০৯:৩৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

১০ দিন পর ফের মিলল কাঁচা পাট রপ্তানির অনুমতি

কাঁচা পাট রপ্তানির জন্য সব প্রক্রিয়া শেষ। এমন সময় সরকারের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত আসে, অনুমতি ছাড়া কাঁচা পাট রপ্তানি করা যাবে না। এতে বন্দরে আটকে থাকা পণ্যের চালান নিয়ে বিপাকে পড়েন রপ্তানিকারকেরা। তবে ওই আদেশ জারির ১০ দিন পর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নতুন এক আদেশে বলা হয়েছে, বন্দরে আটকে থাকা কাঁচা পাট রপ্তানি করা যাবে।

এর আগে গত ৮ সেপ্টেম্বর এক পরিপত্র জারি করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছিল, এখন থেকে কাঁচা পাট রপ্তানি করতে হবে সরকারের অনুমতি নিয়ে। এ পরিপত্র জারির পর রপ্তানির সব ধাপ শেষ করা কাঁচা পাটকেও আটকে দেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। কাঁচা পাট তখন বিপাকে পড়েন রপ্তানিকারকেরা।

ব্যবসায়ীরা বলেন, একটি সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সম্ভাব্য দীর্ঘমেয়াদি ও তাৎক্ষণিক প্রভাবগুলো কী হবে, তা বিবেচনায় না নিয়েই ৮ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপনটি জারি করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আর এ কারণে বন্দরের জরিমানা ও বাড়তি ট্রাকভাড়া দিতে হয়েছে তাদের। প্রায় ৫০ হাজার টনের কাছাকাছি কাঁচা পাটের চালান আটকে ছিল।

রপ্তানিকারকেরা অবশ্য বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের শরণাপন্ন হলে তিনি এতে সাড়া দেন। রপ্তানিকারকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই আজ বৃহস্পতিবার এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানকে চিঠি পাঠিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

চিঠিতে বলা হয়, আগের পরিপত্র অনুযায়ী কাঁচা পাট রপ্তানিতে শর্ত যুক্ত করা হয়েছে। যেসব চালানে কাঁচা পাট রপ্তানির উদ্দেশে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জাহাজীকরণ বা শিপিং বিল দাখিল করা হয়েছে, সেসব চালান উল্লিখিত পরিপত্রের আওতার বাইরে থাকবে।

বাংলাদেশ থেকে কাঁচা পাট রপ্তানি বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএমএ) এবং বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএসএ) যৌথভাবে গত ২৫ আগস্ট বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের কাছে একটি আবেদন করে। এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কাঁচা পাট রপ্তানিতে সরকারের অনুমতির বাধ্যবাধকতা আরোপ করেছিল।

বিজেএসএ সূত্র বলছে, দেশে বছরে ৭৫ থেকে ৮০ লাখ বেল কাঁচা পাট উৎপাদিত হয়। এর মধ্যে পাটপণ্য উৎপাদনের জন্য লাগে ৬০ লাখ বেল। পাট অধিদপ্তর সূত্রের তথ্য, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, চীনসহ ১৩টি দেশে ১৩ লাখ ৪৪ হাজার ৮৩৫ বেল কাঁচা পাট রপ্তানি করা হয়েছে। ওই অর্থবছরে কাঁচা পাট রপ্তানি হয় ১ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা বা ১৬ কোটি ৪ লাখ ৮৭ হাজার মার্কিন ডলারের। এর মধ্যে ৯ কোটি ডলারের বেশি আয় আসে ভারত থেকে।

বিজেএমএ ও বিজেএসএর আবেদনে বলা হয়েছিল, বর্তমানে পাটের ভরা মৌসুমে প্রতি মণ পাটের দাম ৩ হাজার ৮০০ টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা। অথচ আগের বছরগুলোতে প্রতি মণ পাটের দাম ছিল সর্বোচ্চ ৩ হাজার ২০০ টাকা। পাটশিল্পের অন্যতম কাঁচামাল কাঁচা পাট। এই কাঁচা পাটের অভাবে কারখানাগুলো প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত তাদের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে পারে না। মাঝখানে সুযোগ নিচ্ছেন মধ্যস্বত্বভোগীরা।

