- দুই থেকে তিন দিনের মধ্যেই জানা যাবে তফসিলের ঘোষণার তারিখ
- একইসঙ্গে গণভোট ও সংসদ নির্বাচন আয়োজনের উদ্যোগ
দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে নির্বাচনের তফসিল কবে হবে তা ঘোষণা করবো। তবে নির্বাচনের তারিখ নয়- আব্দুর রহমানেল মাছউদ, নির্বাচন কমিশনার
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন একইসঙ্গে সংবিধান সংশোধনে গণভোট আয়োজনে অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশ বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে প্রণয়ন করা হয়েছে একটি পৃথক আইনের খসড়াও। একই দিনে গণভোট ও সংসদ নির্বাচন হলে পোলিং বুথের সংখ্যা ও ভোট প্রদানের সময় বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে ইসি। সে অনুযায়ী ইসির প্রস্তুতিও আছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটের প্রস্তুতিমূলক কাজগুলো প্রায় সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এখন ভোট আয়োজনের চূড়ান্ত পদক্ষেপ নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি। আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যেই জানা যেতে পারে নির্বাচনি তফসিলের ঘোষণা কবে আসতে পারে তার সম্ভাব্য তারিখ।
তফসিল কবে ঘোষণা হতে পারে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেন, ‘আমরা দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে নির্বাচনের তফসিল কবে হবে তা ঘোষণা করবো। তবে নির্বাচনের তারিখ নয়। তফসিল ঘোষণার দুই থেকে সাত দিন আগে আমরা ধারণা দিতে পারি যে কবে তফসিল ঘোষণা হবে। তফসিল ঘোষণার কতদিনের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করার নিয়ম জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটা সাধারণ ফেনামেনান হলো তফসিল ঘোষণার ৬০ দিন ‘মোর অর লেসের’ মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার। তবে এরকম কোনও আইনি বাধ্যবাধকতা নেই। তবে আমরা হয়তো যাচাই-বাছাইয়ের জন্য কয়েক দিন বাড়িয়ে দিয়েছি। বেশি সময় দেওয়া যাবে না। রিজনেবল সময় দিতে হবে। এদিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন একইসঙ্গে গণভোট আয়োজনেরও ঘোষণা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট করা ইসির জন্য চ্যালেঞ্জিং। গণভোটের প্রস্তুতি নিতে অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছে। একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট করার এমন মুখোমুখি পরিস্থিতিতে পূর্ববর্তী নির্বাচন কমিশন কখনও পড়েনি। সিইসি বলেন, ‘আগের নির্বাচন কমিশনকে এতটা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়নি, যা বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে মোকাবিলা করতে হচ্ছে। কারণ আইন মেনেই সব প্রক্রিয়া হচ্ছে। আমাদের দ্বিতীয় কোনও অপশন নেই। গণভোট প্রসঙ্গে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ‘আইন না হওয়া পর্যন্ত কমিশন এ বিষয়ে কাজ করতে পারবে না। আগামী সপ্তাহেই গণভোট আইনটি পাস করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আইন পাস হলে, সেই আইন অনুযায়ী কমিশন প্রস্তুতি ও সিদ্ধান্ত নেওয়া শুরু করবে। গণভোট হলে চারটি পয়েন্টেই হ্যাঁ/না ভোট হবে। এদিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একদিনে আয়োজন করতে ইসিকে সরকারের চিঠির বিষয়ে ইসি কী প্রস্তুতি নিচ্ছে জানতে চাইলে (ইসি) আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেন, ‘আমাদের আগে এমপাওয়ারড করতে হবে, অতীতে তা করা হয়েছে। ইসিকে একটা আইনের মাধ্যমে এমপাওয়ারড করা টু কনডাক্ট দ্য রেফারেন্ডাম। আনলেস আই এম এমপাওয়ারড হাউ মে আই কন্ডাক্ট দ্য রেফারেন্ডাম। এটার একটা আইন করা উচিত বলে মনে করি। তিনি বলেন, ‘এই আইনটা করা হচ্ছে এবং শিগগিরই সেটা প্রকাশ করা হবে। যত দ্রুত সম্ভব এই আইন সরকার করতে যাচ্ছে। গণভোট আইন অতীতেও ছিল। গণভোট আইন ১৯৯১ সালে ছিল, তারও আগের গণভোটগুলোর জন্য আইন করা হয়েছে। আইন হয়ে গেলে আমরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোট করবো। গণভোট একই দিনে হবে, একই প্রিজাইডিং অফিসারের অধীনে হবে। হয়তো বুথের সংখ্যা বাড়িয়ে দিতে পারি। যদি সম্ভব হয় ভোটগ্রহণের সময়টা বাড়ানো হতে পারে। যাতে ভোটাররা গণভোট দিতে আরেকটু সময় পান। এদিকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য গণভোটের নিবন্ধন কীভাবে হবে জানতে চাইলে ইসির অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ বলেন, ‘প্রবাসীদের কত নিবন্ধন হচ্ছে তার লাইভ ডেটা আমরা প্রকাশ করছি পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপের মাধ্যমে। এই অ্যাপের মাধ্যমেই প্রবাসীরা গণভোটের জন্য নিবন্ধন করতে পারবেন। পরে ডাকযোগে আমরা ব্যালট পেপারটি পাঠিয়ে দেবো। গণভোটের কারণে ব্যালট সংখ্যা বাড়লে ডাকে ব্যালট পাঠাতে খরচ বাড়বে কিনা জানতে চাইলে ইসির অতিরিক্ত এই সচিব বলেন, ‘খুবই নমিনাল এটা। আমার মনে হয় না খরচটা বাড়বে।’ নির্বাচনের আগে হলফনামায় ভুল তথ্য দেওয়া প্রসঙ্গে রহমানেল মাছউদ বলেন, ‘নির্বাচনের আগে হলফনামায় ভুল তথ্য দিলে ভোটের পরও ওই সংসদ সদস্যের পদ বাতিল হতে পারে। সংবিধানের ৬৬-তে বলা আছে, নির্বাচনের পর যদি কোনও সংসদ সদস্য অযোগ্য বলে প্রতীয়মান হয়, তখন ইসি তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। এই আলোকে আমরা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে একটা নতুন ধারা যোগ করেছি, ১২-এর ৮-এ। এটিতে বলা হয়েছে, ইসি স্ব-উদ্যোগে বা কোনও অভিযোগ উত্থাপিত হলে ব্যবস্থা নেবে। প্রার্থীর অঙ্গীরনামায় গণ্ডগোল থাকলেও তা ধরা হবে।’ এ সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপতথ্য রোধে ইসির সক্ষমতা আছে কিনা জানতে চাইলে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আরপিওর ৭৩-এ এই সংক্রান্ত একটি ধারা আছে। কেউ যদি এআই ব্যবহার করে অপতথ্য বা ফেক নিউজ করে তাহলে শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
























