সুবর্ণচর প্রতিনিধি 
“দক্ষতা নিয়ে যাবো বিদেশ, রেমিট্যান্স দিয়ে গড়বো স্বদেশ”—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস ২০২৫ যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনে দিবসটি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সকালে সুবর্ণচর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
সকালে উপজেলা পরিষদ কার্যালয় চত্বর থেকে র্যালিটি শুরু হয়ে উপজেলার প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় উপজেলা কার্যালয়ে এসে শেষ হয়। র্যালিতে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, প্রবাসী সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ, সুশীল সমাজের সদস্য ও সাংবাদিকরা অংশগ্রহণ করেন।
র্যালি শেষে উপজেলা পরিষদের হলরুমে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় উপজেলা তথ্য কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুবর্ণচর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ছেনমং রাখাইন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ, চরজব্বর থানার এসআই শরিফুল ইসলাম, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম, প্রবাসী ফাউন্ডেশন সুবর্ণচর শাখার সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, চরবাটা ইউনিয়ন জামায়াতের আমির দিদারুল আলমসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিবৃন্দ। এছাড়া আলোচনা সভায় সুশীল সমাজের সদস্য ও প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরাও অংশ নেন।
আলোচনা সভায় বক্তারা তাদের বক্তব্যে বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রবাসীদের অবদান অপরিসীম। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সমৃদ্ধ করছে এবং অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
বক্তারা আরও বলেন, প্রবাসীরা পরিবারের সদস্যদের ছেড়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিদেশে কাজ করছেন। অথচ বিদেশে যাওয়ার আগে পাসপোর্ট অফিস, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, মেডিকেল পরীক্ষা ও বিমানবন্দরে নানা অজুহাতে তাদের হয়রানির শিকার হতে হয়, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। এসব হয়রানি বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও আন্তরিক হতে হবে।
এছাড়া বিদেশে যাওয়ার আগে ভাষা শিক্ষা ও কারিগরি প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে বক্তারা বলেন, দক্ষ জনশক্তি তৈরি করা গেলে প্রবাসে কর্মরত বাংলাদেশিরা আরও মর্যাদাপূর্ণ ও নিরাপদ কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবেন।
বক্তারা বলেন, প্রবাসীরা মুক্তিযোদ্ধাদের মতোই দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। তাই প্রবাসীদের অবহেলা ও তুচ্ছতাচ্ছিল্য বন্ধ করে দেশে ও বিদেশে তাদের যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে। প্রবাসীদের অবদান রাষ্ট্রীয়ভাবে আরও বেশি স্বীকৃতি দেওয়া জরুরি বলেও তারা মত প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানটি প্রবাসীদের অধিকার, মর্যাদা ও কল্যাণ নিশ্চিত করার আহ্বানের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
