্রতিবছরের মতো এবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় বার্ষিক নাট্যোৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। গতকাল সোমবার শুরু হয়েছে ১৭তম এ নাট্যোৎসব। বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান তরুণ নাট্যশিল্পীদের জন্য এ আয়োজন উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রোভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। পরে মঞ্চায়িত হয় আবদুল্লাহ আল মামুনের নাটক ‘কোকিলারা’। এবারের নাট্যোৎসবে বিশেষ সম্মাননা পেয়েছেন নাট্যকার, অভিনেতা, নির্দেশক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ। ৯ দিনব্যাপী উৎসব শেষ হবে মঙ্গলবার। বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের স্নাতক সমাপনী সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের নির্দেশনায় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে ৯ দিনে ১৫টি নাটক মঞ্চস্থ হবে।
আয়োজকরা জানান, উদ্বোধনী দিনে মঞ্চায়িত হয়েছে ইফতি শাহরিয়ার রাইয়ানের নির্দেশনায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কালজয়ী সৃষ্টি ‘ডাকঘর’। উৎসবের দ্বিতীয় দিনে ছিল শাওনের নির্দেশনায় সেলিম আল দীনের নাটক ‘সংবাদ কার্টুন’ ও রিফাত করবীর নির্দেশনায় আহমদ ছফার নাটক ‘বিলাস’। ৪ অক্টোবর রিজভীর নির্দেশনায় মুজাহিদুল ইসলাম রিফাতের ঠাকুর নাটক ‘চণ্ডালিকা’। ৫ অক্টোবর তাহিয়া তাসনিমের নির্দেশনায় সৈয়দ শামসুল হকের ‘ঈর্ষা’ এবং মৌমিতা সরকারের রচনা ও নির্দেশনায় নাটক ‘বৈদেহী’। ৬ অক্টোবর ছিল মিরহাজুল শিবলীর নির্দেশনায় বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের নাটক কমলাকান্তের জবানবন্দী এবং জাদিদ ইমতিয়াজ আহমেদের নির্দেশনায় আবদুল্লাহ আল মামুনের কোকিলারা। ৭ অক্টোবরে তরিকুল সরদারের নির্দেশনায় উৎপল দত্তের মেঘ ও সালমানের নূরের নির্দেশনায় নুরুল মোমেনের নেমেসিস। ৮ অক্টোবর প্রদর্শন হয়েছে প্রাণ কৃষ্ণ বণিকের নির্দেশনায় শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাটক সত্যান্বেষী ও এস এ তানভীরের নির্দেশনায় রবীন্দ্রনাথের স্ত্রীর পত্র। সমাপনী দিনে থাকছে দেবলীনা চন্দ্র দৈবীর নির্দেশনায় বদরুজ্জামান আলমগীরের নাটক ‘অহরকন্ডল’ ও জয়া মারিয়া কস্তার নির্দেশনায় মুনীর চৌধুরীর নাটক দণ্ডকারণ্য।
নাট্য উৎসবের প্রভাব প্রসঙ্গে বিভাগের চেয়ারম্যান বলেন, ‘মানুষে মানুষে সম্পর্কের বিষয়টি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। একজন হয়তো থিওরি পরীক্ষায় খারাপ করেছে, অথচ দেখা গেল অভিনয়ে সে সেরা। আরেকজন হয়তো ভালো লিখতে পারে, কিন্তু যোগাযোগের দক্ষতা নেই বিশেষ। আমাদের কাজ যার ভেতরে যে প্রতিভা আছে, সেটা বের করে আনা। যেন সে ভবিষ্যতে তার শক্তিশালী দিকটা পেশাজীবনে কাজে লাগিয়ে ভালো করতে পারে।’ বিভাগের চেয়ারম্যান আরো জানান, পাঁচ বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা এত পরিশ্রম করেন যে, সব রকম অভিজ্ঞতা তাঁদের হয়ে যায়, এটা অনেকটা কমান্ডোদের সারভাইভাল ট্রেনিংয়ের মতো।
এবারের নাট্যোৎসবে নাট্যকার, অভিনেতা, নির্দেশক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মামুনুর রশিদকে এবারের নাট্যোৎসবে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হবে। এর আগে সেলিম আল দীন, ফেরদৌসী মজুমদার, সৈয়দ শামসুল হক, আলী যাকের, আতাউর রহমান, রামেন্দু মজুমদার ও আসাদুজ্জামান নূর এই সম্মাননা পেয়েছেন। এ ছাড়া এবারের নাট্যেৎসবে দর্শক উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। বাংলা নাটকের সঞ্জীবনী শক্তি দর্শকের কাছে কতটা গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে তা বলার অবকাশ রাখে না।