চট্টগ্রামে প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় ২৯ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এবি ব্যাংকের এক নারী কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতের নাম অনামিকা দত্ত (৩২)।
বুধবার (১২ নভেম্বর) রাতে নগরের কোতোয়ালী থানাধীন নিউ মার্কেট এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। অনামিকা দত্ত সদরঘাট থানার উত্তর নালাপাড়ার বাসিন্দা সুহৃদ বরণ দত্তের মেয়ে। তিনি এবি ব্যাংকের জুবলি রোড শাখায় কর্মরত ছিলেন।
এর আগে গত ১০ নভেম্বর প্রতারণার অভিযোগে দেবীকা চৌধুরী কোতোয়ালী থানায় মামলা করেন। মামলায় অনামিকা দত্ত, তাঁর পিতা সুহৃদ বরণ দত্ত এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১-২ জনকে আসামি করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শেখ তারিকুল ইসলাম জানান, “প্রতারণার মাধ্যমে ২৮ লাখ ৭৯ হাজার ৮৮৫ টাকা আত্মসাতের মামলায় বুধবার রাতে অনামিকা দত্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) আদালতে পাঠানো হয়েছে। ব্যাংক থেকে কিভাবে টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে, তা তদন্ত চলছে।”
মামলার এজাহারে বলা হয়, দেবীকা চৌধুরী পরিবার নিয়ে পটিয়ায় বসবাস করেন এবং নিয়মিত এবি ব্যাংক স্টেশন রোড শাখায় লেনদেন করতেন। ব্যাংক কর্মকর্তা অনামিকা দত্ত তাঁর সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে আস্থা অর্জন করেন। একপর্যায়ে তিনি দেবীকাকে জানান, ব্যাংকটি দেউলিয়া হতে পারে— তাই তাঁর নামীয় এফডিআর ভেঙে ফেলা উচিত।
গত ৫ অক্টোবর অনামিকা দত্ত এবি ব্যাংক আন্দরকিল্লা শাখায় অভিযোগকারীর নামে থাকা এফডিআর হিসাব থেকে তাঁর নিজস্ব ব্যাংক হিসাবে ১৪ লাখ ৭৯ হাজার ৮৮৫ টাকা স্থানান্তর করেন। একই কৌশলে ৭ অক্টোবর জুবলি রোড শাখা থেকে আরও ১৪ লাখ টাকা নিজের হিসাবে স্থানান্তর করা হয়।
মোট ২৮ লাখ ৭৯ হাজার ৮৮৫ টাকা স্থানান্তরের পর দেবীকা চৌধুরী বুঝতে পারেন, তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। বিষয়টি স্বামীকে জানানোর পর স্বামীর মাধ্যমে অনামিকার কাছে টাকা ফেরতের অনুরোধ জানানো হয়, তবে নানা অজুহাতে টাকা ফেরত দেওয়া হয়নি।
অভিযোগে বলা হয়, অনামিকা দত্ত ও তাঁর পিতা সুহৃদ বরণ দত্তসহ আরও কয়েকজনের সহায়তায় দেবীকার ব্যাংক হিসাব থেকে এই টাকা স্থানান্তর করা হয়েছে।
এবি ব্যাংকের চট্টগ্রাম জোনাল কর্মকর্তা মো. দিদারুল আলম বলেন, “অনামিকা দত্ত আমাদের স্থায়ী কর্মকর্তা নন। টাকা লেনদেনের ঘটনাটি তাঁর আত্মীয়ের সঙ্গে ঘটেছে।”
তবে মামলার বাদী দেবীকা চৌধুরী এ দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, “অনামিকা দত্ত আমার আত্মীয় নন। আমি চৌধুরী, তিনি দত্ত— আমাদের মধ্যে কোনো আত্মীয়তা নেই। এবি ব্যাংক জুবলি রোড শাখায় পরিচয় হয়েছিল। ব্যাংকে গেলে তিনি নানা ধরনের সহযোগিতা করতেন। কিন্তু এভাবে প্রতারণা করবেন, তা বুঝতে পারিনি।”
এমআর/সবা






















