০১:২২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গঙ্গাচড়ায় কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন, সন্তুষ্ট কৃষকরা

রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলায় কৃষিতে এসেছে আমূল পরিবর্তন। উপজেলা কৃষি অফিসার শাহিনুর রহমান দায়িত্ব নেওয়ার পর মাঠপর্যায়ে তার ঘনিষ্ঠ তদারকি, কৃষকবান্ধব মনোভাব ও কার্যকর ব্যবস্থাপনায় কৃষি উৎপাদন ও সেবা খাতে দেখা দিয়েছে ইতিবাচক অগ্রগতি। তার কর্মকাণ্ডে আস্থা ফিরেছে এলাকার কৃষকদের মাঝে।

২০২৪ সালের ২৮ মার্চ দায়িত্ব গ্রহণের পরই তিনি মাঠে-মাঠে ঘুরে কৃষকের সমস্যা ও প্রয়োজনীয়তা চিহ্নিত করে সমাধানে কাজ করেছেন। চলতি মৌসুমে আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৯ হাজার ৩৫০ হেক্টর, অর্জিত হয়েছে ১৯ হাজার ৩৫৫ হেক্টর—লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি চাষ হয়েছে। সবজি ও অন্যান্য ফসলেও দেখা গেছে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি।

গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উৎপাদন, মাশরুম চাষ সম্প্রসারণ, উদ্যোক্তা তৈরি এবং স্থানীয়ভাবে লাগসই প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে মাঠে প্রয়োগ—এসব উদ্যোগ উপজেলা পর্যায়ে প্রশংসা কুড়িয়েছে। একই সঙ্গে সার–বাজার স্থিতিশীল রাখতে মজুতসহ অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রশাসন, কৃষি বিভাগ ও ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের যৌথ অভিযানে গত কয়েক মাসে ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। কৃষকের সুবিধার্থে চারজন ডিলারের পয়েন্টও পরিবর্তন করা হয়েছে।

নিয়মিত মাঠে ঘুরে ফসলের রোগবালাই শনাক্ত, সার ব্যবস্থাপনা, আধুনিক বীজ বপন কৌশল, কীটনাশক দোকান তদারকি, প্রণোদনার তালিকা যাচাই এবং তামাকের বিকল্প ফসল চাষে উদ্বুদ্ধ করাসহ নানা উদ্যোগে কৃষকদের কাছে আস্থার জায়গা তৈরি হয়েছে। ইফনাপ প্রকল্পের মাধ্যমে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে জৈব সার উৎপাদনে দক্ষ করে তোলা হচ্ছে, যা কৃষকরা ইতোমধ্যেই ব্যবহার করছেন।

চরাঞ্চলে তামাকের জায়গা দখল করছে স্যান্ডবার পদ্ধতির মিষ্টি কুমড়া, মালচিং পদ্ধতির সবজি, মরিচ, হলুদ, ডাল, মসলাসহ নানান নতুন ফসল। এতে কৃষকদের ফসল উৎপাদন বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে।

বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকরা বলেন—আগে সারের জন্য দৌড়াদৌড়ি করতে হতো, এখন আর হয় না। প্রণোদনা বণ্টনে এসেছে স্বচ্ছতা। ফসলে রোগ দেখা দিলে ফোন দিলেই কৃষি অফিসার এসে হাজির। এ বছর সবজির উৎপাদন দ্বিগুণ। “সময়মতো সার–বীজ পাওয়ায় আমনের ফলন ভালো হয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার শাহিনুর রহমান জানান, গঙ্গাচড়া উপজেলার কৃষকদের পাশে থেকে পরামর্শ ও সেবা দেওয়াই তার লক্ষ্য। চরাঞ্চল প্রকল্পের আওতায় ১১ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে ফসলের বৈচিত্র্য এসেছে। পাশাপাশি সার, বীজ, কীটনাশকসহ কৃষি উপকরণ ন্যায্যমূল্যে কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে কাজ করা হচ্ছে। তার নেতৃত্বে উপজেলায় গড়ে উঠেছে সুশৃঙ্খল, আধুনিক ও কৃষকবান্ধব কৃষি সেবা ব্যবস্থা।