এমআর/সবা

জনপ্রিয় সংবাদ

১০ দিন পর ফের মিলল কাঁচা পাট রপ্তানির অনুমতি

আপডেট সময় : ০৯:৩২:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

কাঁচা পাট রপ্তানির জন্য সব প্রক্রিয়া শেষ। এমন সময় সরকারের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত আসে, অনুমতি ছাড়া কাঁচা পাট রপ্তানি করা যাবে না। এতে বন্দরে আটকে থাকা পণ্যের চালান নিয়ে বিপাকে পড়েন রপ্তানিকারকেরা। তবে ওই আদেশ জারির ১০ দিন পর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নতুন এক আদেশে বলা হয়েছে, বন্দরে আটকে থাকা কাঁচা পাট রপ্তানি করা যাবে।

এর আগে গত ৮ সেপ্টেম্বর এক পরিপত্র জারি করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছিল, এখন থেকে কাঁচা পাট রপ্তানি করতে হবে সরকারের অনুমতি নিয়ে। এ পরিপত্র জারির পর রপ্তানির সব ধাপ শেষ করা কাঁচা পাটকেও আটকে দেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। কাঁচা পাট তখন বিপাকে পড়েন রপ্তানিকারকেরা।

ব্যবসায়ীরা বলেন, একটি সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সম্ভাব্য দীর্ঘমেয়াদি ও তাৎক্ষণিক প্রভাবগুলো কী হবে, তা বিবেচনায় না নিয়েই ৮ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপনটি জারি করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আর এ কারণে বন্দরের জরিমানা ও বাড়তি ট্রাকভাড়া দিতে হয়েছে তাদের। প্রায় ৫০ হাজার টনের কাছাকাছি কাঁচা পাটের চালান আটকে ছিল।

রপ্তানিকারকেরা অবশ্য বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের শরণাপন্ন হলে তিনি এতে সাড়া দেন। রপ্তানিকারকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই আজ বৃহস্পতিবার এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানকে চিঠি পাঠিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

চিঠিতে বলা হয়, আগের পরিপত্র অনুযায়ী কাঁচা পাট রপ্তানিতে শর্ত যুক্ত করা হয়েছে। যেসব চালানে কাঁচা পাট রপ্তানির উদ্দেশে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জাহাজীকরণ বা শিপিং বিল দাখিল করা হয়েছে, সেসব চালান উল্লিখিত পরিপত্রের আওতার বাইরে থাকবে।

বাংলাদেশ থেকে কাঁচা পাট রপ্তানি বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএমএ) এবং বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএসএ) যৌথভাবে গত ২৫ আগস্ট বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের কাছে একটি আবেদন করে। এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কাঁচা পাট রপ্তানিতে সরকারের অনুমতির বাধ্যবাধকতা আরোপ করেছিল।

বিজেএসএ সূত্র বলছে, দেশে বছরে ৭৫ থেকে ৮০ লাখ বেল কাঁচা পাট উৎপাদিত হয়। এর মধ্যে পাটপণ্য উৎপাদনের জন্য লাগে ৬০ লাখ বেল। পাট অধিদপ্তর সূত্রের তথ্য, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, চীনসহ ১৩টি দেশে ১৩ লাখ ৪৪ হাজার ৮৩৫ বেল কাঁচা পাট রপ্তানি করা হয়েছে। ওই অর্থবছরে কাঁচা পাট রপ্তানি হয় ১ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা বা ১৬ কোটি ৪ লাখ ৮৭ হাজার মার্কিন ডলারের। এর মধ্যে ৯ কোটি ডলারের বেশি আয় আসে ভারত থেকে।

বিজেএমএ ও বিজেএসএর আবেদনে বলা হয়েছিল, বর্তমানে পাটের ভরা মৌসুমে প্রতি মণ পাটের দাম ৩ হাজার ৮০০ টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা। অথচ আগের বছরগুলোতে প্রতি মণ পাটের দাম ছিল সর্বোচ্চ ৩ হাজার ২০০ টাকা। পাটশিল্পের অন্যতম কাঁচামাল কাঁচা পাট। এই কাঁচা পাটের অভাবে কারখানাগুলো প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত তাদের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে পারে না। মাঝখানে সুযোগ নিচ্ছেন মধ্যস্বত্বভোগীরা।

এমআর/সবা