রামপুরার উলন এলাকায় পোষা বিড়াল টুনির মৃত্যুতে কলেজ শিক্ষার্থী ঐশীর হৃদয়বিদারক কান্না মুহূর্তেই আশপাশের মানুষের দৃষ্টি কেড়েছে। সদ্য এইচএসসি পাস করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির অপেক্ষায় থাকা ঐশী প্রিয় পোষা প্রাণীকে হারিয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। তার অঝোর কান্নায় এলাকায় এক ধরনের শোরগোলের সৃষ্টি হলেও, সেই কান্নার ভেতর লুকিয়ে ছিল গভীর ভালোবাসা ও মানবিকতার এক স্পষ্ট প্রতিচ্ছবি।
ঘটনার বিস্তারিত জানতে ঐশীর বড় বোন জোস্নার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, ছোটবেলা থেকেই টুনিকে পরিবারের সদস্যের মতো আগলে রেখেছিল ঐশী। টুনির অসুস্থতার খবর পেয়ে গত পরশু তাকে পশু চিকিৎসকের কাছে নেওয়া হয় এবং অনেক টাকা খরচ করে প্রয়োজনীয় ওষুধও আনা হয়। কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে শেষ পর্যন্ত টুনি মারা যায়। প্রিয় সঙ্গীকে হারানোর শোক ঐশী সহ্য করতে না পেরে কান্নায় ভেঙে পড়ে।

ঐশীর কান্না শুনে আশপাশের মানুষজন জড়ো হয়ে তাকে শান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করেন। কেউ কেউ এই ঘটনাকে জীবের প্রতি মানুষের আবেগ ও দায়িত্ববোধের উদাহরণ হিসেবে দেখছেন। স্থানীয়দের অনেকেই বলেন, সম্প্রতি পাবনায় এক নারীকে একসঙ্গে বস্তাবন্দী করে আটটি কুকুরছানা হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়, যা পুরো দেশকে নাড়া দিয়েছে। এমন নির্মম ঘটনার বিপরীতে ঐশীর টুনির প্রতি ভালোবাসা প্রমাণ করে—সমাজে এখনও প্রাণের প্রতি মমত্ববোধ ও মানবিকতা বেঁচে আছে।
ঐশীর সঙ্গে কথা হলে সে কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানায়, “টুনি শুধু আমার পোষা বিড়াল ছিল না, ও আমার বন্ধু ছিল। পড়াশোনার চাপ, মন খারাপ—সব সময় ও আমার পাশে থাকত। ওকে বাঁচানোর জন্য সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি, কিন্তু তবুও পারলাম না টুনিকে বাঁচাতে।”
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পোষা প্রাণীর সঙ্গে মানুষের মানসিক সম্পর্ক অনেক সময় পরিবারের সদস্যের মতোই গভীর হয়। এমন প্রাণীকে হারালে শোক প্রকাশ স্বাভাবিক এবং তা মানসিক স্বাস্থ্যের দিক থেকেও গুরুত্ব দিয়ে দেখা প্রয়োজন।
এই ঘটনা আবারও মনে করিয়ে দেয়—মানুষের মানবিকতা শুধু মানুষের প্রতিই নয়, সকল জীবের প্রতিই হওয়া উচিত। ঐশীর চোখের জল শুধু একটি পোষা বিড়ালের জন্য নয়, বরং জীবনের প্রতি ভালোবাসা ও সহমর্মিতার এক নীরব প্রতিবাদ।
এমআর/সবা

