এমআর/সবা

জনপ্রিয় সংবাদ

সপরিবারে হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছেছেন তারেক রহমান

গঙ্গাচড়ায় কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন, সন্তুষ্ট কৃষকরা

আপডেট সময় : ০৪:২৩:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৫

রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলায় কৃষিতে এসেছে আমূল পরিবর্তন। উপজেলা কৃষি অফিসার শাহিনুর রহমান দায়িত্ব নেওয়ার পর মাঠপর্যায়ে তার ঘনিষ্ঠ তদারকি, কৃষকবান্ধব মনোভাব ও কার্যকর ব্যবস্থাপনায় কৃষি উৎপাদন ও সেবা খাতে দেখা দিয়েছে ইতিবাচক অগ্রগতি। তার কর্মকাণ্ডে আস্থা ফিরেছে এলাকার কৃষকদের মাঝে।

২০২৪ সালের ২৮ মার্চ দায়িত্ব গ্রহণের পরই তিনি মাঠে-মাঠে ঘুরে কৃষকের সমস্যা ও প্রয়োজনীয়তা চিহ্নিত করে সমাধানে কাজ করেছেন। চলতি মৌসুমে আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৯ হাজার ৩৫০ হেক্টর, অর্জিত হয়েছে ১৯ হাজার ৩৫৫ হেক্টর—লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি চাষ হয়েছে। সবজি ও অন্যান্য ফসলেও দেখা গেছে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি।

গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উৎপাদন, মাশরুম চাষ সম্প্রসারণ, উদ্যোক্তা তৈরি এবং স্থানীয়ভাবে লাগসই প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে মাঠে প্রয়োগ—এসব উদ্যোগ উপজেলা পর্যায়ে প্রশংসা কুড়িয়েছে। একই সঙ্গে সার–বাজার স্থিতিশীল রাখতে মজুতসহ অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রশাসন, কৃষি বিভাগ ও ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের যৌথ অভিযানে গত কয়েক মাসে ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। কৃষকের সুবিধার্থে চারজন ডিলারের পয়েন্টও পরিবর্তন করা হয়েছে।

নিয়মিত মাঠে ঘুরে ফসলের রোগবালাই শনাক্ত, সার ব্যবস্থাপনা, আধুনিক বীজ বপন কৌশল, কীটনাশক দোকান তদারকি, প্রণোদনার তালিকা যাচাই এবং তামাকের বিকল্প ফসল চাষে উদ্বুদ্ধ করাসহ নানা উদ্যোগে কৃষকদের কাছে আস্থার জায়গা তৈরি হয়েছে। ইফনাপ প্রকল্পের মাধ্যমে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে জৈব সার উৎপাদনে দক্ষ করে তোলা হচ্ছে, যা কৃষকরা ইতোমধ্যেই ব্যবহার করছেন।

চরাঞ্চলে তামাকের জায়গা দখল করছে স্যান্ডবার পদ্ধতির মিষ্টি কুমড়া, মালচিং পদ্ধতির সবজি, মরিচ, হলুদ, ডাল, মসলাসহ নানান নতুন ফসল। এতে কৃষকদের ফসল উৎপাদন বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে।

বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকরা বলেন—আগে সারের জন্য দৌড়াদৌড়ি করতে হতো, এখন আর হয় না। প্রণোদনা বণ্টনে এসেছে স্বচ্ছতা। ফসলে রোগ দেখা দিলে ফোন দিলেই কৃষি অফিসার এসে হাজির। এ বছর সবজির উৎপাদন দ্বিগুণ। “সময়মতো সার–বীজ পাওয়ায় আমনের ফলন ভালো হয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার শাহিনুর রহমান জানান, গঙ্গাচড়া উপজেলার কৃষকদের পাশে থেকে পরামর্শ ও সেবা দেওয়াই তার লক্ষ্য। চরাঞ্চল প্রকল্পের আওতায় ১১ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে ফসলের বৈচিত্র্য এসেছে। পাশাপাশি সার, বীজ, কীটনাশকসহ কৃষি উপকরণ ন্যায্যমূল্যে কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে কাজ করা হচ্ছে। তার নেতৃত্বে উপজেলায় গড়ে উঠেছে সুশৃঙ্খল, আধুনিক ও কৃষকবান্ধব কৃষি সেবা ব্যবস্থা।

এমআর/সবা