০৯:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পিসিপি ঢাকা মহানগর শাখার ৩২তম কাউন্সিল সভাপতি কনেজ চাকমা, সাধারণ সম্পাদক হ্লামংচিং মারমা

সকল প্রকার ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে বৃহত্তর আন্দোলনে জুম্ম ছাত্র সমাজ অধিকতর সামিল হউন” এই স্লোগানকে সামনে রেখে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), ঢাকা মহানগর শাখার “বার্ষিক শাখা সম্মেলন ও ৩২তম কাউন্সিল–২০২৫” আজ শনিবার বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি)’র মুনীর চৌধুরী হলে অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় স্টাফ সদস্য অনন্ত বিকাশ ধামাই। প্রধান বক্তা ছিলেন পিসিপির কেন্দ্রীয় সভাপতি রুমেন চাকমা এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন, ঢাকা মহানগর কমিটির সভাপতি চন্দ্রিকা চাকমা।

কাউন্সিল অধিবেশন পরিচালনা করেন বিদায়ী কমিটির সভাপতি জগদীশ চাকমা ও সাধারণ সম্পাদক সৈসানু মারমা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিদায়ী কমিটির তথ্য, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক কনেজ চাকমা এবং সাংগঠনিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সাংগঠনিক সম্পাদক হ্লামংচিং মারমা। এছাড়াও ঢাকা মহানগরের অন্তর্গত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, মিরপুর থানা ও ঢাকা পলিটেকনিক শাখার প্রতিনিধিরা বক্তব্য প্রদান করেন।

প্রধান অতিথি অনন্ত বিকাশ ধামাই বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রামে দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলো আজও বাস্তবায়ন হয়নি। পাহাড়ে ধর্মান্তর প্রক্রিয়া ও সেনাশাসন অব্যাহত রয়েছে। জুম্ম জনগণের অস্তিত্ব রক্ষায় এবং আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠায় আমাদের আরও শক্তিশালী আন্দোলনে নামতে হবে।”

প্রধান বক্তা রুমেন চাকমা বলেন, “দেশে মৌলবাদের কালো ছায়া নেমে এসেছে। একদিকে নির্বাচনের ডামাঢোল, অন্যদিকে পাহাড়ে সামরিক অভিযান— যা এক দেশে দুই নীতিরই প্রতিফলন। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিকে অকার্যকর করার জন্য রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় বিভিন্ন ষড়যন্ত্র চলছে। এই অবস্থায় জুম্ম ছাত্র সমাজকে প্রগতিশীল চিন্তা ও রাজনৈতিক চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে বৃহত্তর আন্দোলনে অংশ নিতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “দক্ষতা, যোগ্যতা ও বাস্তবতাকে প্রাধান্য দিয়ে নতুন নেতৃত্ব গঠন করা হচ্ছে, যাতে তারা পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারে। সংগঠনের কর্মীদের রাজনৈতিক, সাংগঠনিক ও মতাদর্শগত সংগ্রামের মধ্য দিয়েই প্রগতিশীল হিসেবে গড়ে উঠতে হবে।”

বিশেষ অতিথি চন্দ্রিকা চাকমা বলেন, “পিসিপি শুধু একটি সংগঠনের নাম নয়, এটি জুম্ম তারুণ্যের সংগ্রাম ও প্রতিবাদের কণ্ঠস্বর। জুম্ম জনগণের উপর নির্যাতন ও আদিবাসী নারী ধর্ষণ বন্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ছাড়া মুক্তির পথ নেই।”

নবনির্বাচিত সভাপতি কনেজ চাকমা বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ দীর্ঘকাল ধরে বিজাতীয় শাসনের যাঁতাকলে পিষ্ট। জুম্ম তরুণ সমাজ অতীতেও জাতিকে দিশা দেখিয়েছে। আজও সেই ঐতিহাসিক দায়িত্ব আমাদের কাঁধে নিতে হবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

