০৪:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

একজন মাকসুদ কামাল

রুবাইয়া আক্তার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী। তার ঝুলিতে রয়েছে অসংখ্য অর্জন। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অসংখ্য সফলতার গল্প রয়েছে তার। বলছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত ২৯তম ভাইস চ্যান্সেলর এ এস এম মাকসুদ কামালের কথা। চলুন একনজরে জেনে নিই নন্দিত এই ব্যক্তি সম্পর্কে।
অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৯তম ভিসি। ২১ নভেম্বর ১৯৬৬ সালে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার আটিয়াতলিতে তার জন্ম। তার পিতা ফরিদ আহমেদ ও মাতা মাছুমা খাতুন। বাবা-মা দুজনেই ছিলেন সমাজহিতৈষী ও অত্যন্ত বিদ্যানুরাগী ব্যক্তিত্ব। ছোটবেলা থেকেই ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। তার বড়ো ভাই শাহজাহান কামাল বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।
মাকসুদ কামালের শিক্ষাজীবন ছিল বর্ণালি। তিনি কৃতিত্বের সঙ্গে ১৯৮২ সালে এসএসসি ও ১৯৮৪ সালে এইচএসসি পাস করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগ থেকে ১৯৮৮ সালে স্নাতক এবং ১৯৮৯ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। ছাত্রজীবনের সব পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে প্রথম ডিভিশন পেয়ে পাস করেন মাকসুদ কামাল। এরপর তিনি ১৯৯৭ সালে নেদারল্যান্ডসের টোয়েন্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অ্যাপ্লাইড ইঞ্জিনিয়ারিং জিওলজি বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি নেন। এ ছাড়া ২০০৪ সালে জাপানের টোকিও ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে ভূমিকম্পনবিষয়ক প্রকৌশলে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন।
দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জার্নালে তার মোট ৬৫টি বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত প্রবন্ধ, রিপোর্ট, বুক চ্যাপ্টারসহ তার ১০০টির বেশি গবেষণাকর্ম রয়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জার্নালে রিভিইয়ার হিসেবে কাজ করেছন। এমনকি বহু আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গেও তার কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে।
অধ্যাপক মাকসুদ কামালের কর্মজীবনও অত্যন্ত বর্ণাঢ্য এবং সফল। তিনি কর্মজীবনে কাজ করেছেন অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির চার মেয়াদে সভাপতি ছিলেন তিনি, তিন মেয়াদে ছিলেন সাধারণ সম্পাদক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন ২০০০ সালে, ২০১০ সালে হন অধ্যাপক। ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠিত দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন মাকসুদ কামাল। দায়িত্ব পালন করেছেন আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অনুষদের ডিন হিসেবেও।
নন্দিত এই ব্যক্তি মাস্টারদা সূর্যসেন হলের প্রাধ্যক্ষ ছিলেন দুই মেয়াদে, ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট ও সিনেট সদস্যও। এ ছাড়া এই প্রথিতযশা ব্যক্তি মাকসুদ কামাল তিন মেয়াদে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি এবং মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। দায়িত ¡পালনকালে কাজ করেছেন শিক্ষার মান উন্নয়নে, শিক্ষকদের পেশাদারি ও মর্যাদা রক্ষায় ভূমিকা রেখেছেন। মাকসুদ কামালের নেতৃত্বের গুণাবলি প্রকাশ পায় ছাত্রজীবন থেকেই, অদ্যাবধি কাজ করে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীদের এবং শিক্ষদের জন্য। বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনে তার ভূমিকা চোখে পড়ার মতোই উল্লেখযোগ্য।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব শিক্ষার মান উন্নয়ন প্রভৃতি নিয়ে নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।
সর্বশেষ ১৫ অক্টোবর ২০২৩ সালে অধ্যাপক মাকসুদ কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৯তম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন। ৪ নভেম্বর ২০২৩-এ আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণের কথা রয়েছে তার। এর আগে ২০২০ সাল থেকে সহ-উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তিনি।

