সন্তানদের বিয়ে দিতে চরম সমস্যার মুখে পড়তে হয় মরা ঘাঘট নদীর দ্বীপে বসবাসকারী একাধিক পরিবারের। রাস্তাঘাট না থাকা, বিশাল খাল পারাপারের ঝুঁকি, এবং যোগাযোগের অপ্রতুলতা তাদের জীবনকে কঠিন করে তুলেছে।
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের জয়েনপুর-পুরান লক্ষ্মীপুর এলাকায় দেখা যায়, বকশীরদহর পানির ওপর দিয়ে ড্রামের ভেলায় ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে নারী-পুরুষ ও শিক্ষার্থীরা। ভেলায় ওপারে পৌঁছে আবার অন্যের জমির আইল দিয়ে হাঁটতে হয় প্রধান সড়কে ওঠার জন্য। আধুনিক যুগের যুব সমাজ অনেক সময় এই চরের সন্তানদের সঙ্গে বিয়ে করতে নারাজ। যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় অনেক বিয়ে ভেঙে যায়, ফলে ছেলে-মেয়েদের বিয়ে দিতে পরিবারের চরম কষ্ট পেতে হয়।
দ্বীপচরের বাসিন্দারা জানান, এক সময় ঘাঘট নদী এ এলাকার পাশ দিয়ে বয়ে যেত। নদীর গতিপথ পরিবর্তনের ফলে এখন বকশীরদহ নামে একটি মরা নদী সৃষ্টি হয়েছে। এখানে বসবাসকারী পরিবারগুলো দীর্ঘদিন ধরে রাস্তা ও সেতু ছাড়া চলাচল করছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও অন্যান্য প্রয়োজন মেটাতে প্রতিদিন ড্রামের ভেলায় চলাচল করতে হয়। বর্ষার মৌসুমে বাঁশের সাঁকো বা ভেলায় পারাপার করতে গিয়ে জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়তে হয়।
ভুক্তভোগী আসলাম হোসেন বলেন, “শুধু সেতু নয়, রাস্তা-ঘাটও নেই। ভেলায় ওপারে পৌঁছে অন্যের জমির আইল দিয়ে হাঁটতে হয়। আমরা সেতু ও রাস্তা নির্মাণের দাবি জানাই।”
দ্বীপচরের রবিউল ইসলাম বলেন, “প্রতিনিয়ত ড্রামের ভেলায় চলাচল করতে হয়। দীর্ঘযুগ ধরে আমরা এই ভোগান্তির মধ্যে রয়েছি। জনপ্রতিনিধিদের জানানো হলেও সুফল পাইনি।”
জয়েনপুর গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেন জানান, বকশীরদহ খালের ওপারে শতাধিক হেক্টর কৃষিজমি রয়েছে। শাক-সবজি ও ধানসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করা হয়, যা পরিবহন করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য। কখনো কখনো উৎপাদন ব্যাহত হয়।
বনগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফজলুল কাইয়ুম হুদা বলেন, “দ্বীপচরের মানুষের দুর্ভোগের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।”
এমআর/সবা























