১০:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হুইলচেয়ারে মহাকাশ ভ্রমণ

জার্মানির একজন প্রকৌশলী বিশ্বের প্রথম হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী হিসেবে মহাকাশ ভ্রমণ করলেন।

গতকাল শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস থেকে মিকায়েলা বেন্টহাউস এবং আরও পাঁচ আরোহীকে নিয়ে ব্লু অরিজিনের নিউ শেপার্ড রকেট মহাকাশের উদ্দেশে যাত্রা করে। তাঁরা মহাকাশের কথিত সীমানা ‘কারমান লাইনের’ ঠিক ওপরে পৌঁছান।

মিকায়েলা বেন্টহাউস নামের ওই নারী সাত বছর আগে একটি বাইক দুর্ঘটনায় মেরুদণ্ডে আঘাত পেয়েছিলেন। এর পরও তিনি দমে যাননি। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়েও মহাকাশচারী হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন কি বাস্তবায়ন করা সম্ভব? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে তিনি ইন্টারনেটে একজন অবসরপ্রাপ্ত মহাকাশ প্রকৌশলীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন।

পরে সেই প্রকৌশলী ধনকুবের জেফ বেজোসের প্রতিষ্ঠিত মহাকাশ পর্যটন সংস্থা ব্লু অরিজিনের মাধ্যমে এ ঐতিহাসিক ১০ মিনিটের মহাকাশ অভিযানে সহায়তা করেন।

 

মহাকাশযানটি পৃথিবীতে অবতরণের পর ব্লু অরিজিনের শেয়ার করা একটি ভিডিওতে মিকায়েলা বলেন, ‘এটি ছিল জীবনের সেরা অভিজ্ঞতা!’ তিনি বলেন, ‘চারপাশের দৃশ্য এবং ভেসে থাকার বিষয় আমি উপভোগ করেছি। ওপরে ওঠার মুহূর্তগুলোও দারুণ লেগেছে। প্রতিটি ধাপ ছিল অত্যন্ত চমৎকার।’

মিকায়েলা বেন্টহাউস বর্তমানে ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থায় (ইএসএ) কর্মরত। মিকায়েলা বলেন, দুর্ঘটনার পর তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, প্রতিবন্ধীদের জন্য পৃথিবী কতটা কঠিন।

মিকায়েলা তাঁর হুইলচেয়ার থেকে নিজেই মহাকাশযানের প্রবেশদ্বারে থাকা একটি বিশেষ বেঞ্চ ব্যবহার করে ভেতরে প্রবেশ করেন।

এই ভ্রমণের আয়োজনে সহায়তাকারী স্পেসএক্সের অবসরপ্রাপ্ত ম্যানেজার হ্যান্স কোনিগসম্যান ফ্লাইটের সময় প্রয়োজনে সহায়তা করতে মিকায়েলার পাশেই আসন গ্রহণ করেছিলেন।

বেন্টহাউস বলেন, ‘আমি অনলাইনে হ্যান্সের সঙ্গে পরিচিত হই। তখন তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলাম—আপনি দীর্ঘদিন স্পেসএক্সে কাজ করেছেন। আপনার কি মনে হয়, আমার মতো মানুষেরা মহাকাশচারী হতে পারবে?’

 

হ্যান্স বলেন, ‘মিকায়েলা মূলত আমাকে ওই অভিযানে সহায়তা করতে অনুপ্রাণিত করেছেন। তাঁর ইচ্ছাশক্তি দেখে মনে হয়েছে, আমারও এটা করা উচিত।’

ব্লু অরিজিন জানিয়েছে, মিকায়েলা বেন্টহাউসের ক্যাপসুলে প্রবেশ ও বের হওয়ার সুবিধার জন্য গ্রাউন্ড সাপোর্ট সরঞ্জাম যোগ করা হয়েছিল।

নিউ শেপার্ডের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফিল জয়েস বলেন, ‘মিকায়েলার এ অভিযান বিশেষভাবে অর্থবহ। এটি প্রমাণ করে যে মহাকাশ সবার জন্য। তাঁর এ স্বপ্ন পূরণে সাহায্য করতে পেরে আমরা গর্বিত।’