জনপ্রিয় সংবাদ

একজন মাকসুদ কামাল

আপডেট সময় : ০৭:২৩:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৩

রুবাইয়া আক্তার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী। তার ঝুলিতে রয়েছে অসংখ্য অর্জন। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অসংখ্য সফলতার গল্প রয়েছে তার। বলছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত ২৯তম ভাইস চ্যান্সেলর এ এস এম মাকসুদ কামালের কথা। চলুন একনজরে জেনে নিই নন্দিত এই ব্যক্তি সম্পর্কে।
অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৯তম ভিসি। ২১ নভেম্বর ১৯৬৬ সালে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার আটিয়াতলিতে তার জন্ম। তার পিতা ফরিদ আহমেদ ও মাতা মাছুমা খাতুন। বাবা-মা দুজনেই ছিলেন সমাজহিতৈষী ও অত্যন্ত বিদ্যানুরাগী ব্যক্তিত্ব। ছোটবেলা থেকেই ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। তার বড়ো ভাই শাহজাহান কামাল বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।
মাকসুদ কামালের শিক্ষাজীবন ছিল বর্ণালি। তিনি কৃতিত্বের সঙ্গে ১৯৮২ সালে এসএসসি ও ১৯৮৪ সালে এইচএসসি পাস করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগ থেকে ১৯৮৮ সালে স্নাতক এবং ১৯৮৯ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। ছাত্রজীবনের সব পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে প্রথম ডিভিশন পেয়ে পাস করেন মাকসুদ কামাল। এরপর তিনি ১৯৯৭ সালে নেদারল্যান্ডসের টোয়েন্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অ্যাপ্লাইড ইঞ্জিনিয়ারিং জিওলজি বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি নেন। এ ছাড়া ২০০৪ সালে জাপানের টোকিও ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে ভূমিকম্পনবিষয়ক প্রকৌশলে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন।
দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জার্নালে তার মোট ৬৫টি বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত প্রবন্ধ, রিপোর্ট, বুক চ্যাপ্টারসহ তার ১০০টির বেশি গবেষণাকর্ম রয়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জার্নালে রিভিইয়ার হিসেবে কাজ করেছন। এমনকি বহু আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গেও তার কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে।
অধ্যাপক মাকসুদ কামালের কর্মজীবনও অত্যন্ত বর্ণাঢ্য এবং সফল। তিনি কর্মজীবনে কাজ করেছেন অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির চার মেয়াদে সভাপতি ছিলেন তিনি, তিন মেয়াদে ছিলেন সাধারণ সম্পাদক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন ২০০০ সালে, ২০১০ সালে হন অধ্যাপক। ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠিত দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন মাকসুদ কামাল। দায়িত্ব পালন করেছেন আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অনুষদের ডিন হিসেবেও।
নন্দিত এই ব্যক্তি মাস্টারদা সূর্যসেন হলের প্রাধ্যক্ষ ছিলেন দুই মেয়াদে, ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট ও সিনেট সদস্যও। এ ছাড়া এই প্রথিতযশা ব্যক্তি মাকসুদ কামাল তিন মেয়াদে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি এবং মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। দায়িত ¡পালনকালে কাজ করেছেন শিক্ষার মান উন্নয়নে, শিক্ষকদের পেশাদারি ও মর্যাদা রক্ষায় ভূমিকা রেখেছেন। মাকসুদ কামালের নেতৃত্বের গুণাবলি প্রকাশ পায় ছাত্রজীবন থেকেই, অদ্যাবধি কাজ করে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীদের এবং শিক্ষদের জন্য। বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনে তার ভূমিকা চোখে পড়ার মতোই উল্লেখযোগ্য।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব শিক্ষার মান উন্নয়ন প্রভৃতি নিয়ে নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।
সর্বশেষ ১৫ অক্টোবর ২০২৩ সালে অধ্যাপক মাকসুদ কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৯তম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন। ৪ নভেম্বর ২০২৩-এ আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণের কথা রয়েছে তার। এর আগে ২০২০ সাল থেকে সহ-উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তিনি।