বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. ইউসুফের বিরুদ্ধে ফলাফল জালিয়াতির অভিযোগ অবশেষে সত্য প্রমাণিত হয়েছে। রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তার জমা দেওয়া উচ্চমাধ্যমিক সনদে তথ্য জালিয়াতি রয়েছে।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সহযোগী অধ্যাপকের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে গঠিত তদন্ত কমিটিও একই অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করেছিল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ইউসুফের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ যাচাইয়ের জন্য শিক্ষা বোর্ডে পাঠানো হলে দেখা যায়, তিনি জমা দেওয়া ফলাফলে জিপিএ ৩.০১ দেখালেও বোর্ডের রেকর্ডে প্রকৃত জিপিএ ২.৯০। অথচ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্ত অনুযায়ী এসএসসি বা এইচএসসিতে ন্যূনতম জিপিএ ৪ থাকতে হয়, যা ইউসুফ পূরণ করতে ব্যর্থ হন।
২০১১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট উল্লেখ ছিল, এসএসসি বা এইচএসসির যেকোনো একটিতে ন্যূনতম ‘এ’ গ্রেড থাকতে হবে। অথচ ইউসুফ এসএসসিতে জিপিএ ৩.৫০ এবং এইচএসসিতে ৩.০১ (বা প্রকৃত ২.৯০) পেয়েছিলেন। তবুও তিনি নিয়োগ পান।
রেজিস্ট্রার দপ্তর সূত্রে জানা যায়, তার নিয়োগের সময় কোনো প্ল্যানিং কমিটি গঠন করা হয়নি। এমনকি সিন্ডিকেট নিয়োগ বাতিল করলেও চ্যান্সেলরকে অবহিত করা হয়নি। পরে ইউসুফ হাইকোর্টে রিট করে রায় নিয়ে নিয়োগ বহাল রাখেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ ব্যাপারে কোনো আপিলও করেনি।
প্রাপ্ত নথি অনুযায়ী, নিয়োগ প্রক্রিয়ায়ও একাধিক অনিয়ম হয়। প্রভাষক পদের জন্য একটি স্থায়ী পদ বিজ্ঞাপিত হলেও হাতে লিখে সংখ্যা তিন করা হয় এবং তিনজনকে সুপারিশ করা হয়। সেখানে ইউসুফের নাম রহস্যজনকভাবে ‘ক্রমিক নং ২’ করে দেওয়া হয়।
এ প্রসঙ্গে বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলী বলেন, “তার (ইউসুফ) সহ তিনজন শিক্ষকের নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে একটি সমন্বিত তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। যেহেতু তদন্ত তিনজনকে ঘিরে, তাই একজনের প্রতিবেদন জমা হলেও অন্যদেরটা এখনও জমা হয়নি। এ ছাড়া ইউসুফ বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি উকিল নোটিশ পাঠিয়েছেন, যেখানে তার বিষয়ে ৯০ দিনের স্থগিতাদেশের আবেদন করা হয়েছে।”
উল্লেখ্য, মো. ইউসুফ বঙ্গবন্ধু পরিষদ, রংপুর জেলার সহ-সভাপতি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী সংগঠন নীল দলের যুগ্ম আহ্বায়ক। তিনি সাবেক বিতর্কিত উপাচার্য ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহর সময়ে নিয়োগ পান।
শুভ/সবা


