এমআর/সবা

জনপ্রিয় সংবাদ

একনেক সভায় ৪৬ হাজার ৪১৯ কোটি টাকার ২২ প্রকল্প অনুমোদন

হুইলচেয়ারে মহাকাশ ভ্রমণ

আপডেট সময় : ০৪:০৯:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫

জার্মানির একজন প্রকৌশলী বিশ্বের প্রথম হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী হিসেবে মহাকাশ ভ্রমণ করলেন।

গতকাল শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস থেকে মিকায়েলা বেন্টহাউস এবং আরও পাঁচ আরোহীকে নিয়ে ব্লু অরিজিনের নিউ শেপার্ড রকেট মহাকাশের উদ্দেশে যাত্রা করে। তাঁরা মহাকাশের কথিত সীমানা ‘কারমান লাইনের’ ঠিক ওপরে পৌঁছান।

মিকায়েলা বেন্টহাউস নামের ওই নারী সাত বছর আগে একটি বাইক দুর্ঘটনায় মেরুদণ্ডে আঘাত পেয়েছিলেন। এর পরও তিনি দমে যাননি। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়েও মহাকাশচারী হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন কি বাস্তবায়ন করা সম্ভব? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে তিনি ইন্টারনেটে একজন অবসরপ্রাপ্ত মহাকাশ প্রকৌশলীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন।

পরে সেই প্রকৌশলী ধনকুবের জেফ বেজোসের প্রতিষ্ঠিত মহাকাশ পর্যটন সংস্থা ব্লু অরিজিনের মাধ্যমে এ ঐতিহাসিক ১০ মিনিটের মহাকাশ অভিযানে সহায়তা করেন।

 

মহাকাশযানটি পৃথিবীতে অবতরণের পর ব্লু অরিজিনের শেয়ার করা একটি ভিডিওতে মিকায়েলা বলেন, ‘এটি ছিল জীবনের সেরা অভিজ্ঞতা!’ তিনি বলেন, ‘চারপাশের দৃশ্য এবং ভেসে থাকার বিষয় আমি উপভোগ করেছি। ওপরে ওঠার মুহূর্তগুলোও দারুণ লেগেছে। প্রতিটি ধাপ ছিল অত্যন্ত চমৎকার।’

মিকায়েলা বেন্টহাউস বর্তমানে ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থায় (ইএসএ) কর্মরত। মিকায়েলা বলেন, দুর্ঘটনার পর তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, প্রতিবন্ধীদের জন্য পৃথিবী কতটা কঠিন।

মিকায়েলা তাঁর হুইলচেয়ার থেকে নিজেই মহাকাশযানের প্রবেশদ্বারে থাকা একটি বিশেষ বেঞ্চ ব্যবহার করে ভেতরে প্রবেশ করেন।

এই ভ্রমণের আয়োজনে সহায়তাকারী স্পেসএক্সের অবসরপ্রাপ্ত ম্যানেজার হ্যান্স কোনিগসম্যান ফ্লাইটের সময় প্রয়োজনে সহায়তা করতে মিকায়েলার পাশেই আসন গ্রহণ করেছিলেন।

বেন্টহাউস বলেন, ‘আমি অনলাইনে হ্যান্সের সঙ্গে পরিচিত হই। তখন তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলাম—আপনি দীর্ঘদিন স্পেসএক্সে কাজ করেছেন। আপনার কি মনে হয়, আমার মতো মানুষেরা মহাকাশচারী হতে পারবে?’

 

হ্যান্স বলেন, ‘মিকায়েলা মূলত আমাকে ওই অভিযানে সহায়তা করতে অনুপ্রাণিত করেছেন। তাঁর ইচ্ছাশক্তি দেখে মনে হয়েছে, আমারও এটা করা উচিত।’

ব্লু অরিজিন জানিয়েছে, মিকায়েলা বেন্টহাউসের ক্যাপসুলে প্রবেশ ও বের হওয়ার সুবিধার জন্য গ্রাউন্ড সাপোর্ট সরঞ্জাম যোগ করা হয়েছিল।

নিউ শেপার্ডের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফিল জয়েস বলেন, ‘মিকায়েলার এ অভিযান বিশেষভাবে অর্থবহ। এটি প্রমাণ করে যে মহাকাশ সবার জন্য। তাঁর এ স্বপ্ন পূরণে সাহায্য করতে পেরে আমরা গর্বিত।’

এমআর/সবা