গর্ব, শ্রদ্ধা আর গভীর দেশপ্রেমের আবহে পঞ্চগড়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হলো পঞ্চগড় মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত এ দিনে—২৯ নভেম্বর—হানাদারমুক্ত হয় পঞ্চগড় জেলা। এই ঐতিহাসিক দিনটি উপলক্ষে আজ শনিবার (২৯ নভেম্বর) সকালে নানা কর্মসূচির আয়োজন করে জেলা প্রশাসন।
দিনের শুরুতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সংলগ্ন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান জেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড, বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণে মোনাজাত করা হয়।
পরে সেখান থেকে বের করা হয় একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে ১৯৭১ সালের নির্মম হত্যাযজ্ঞের সাক্ষী বধ্যভূমিতে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে আরও একবার শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
এরপর জেলা প্রশাসক কাজী মো. সায়েমুজ্জান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন—বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা সায়খুল ইসলাম, সিভিল সার্জন ডা. মিজানুর রহমান বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ফজলে রাব্বানী।
বক্তারা বলেন, দেশের বেশিরভাগ অঞ্চল ২৫ মার্চ রাত থেকেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দখলে গেলেও পঞ্চগড় ছিল ব্যতিক্রম। দীর্ঘ ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত পঞ্চগড় শত্রুমুক্ত ছিল। ওই দিন পাকবাহিনী জেলার চারটি উপজেলা দখল করতে সক্ষম হলেও পুরো যুদ্ধকালীন সময়েই তেঁতুলিয়া ছিল সম্পূর্ণ মুক্ত অঞ্চল, যেখানে মুক্তিযোদ্ধারা নিরাপদ আশ্রয় নিয়ে সংগঠিত হন।
বক্তারা আরও স্মরণ করেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় পঞ্চগড়ে হানাদার বাহিনী চালায় ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ—হত্যা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও নারীদের ওপর অকথ্য নির্যাতনের ঘটনাও ঘটে। অবশেষে ২৯ নভেম্বর মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর যৌথ আক্রমণে পাকবাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয় এবং পঞ্চগড় শত্রুমুক্ত হয়।
মুক্ত দিবসের এ আয়োজনে শহরের সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করে বীর শহীদদের আত্মত্যাগ স্মরণ করে।
এমআর/সবা
























