নীলফামারীতে চলছে সোনালী আমন ধান কাটাই–মাড়াইয়ের ব্যস্ততম মৌসুম। ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাঠজুড়ে কৃষক–কিষাণীদের ঘাম ঝরানো শ্রম উৎসব। কেউ কাঁচি দিয়ে ধান কাটছেন, কেউ ধানের বোঝা মাথায় করে ফিরছেন ঘরে। নতুন ধানের সুবাসে প্রকম্পিত গ্রামবাংলা যেন নবান্ন উৎসবের রঙে রঙিন।
কৃষকের ঘরে-ঘরে চলছে নতুন ধানের চাল তৈরির প্রস্তুতি, উঠোনজুড়ে ধান সিদ্ধ–শুকানোর কর্মব্যস্ততা। চারদিকে উৎসবের আমেজ, নতুন ভাত আর পিঠা-পুলির গন্ধে মুখরিত এলাকা।
নীলফামারী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ২২০ হেক্টর, উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৬৭ হাজার ৯২০ টন চাল। তবে এবার চাষ হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে। অনুকূল আবহাওয়ার কারণে উৎপাদনও প্রত্যাশার ওপরে—ফলে কৃষকের মাঠ ও মন দুটোই ভরে উঠেছে।

সদরের চড়াইখোলা ইউনিয়নের কৃষক সিরাজুল ইসলাম জানান, “গত বছরের তুলনায় এবার আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। বিঘা প্রতি ৭–৮ মণ করে বেশি ধান পেয়েছি। কীটনাশক আর সার একটু বেশি দামে কিনতে হলেও সময়মতো প্রয়োগ করায় ভালো ফলন পেয়েছি। এখন ধান কেটে গোলায় ভরতে ব্যস্ত সময় পার করছি। নতুন ধানের ভাত খাওয়ার জন্য পরিবার মিলে ধান সিদ্ধ করছি।”
ইটাখোলা ইউনিয়নের চাষী টিটুল মিয়া বলেন, “মাথার ঘাম পায়ে ফেলে সোনালী ফসল ঘরে তুলছি। সঙ্গে চলছে নবান্ন উৎসব—নতুন চালের পিঠা-পুলি বানাতে সন্ধ্যা নামলেই ঘরে ঘরে চলে আনন্দের ঢেউ।”

নীলফামারী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মনজুর রহমান জানান, “এখন পুরো জেলায় ধান কাটাই–মাড়াইয়ের ধুম। ঘরে-ঘরে নতুন ধানের পিঠা-পুলি তৈরির আনন্দ চলছে। অনুকূল আবহাওয়া ও পরিচর্যার কারণে উৎপাদন ভালো হওয়ায় কৃষকের মধ্যে আনন্দের জোয়ার।”
এমআর/সবা
























