০৪:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৫৮ পাকিস্তানি সেনা হত্যার দাবি আফগানিস্তানের, সীমান্ত বন্ধ

পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ৫৮ পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে আফগান কর্তৃপক্ষ। সংঘর্ষের পর রবিবার (১২ অক্টোবর) আফগানিস্তানের সঙ্গে সীমান্তপথগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানি কর্মকর্তারা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

শনিবার রাতে আফগান সেনারা পাকিস্তানের সীমান্তচৌকিগুলোর দিকে গুলি চালান। আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, এর মাধ্যমে তারা গত সপ্তাহে আফগানিস্তানের ভেতর পাকিস্তানি বিমান হামলার প্রতিশোধ নিয়েছে।

 

পাকিস্তানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা গোলাবর্ষণ ও ভারী অস্ত্র দিয়ে পাল্টা জবাব দিয়েছে। পাকিস্তানি নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের দাবি, পাল্টা হামলায় আফগান সীমান্তের কয়েকটি চৌকি ধ্বংস হয়েছে।

আফগানিস্তান বলেছে, তারা ৫৮ পাকিস্তানি সৈন্যকে হত্যা করেছে, তবে কীভাবে তারা এ সংখ্যাটি জানতে পেরেছে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি। দেশটি আরও জানিয়েছে, তাদের ২০ জন সেনা হতাহত হয়েছে।

পাকিস্তানের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। পাকিস্তানি নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বলেছেন, সংঘর্ষে আফগান বাহিনীরও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে তারা কোনও সংখ্যা উল্লেখ করেননি।

রয়টার্স এসব তথ্য স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি।

 

উভয় দেশই দাবি করেছে যে তারা একে অপরের সীমান্ত চৌকি ধ্বংস করেছে। পাকিস্তানি নিরাপত্তা কর্মকর্তারা ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছেন। তাদের দাবি অনুযায়ী ভিডিওতে আফগান চৌকি লক্ষ্য করে হামলার দৃশ্য দেখা যায়।

পাকিস্তানি নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানান, রবিবার সকালে গোলাগুলি প্রায় থেমে গেছে।

আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এর আগে বলেছিল, তাদের অভিযান স্থানীয় সময় রাত ১২টায় শেষ হয়েছে।

কাবুল জানিয়েছে, তারা কাতার ও সৌদি আরবের অনুরোধে হামলা বন্ধ করেছে। উপসাগরীয় এই দুটি আরব দেশ সংঘর্ষ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছিল।

তালেবান প্রশাসনের মুখপাত্র জবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, আফগানিস্তানের কোনও অংশেই এখন কোনও ধরনের হুমকি নেই।

 

ইসলামাবাদ অভিযোগ করেছে, তালেবান প্রশাসন পাকিস্তানে হামলা চালানো জঙ্গিদের আশ্রয় দিচ্ছে। কাবুল অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

সীমান্ত বন্ধ

স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাতে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানের সঙ্গে পাকিস্তানের প্রধান দুই সীমান্তপথ—তোরখাম ও চামান আজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ছোট তিনটি সীমান্ত পারাপারের পথ—খারলাচি, আঙ্গুর আড্ডা ও গুলাম খান বন্ধ করা হয়েছে।

সীমান্ত বন্ধের বিষয়ে কাবুল তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আগেই জানিয়েছে, তাদের সামরিক অভিযান স্থানীয় সময় শনিবার মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। স্থলবেষ্টিত আফগানিস্তানের সঙ্গে পাকিস্তানের ২,৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে।

পাকিস্তানের বিমান হামলাগুলো ইসলামাবাদ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি। তবে একটি পাকিস্তানি নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবারের ওই হামলার লক্ষ্য ছিল কাবুলে পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর নেতা। তিনি বেঁচে আছেন কি না তা স্পষ্ট নয়।

টিটিপি ইসলামাবাদ সরকারকে উৎখাত করে কঠোর ইসলামি শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করছে। তবে মুজাহিদ অস্বীকার করেন যে, টিটিপি যোদ্ধারা আফগান ভূখণ্ড থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