পিসিপি ঢাকা মহানগর শাখার ৩২তম কাউন্সিল সভাপতি কনেজ চাকমা, সাধারণ সম্পাদক হ্লামংচিং মারমা

আপডেট সময় : ০৯:১৮:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ নভেম্বর ২০২৫

সকল প্রকার ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে বৃহত্তর আন্দোলনে জুম্ম ছাত্র সমাজ অধিকতর সামিল হউন” এই স্লোগানকে সামনে রেখে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), ঢাকা মহানগর শাখার “বার্ষিক শাখা সম্মেলন ও ৩২তম কাউন্সিল–২০২৫” আজ শনিবার বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি)’র মুনীর চৌধুরী হলে অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় স্টাফ সদস্য অনন্ত বিকাশ ধামাই। প্রধান বক্তা ছিলেন পিসিপির কেন্দ্রীয় সভাপতি রুমেন চাকমা এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন, ঢাকা মহানগর কমিটির সভাপতি চন্দ্রিকা চাকমা।

কাউন্সিল অধিবেশন পরিচালনা করেন বিদায়ী কমিটির সভাপতি জগদীশ চাকমা ও সাধারণ সম্পাদক সৈসানু মারমা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিদায়ী কমিটির তথ্য, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক কনেজ চাকমা এবং সাংগঠনিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সাংগঠনিক সম্পাদক হ্লামংচিং মারমা। এছাড়াও ঢাকা মহানগরের অন্তর্গত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, মিরপুর থানা ও ঢাকা পলিটেকনিক শাখার প্রতিনিধিরা বক্তব্য প্রদান করেন।

প্রধান অতিথি অনন্ত বিকাশ ধামাই বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রামে দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলো আজও বাস্তবায়ন হয়নি। পাহাড়ে ধর্মান্তর প্রক্রিয়া ও সেনাশাসন অব্যাহত রয়েছে। জুম্ম জনগণের অস্তিত্ব রক্ষায় এবং আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠায় আমাদের আরও শক্তিশালী আন্দোলনে নামতে হবে।”

প্রধান বক্তা রুমেন চাকমা বলেন, “দেশে মৌলবাদের কালো ছায়া নেমে এসেছে। একদিকে নির্বাচনের ডামাঢোল, অন্যদিকে পাহাড়ে সামরিক অভিযান— যা এক দেশে দুই নীতিরই প্রতিফলন। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিকে অকার্যকর করার জন্য রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় বিভিন্ন ষড়যন্ত্র চলছে। এই অবস্থায় জুম্ম ছাত্র সমাজকে প্রগতিশীল চিন্তা ও রাজনৈতিক চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে বৃহত্তর আন্দোলনে অংশ নিতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “দক্ষতা, যোগ্যতা ও বাস্তবতাকে প্রাধান্য দিয়ে নতুন নেতৃত্ব গঠন করা হচ্ছে, যাতে তারা পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারে। সংগঠনের কর্মীদের রাজনৈতিক, সাংগঠনিক ও মতাদর্শগত সংগ্রামের মধ্য দিয়েই প্রগতিশীল হিসেবে গড়ে উঠতে হবে।”

বিশেষ অতিথি চন্দ্রিকা চাকমা বলেন, “পিসিপি শুধু একটি সংগঠনের নাম নয়, এটি জুম্ম তারুণ্যের সংগ্রাম ও প্রতিবাদের কণ্ঠস্বর। জুম্ম জনগণের উপর নির্যাতন ও আদিবাসী নারী ধর্ষণ বন্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ছাড়া মুক্তির পথ নেই।”

নবনির্বাচিত সভাপতি কনেজ চাকমা বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ দীর্ঘকাল ধরে বিজাতীয় শাসনের যাঁতাকলে পিষ্ট। জুম্ম তরুণ সমাজ অতীতেও জাতিকে দিশা দেখিয়েছে। আজও সেই ঐতিহাসিক দায়িত্ব আমাদের কাঁধে নিতে হবে।