০৬:৩১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্পাস জুড়ে সেনাবাহিনীর টহল

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শিক্ষার্থীদের সাথে স্থানীয় গ্রামবাসীর সংঘর্ষের পর বিশ্ববিদ্যালয় ও জোরবা এলাকার মধ্যে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২নং গেইট বাজারের পূর্ব সীমা থেকে পূর্বদিকে রেলগেইট পর্যন্ত গতকাল দুপুর ২টা থেকে আজ রাত ১২টা পর্যন্ত এর ১৪৪ ধারা জারি থাকায় টহল দিচ্ছে সেনাসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

গতকাল বেলা ১১টা থেকে সংঘর্ষ শুরু হলে পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন বাহিনীর সাথে যোগাযোগ করা হলেও সময়মত আসেনি কোনো ফোর্স। টানা ৫ ঘন্টা সংঘর্ষের পর সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব আসার পর সংঘর্ষ বন্ধ হয়। ততক্ষণে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফসহ আহত ছাড়িয়েছে ৪ শতাধিক। নিরাপত্তা বাহিনীর এধরণের আচরণে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

গতকাল টানা ৬ ঘন্টা ধরে স্থানীয় গ্রামবাসীর সাথে সংঘর্ষে ৪৫০ এর অধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান। এতে ৪ জন গুরুতর আহত। একজনকে ঢাকায় রেফার করা হয়েছে।

সংঘর্ষের পর গতকাল সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, রাষ্ট্রীয় বাহিনী, জেলা প্রশাসক ও গ্রামের কয়েকজন প্রতিনিধিদের নিয়ে আলোচনায় বসে প্রশাসন। এ সংঘর্ষের কারণ ও সমাধান নিয়ে মতামত দেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতারের জন্য দাবি জানায় প্রশাসন। এছাড়া আহত শিক্ষার্থীদের উন্নত চিকিৎসা দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি ভবিষ্যতে এধরণের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া বন্ধ রাখা হয়েছে সব ধরণের ক্লাস ও পরীক্ষা।

উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেটের কাছে এক ছাত্রী একটি ভবনে ভাড়া থাকেন। গতকাল দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি ওই ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করলে দারোয়ানের সঙ্গে তার তর্ক হয়। একপর্যায়ে ভবনের দারোয়ান তাকে মারধর করেন। তবে, পরবর্তীতে অভিযোগ উঠে ওই ছাত্রী দারোয়ানের সাথে তর্কের একপর্যায়ে তাকে চড় মারেন। পরে ২ নং গেটে থাকা শিক্ষার্থীরা দারোয়ানকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে তিনি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে শিক্ষার্থীরা তাকে ধাওয়া করলে স্থানীয় লোকজন শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। তখন সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে যোগাযোগ করা হলেও তাদের স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া না পাওয়ায় সংঘর্ষের মাত্রা বেড়েছে।

এ বিষয়ে অধ্যাপক বজলুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আমার শত শত শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। অনেকের অবস্থা গুরুতর। যৌথ বাহিনী অনেক দেরিতে ঘটনাস্থলে এসেছে, ততক্ষণে অনেক রক্তক্ষয় হয়ে গেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি থমথমে রয়েছে। ১৪৪ ধারা জারি থাকায় সেনাবাহিনী টহল দিচ্ছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্পাস জুড়ে সেনাবাহিনীর টহল

আপডেট সময় : ০২:৪৬:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শিক্ষার্থীদের সাথে স্থানীয় গ্রামবাসীর সংঘর্ষের পর বিশ্ববিদ্যালয় ও জোরবা এলাকার মধ্যে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২নং গেইট বাজারের পূর্ব সীমা থেকে পূর্বদিকে রেলগেইট পর্যন্ত গতকাল দুপুর ২টা থেকে আজ রাত ১২টা পর্যন্ত এর ১৪৪ ধারা জারি থাকায় টহল দিচ্ছে সেনাসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

গতকাল বেলা ১১টা থেকে সংঘর্ষ শুরু হলে পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন বাহিনীর সাথে যোগাযোগ করা হলেও সময়মত আসেনি কোনো ফোর্স। টানা ৫ ঘন্টা সংঘর্ষের পর সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব আসার পর সংঘর্ষ বন্ধ হয়। ততক্ষণে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফসহ আহত ছাড়িয়েছে ৪ শতাধিক। নিরাপত্তা বাহিনীর এধরণের আচরণে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

গতকাল টানা ৬ ঘন্টা ধরে স্থানীয় গ্রামবাসীর সাথে সংঘর্ষে ৪৫০ এর অধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান। এতে ৪ জন গুরুতর আহত। একজনকে ঢাকায় রেফার করা হয়েছে।

সংঘর্ষের পর গতকাল সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, রাষ্ট্রীয় বাহিনী, জেলা প্রশাসক ও গ্রামের কয়েকজন প্রতিনিধিদের নিয়ে আলোচনায় বসে প্রশাসন। এ সংঘর্ষের কারণ ও সমাধান নিয়ে মতামত দেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতারের জন্য দাবি জানায় প্রশাসন। এছাড়া আহত শিক্ষার্থীদের উন্নত চিকিৎসা দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি ভবিষ্যতে এধরণের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া বন্ধ রাখা হয়েছে সব ধরণের ক্লাস ও পরীক্ষা।

উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেটের কাছে এক ছাত্রী একটি ভবনে ভাড়া থাকেন। গতকাল দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি ওই ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করলে দারোয়ানের সঙ্গে তার তর্ক হয়। একপর্যায়ে ভবনের দারোয়ান তাকে মারধর করেন। তবে, পরবর্তীতে অভিযোগ উঠে ওই ছাত্রী দারোয়ানের সাথে তর্কের একপর্যায়ে তাকে চড় মারেন। পরে ২ নং গেটে থাকা শিক্ষার্থীরা দারোয়ানকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে তিনি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে শিক্ষার্থীরা তাকে ধাওয়া করলে স্থানীয় লোকজন শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। তখন সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে যোগাযোগ করা হলেও তাদের স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া না পাওয়ায় সংঘর্ষের মাত্রা বেড়েছে।

এ বিষয়ে অধ্যাপক বজলুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আমার শত শত শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। অনেকের অবস্থা গুরুতর। যৌথ বাহিনী অনেক দেরিতে ঘটনাস্থলে এসেছে, ততক্ষণে অনেক রক্তক্ষয় হয়ে গেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি থমথমে রয়েছে। ১৪৪ ধারা জারি থাকায় সেনাবাহিনী টহল দিচ্ছে।