এমআর/সবা

জনপ্রিয় সংবাদ

শহীদ জিয়ার কবরের পাশে খালেদা জিয়ার দাফনের প্রস্তুতি

৫৮ পাকিস্তানি সেনা হত্যার দাবি আফগানিস্তানের, সীমান্ত বন্ধ

আপডেট সময় : ০৬:০০:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৫

পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ৫৮ পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে আফগান কর্তৃপক্ষ। সংঘর্ষের পর রবিবার (১২ অক্টোবর) আফগানিস্তানের সঙ্গে সীমান্তপথগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানি কর্মকর্তারা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

শনিবার রাতে আফগান সেনারা পাকিস্তানের সীমান্তচৌকিগুলোর দিকে গুলি চালান। আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, এর মাধ্যমে তারা গত সপ্তাহে আফগানিস্তানের ভেতর পাকিস্তানি বিমান হামলার প্রতিশোধ নিয়েছে।

 

পাকিস্তানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা গোলাবর্ষণ ও ভারী অস্ত্র দিয়ে পাল্টা জবাব দিয়েছে। পাকিস্তানি নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের দাবি, পাল্টা হামলায় আফগান সীমান্তের কয়েকটি চৌকি ধ্বংস হয়েছে।

আফগানিস্তান বলেছে, তারা ৫৮ পাকিস্তানি সৈন্যকে হত্যা করেছে, তবে কীভাবে তারা এ সংখ্যাটি জানতে পেরেছে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি। দেশটি আরও জানিয়েছে, তাদের ২০ জন সেনা হতাহত হয়েছে।

পাকিস্তানের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। পাকিস্তানি নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বলেছেন, সংঘর্ষে আফগান বাহিনীরও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে তারা কোনও সংখ্যা উল্লেখ করেননি।

রয়টার্স এসব তথ্য স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি।

 

উভয় দেশই দাবি করেছে যে তারা একে অপরের সীমান্ত চৌকি ধ্বংস করেছে। পাকিস্তানি নিরাপত্তা কর্মকর্তারা ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছেন। তাদের দাবি অনুযায়ী ভিডিওতে আফগান চৌকি লক্ষ্য করে হামলার দৃশ্য দেখা যায়।

পাকিস্তানি নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানান, রবিবার সকালে গোলাগুলি প্রায় থেমে গেছে।

আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এর আগে বলেছিল, তাদের অভিযান স্থানীয় সময় রাত ১২টায় শেষ হয়েছে।

কাবুল জানিয়েছে, তারা কাতার ও সৌদি আরবের অনুরোধে হামলা বন্ধ করেছে। উপসাগরীয় এই দুটি আরব দেশ সংঘর্ষ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছিল।

তালেবান প্রশাসনের মুখপাত্র জবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, আফগানিস্তানের কোনও অংশেই এখন কোনও ধরনের হুমকি নেই।

 

ইসলামাবাদ অভিযোগ করেছে, তালেবান প্রশাসন পাকিস্তানে হামলা চালানো জঙ্গিদের আশ্রয় দিচ্ছে। কাবুল অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

সীমান্ত বন্ধ

স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাতে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানের সঙ্গে পাকিস্তানের প্রধান দুই সীমান্তপথ—তোরখাম ও চামান আজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ছোট তিনটি সীমান্ত পারাপারের পথ—খারলাচি, আঙ্গুর আড্ডা ও গুলাম খান বন্ধ করা হয়েছে।

সীমান্ত বন্ধের বিষয়ে কাবুল তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আগেই জানিয়েছে, তাদের সামরিক অভিযান স্থানীয় সময় শনিবার মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। স্থলবেষ্টিত আফগানিস্তানের সঙ্গে পাকিস্তানের ২,৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে।

পাকিস্তানের বিমান হামলাগুলো ইসলামাবাদ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি। তবে একটি পাকিস্তানি নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবারের ওই হামলার লক্ষ্য ছিল কাবুলে পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর নেতা। তিনি বেঁচে আছেন কি না তা স্পষ্ট নয়।

টিটিপি ইসলামাবাদ সরকারকে উৎখাত করে কঠোর ইসলামি শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করছে। তবে মুজাহিদ অস্বীকার করেন যে, টিটিপি যোদ্ধারা আফগান ভূখণ্ড থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

এমআর/সবা