কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে তৈরি হয়েছে বিশাল এক প্লাস্টিক “দৈত্য”, যা সমুদ্র বালিয়াড়িতে দাঁড়িয়ে প্লাস্টিক দূষণের ভয়াবহতা প্রতিফলিত করছে। ৫০ ফুট দীর্ঘ এবং ৬ টন ওজনের এই ভাস্কর্যটি পরিত্যক্ত সামুদ্রিক প্লাস্টিক ব্যবহার করে স্বেচ্ছাসেবীরা নির্মাণ করেছেন।
জেলা প্রশাসন কক্সবাজার ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে সৈকতের সুগন্ধা সীগাল পয়েন্টে প্রদর্শন করা হচ্ছে এই প্লাস্টিক দানব। তিন মাসব্যাপী চিত্র প্রদর্শনীর সঙ্গে মিলিয়ে এ ভাস্কর্য সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। ৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টায় জেলা প্রশাসক মো: আ: মান্নান উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শহীদুল আলম, বিচ ম্যাজিস্ট্রেট আজিম উদ্দিন এবং বিদ্যানন্দের গভর্নিং বডির সদস্য জামাল উদ্দিন।
সরেজমিনে দেখা যায়, দানবটির রক্ত-মাংসহীন দেহ মানুষের প্রথম দর্শনে ভয় সৃষ্ট করলেও কাছে গিয়ে বোঝা যায়, এর থাবার মধ্যে মানবদেহ, প্রকৃতি ও সামুদ্রিক জীবের ওপর প্লাস্টিক দূষণের বিপর্যয় ফুটে উঠেছে। দৈত্যটি পৃথিবীকে দুটি ভাগে বিভক্ত করার মতো আকারে স্থাপন করা হয়েছে, যেন মানুষ অনুভব করতে পারে, প্লাস্টিক বর্জ্য কতোটা ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলছে।

পর্যটকরা সৈকতে এসে এই ভাস্কর্য দেখার মাধ্যমে প্লাস্টিক দূষণের ক্ষতি সম্পর্কে সচেতন হচ্ছেন। স্থানীয় শিল্পী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের দল ৬ মেট্রিক টন প্লাস্টিক, কাঠ, পেরেক ও অন্যান্য উপকরণ ব্যবহার করে বিশ্বের বৃহৎ প্লাস্টিক দৈত্যটি তৈরি করেছেন।
জেলা প্রশাসক মো: আ: মান্নান বলেন, “সমুদ্রসৈকতকে প্লাস্টিক দূষণের হাত থেকে বাঁচাতে বিদ্যানন্দের উদ্যোগ খুবই কার্যকর ও টেকসই। এ প্রদর্শনীর মাধ্যমে পর্যটকরা প্লাস্টিক ব্যবহারে আরও সতর্ক হবেন।”
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের জামাল উদ্দিন জানান, সারাদেশ থেকে ৫০০ মেট্রিক টন প্লাস্টিক রিসাইকেল করা হয়েছে। কক্সবাজারে এ প্রদর্শনী ৬ মাস চলবে এবং ভাস্কর্যের মাধ্যমে পর্যটক ও স্থানীয়দের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা হবে।
স্বেচ্ছাসেবক মুহাম্মদ মুবারক বলেন, গত ৪ মাস ধরে কক্সবাজার, ইনানী ও টেকনাফ সমুদ্র সৈকত থেকে ৮০ মেট্রিক টন প্লাস্টিক সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে পরিবেশের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ এবং পর্যটকদের সচেতন করা হচ্ছে। প্রদর্শনীর সঙ্গে পরিবেশ সচেতনতা মূলক পথনাটক ও সংগীতানুষ্ঠানও আয়োজন করা হয়েছে।
























