০২:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা, ৫% আদিবাসী কোটা ও বর্গা শিক্ষক বাতিলের দাবি

দেশের সকল উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এবং সরকারি চাকরিতে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য ৫% কোটা পুনর্বহাল, পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহে বর্গা শিক্ষক নিয়োগ বাতিল, শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি বন্ধ, পর্যাপ্ত ও দক্ষ শিক্ষক নিয়োগ, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়ন”– এসব দাবিতে এই কর্মসূচি আয়োজন করা হয়।

বুধবার ৬৩তম শিক্ষা দিবস উপলক্ষে পার্বত্য পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন (এইচডব্লিউএফ) রাঙ্গামাটিতে এ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ আয়োজন করেন।

সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন পাহাড়ী ছাত্র পরিষ( পিসিপি’র ) রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ম্যাগলিন চাকমা এবং সভাপতিত্ব করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন জেলা কমিটির সহ-সভাপতি কবিতা চাকমা। স্বাগত বক্তব্য দেন পিসিপি জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সুনীতি বিকাশ চাকমা।

পিসিপি’র সভাপতি রুমেন চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের শিক্ষা ব্যবস্থা নানামুখী সমস্যা ও দুর্নীতিতে জর্জরিত। জেলা পরিষদের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগে টাকার বিনিময়ে দুর্নীতি চলছে, যা পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করছে।
তিনি আরও বলেন, কলেজ ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট ও অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতার কারণে প্রতিবছর পরীক্ষার ফল খারাপ হচ্ছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বর্গা শিক্ষক ব্যবস্থা, দুর্গম ভৌগোলিক বাস্তবতা ও সীমিত সুযোগ-সুবিধার কারণে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। এ অবস্থার পরিবর্তনে তিনি দুর্নীতিমুক্ত শিক্ষক নিয়োগ, শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য সরকারি চাকরিতে ৫% কোটা পুনর্বহালের দাবি জানান। একইসাথে তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের করার দেওয়ার আহ্বান জানান।

 

গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সরকার পরিবর্তনের পরও পাহাড়ে শাসন ব্যবস্থায় কোনো মৌলিক পরিবর্তন আসেনি, বরং মানবাধিকার লঙ্ঘন বেড়েছে বলে অভিযোগ করেন এইচডব্লিউএফ কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও প্রচার সম্পাদক চন্দ্রিকা চাকমা। তিনি বলেন, শিক্ষা একটি জাতিকে আলোকিত করে, কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষাব্যবস্থার দুরবস্থার কারণে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার দিন দিন বাড়ছে। সাজেক ও বান্দরবানের বিভিন্ন এলাকায় বিলাসবহুল হোটেল-রিসোর্ট তৈরি হলেও প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই।

রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী মেরিন বিকাশ ত্রিপুরা মেরিন বিকাশ ত্রিপুরা বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয় পেরোনোর আগেই পাহাড়ি শিশুরা ঝরে পড়ছে, কারণ এখানে শিক্ষা নীতিকে পশ্চাৎপদ রাখা হয়েছে। পাহাড়ে শুধু লোকদেখানো উন্নয়ন হচ্ছে, কিন্তু মৌলিক অধিকার বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে। এছাড়া দূর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা ও শিক্ষক বদলি দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামকে শাস্তি প্রদানের অঞ্চল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

সমাবেশ শেষে হিল উইমেন্স ফেডারেশন জেলা কমিটির সহ-সভাপতি কবিতা চাকমা দফাভিত্তিক দাবিনামা উপস্থাপন করেন এবং কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

শুভ/সবা

 

জনপ্রিয় সংবাদ

একনেক সভায় ৪৬ হাজার ৪১৯ কোটি টাকার ২২ প্রকল্প অনুমোদন

শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা, ৫% আদিবাসী কোটা ও বর্গা শিক্ষক বাতিলের দাবি

আপডেট সময় : ০৫:০৩:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

দেশের সকল উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এবং সরকারি চাকরিতে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য ৫% কোটা পুনর্বহাল, পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহে বর্গা শিক্ষক নিয়োগ বাতিল, শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি বন্ধ, পর্যাপ্ত ও দক্ষ শিক্ষক নিয়োগ, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়ন”– এসব দাবিতে এই কর্মসূচি আয়োজন করা হয়।

বুধবার ৬৩তম শিক্ষা দিবস উপলক্ষে পার্বত্য পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন (এইচডব্লিউএফ) রাঙ্গামাটিতে এ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ আয়োজন করেন।

সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন পাহাড়ী ছাত্র পরিষ( পিসিপি’র ) রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ম্যাগলিন চাকমা এবং সভাপতিত্ব করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন জেলা কমিটির সহ-সভাপতি কবিতা চাকমা। স্বাগত বক্তব্য দেন পিসিপি জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সুনীতি বিকাশ চাকমা।

পিসিপি’র সভাপতি রুমেন চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের শিক্ষা ব্যবস্থা নানামুখী সমস্যা ও দুর্নীতিতে জর্জরিত। জেলা পরিষদের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগে টাকার বিনিময়ে দুর্নীতি চলছে, যা পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করছে।
তিনি আরও বলেন, কলেজ ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট ও অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতার কারণে প্রতিবছর পরীক্ষার ফল খারাপ হচ্ছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বর্গা শিক্ষক ব্যবস্থা, দুর্গম ভৌগোলিক বাস্তবতা ও সীমিত সুযোগ-সুবিধার কারণে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। এ অবস্থার পরিবর্তনে তিনি দুর্নীতিমুক্ত শিক্ষক নিয়োগ, শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য সরকারি চাকরিতে ৫% কোটা পুনর্বহালের দাবি জানান। একইসাথে তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের করার দেওয়ার আহ্বান জানান।

 

গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সরকার পরিবর্তনের পরও পাহাড়ে শাসন ব্যবস্থায় কোনো মৌলিক পরিবর্তন আসেনি, বরং মানবাধিকার লঙ্ঘন বেড়েছে বলে অভিযোগ করেন এইচডব্লিউএফ কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও প্রচার সম্পাদক চন্দ্রিকা চাকমা। তিনি বলেন, শিক্ষা একটি জাতিকে আলোকিত করে, কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষাব্যবস্থার দুরবস্থার কারণে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার দিন দিন বাড়ছে। সাজেক ও বান্দরবানের বিভিন্ন এলাকায় বিলাসবহুল হোটেল-রিসোর্ট তৈরি হলেও প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই।

রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী মেরিন বিকাশ ত্রিপুরা মেরিন বিকাশ ত্রিপুরা বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয় পেরোনোর আগেই পাহাড়ি শিশুরা ঝরে পড়ছে, কারণ এখানে শিক্ষা নীতিকে পশ্চাৎপদ রাখা হয়েছে। পাহাড়ে শুধু লোকদেখানো উন্নয়ন হচ্ছে, কিন্তু মৌলিক অধিকার বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে। এছাড়া দূর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা ও শিক্ষক বদলি দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামকে শাস্তি প্রদানের অঞ্চল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

সমাবেশ শেষে হিল উইমেন্স ফেডারেশন জেলা কমিটির সহ-সভাপতি কবিতা চাকমা দফাভিত্তিক দাবিনামা উপস্থাপন করেন এবং কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

শুভ/সবা