০৬:৪৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চ্যালেঞ্জের মুখে বিএনপির মহাসমাবেশ

সাইফ আশরাফ  : দিনভর নাটকীয়তা শেষে পছন্দের স্থানেই সমাবেশের অনুমতি পেয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, আজকের মহাসমাবেশ হবে সরকার পতনের মহাযাত্রা। সমাবেশ থেকে সরকার পতনের চূড়ান্ত আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়ারও ইঙ্গিত দিয়েছেন বিএনপি নেতারা।
ডিএমপির পক্ষ থেকে সড়ক বাদ দিয়ে অন্য কোনো স্থানে সমাবেশের অনুরোধ করা হলেও দলীয় কার্যালয়ের সামনে নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে বিএনপির অবস্থান ছিল অনড়। শেষমেষ নয়াপল্টনেই সমাবেশের অনুমতি মিলেছে। তবে নয়াপল্টন এলাকায় সন্ধ্যা থেকেই ব্যাপক উপস্থিতি ছিল পুলিশের। লাগানো হয় উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন সিসি ক্যামেরা। বিকাল থেকেই বিএনপির কার্যালয়ের সামনে দলে দলে জড়ো হতে থাকে নেতাকর্মীরা। এছাড়া বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মী আজকের মহাসমাবেশকে সফল করতে নানা কায়দায় ঢাকায় ঢুকার অপেক্ষায় রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছেও এ সংক্রান্ত তথ্য রয়েছে। তবে আওয়ামী লীগের শক্ত অবস্থান এবং রাজধানীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়াকড়িতে কত সংখ্যক নেতাকর্মী আদৌ ঢাকায় ঢুকতে পারবে তা নিয়ে শঙ্কা বিএনপি নেতাদেরও।
গতকাল শুক্রবার রাতে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান জানান, বিএনপিকে কয়েকটি শর্তসাপেক্ষে নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগকেও তাদের পছন্দের জায়গা বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ ফটকে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (অপারেশনস) বিপ্লব কুমার সরকার নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে শুক্রবার সকালে বিএনপির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা তো বলেছি, মহাসমাবেশ আমরা নয়াপল্টনেই করতে চাই। চিঠি দিয়েছি, আর মুখেও বলে দিয়েছি। আর আজ আমাদের যে মহাসমাবেশ, এই মহাসমাবেশ সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে এখানে করতে চাই।
একদিন হাতে রাখতেই বিএনপির ডাকা মহাসমাবেশে উপস্থিত হতে দলীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন দলীয় নেতাকর্মীরা। শুক্রবার জুমার নামাজের পরপরই নয়াপল্টন এলাকায় নেতাকর্মীদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। বিকাল হতেই কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বড় ধরনের জনসমাগম হয়। এ সময় তারা খণ্ড খণ্ড দলে ভাগ হয়ে সরকারবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন। বিকালে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সংখ্যা কম থাকলেও, সন্ধ্যার পরই বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য উপস্থিত হয়ে সতর্ক অবস্থান নেন। এ সময় পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে একটি জলকামান ও একটি রায় কার প্রস্তুত রাখা হয়।
পরিস্থিতি পরিদর্শনে এসে পুলিশের মতিঝিল বিভাগের ডিসি হায়াতুল ইসলাম খান বলেন, যেহেতু সিদ্ধান্ত এখনও আসেনি, তাই আমরা নেতাকর্মীদের অনুরোধ করেছি, আপনারা কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবেন না। দুই পাশের রাস্তার যান চলাচল স্বাভাবিক রাখবেন। যাতে এখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও জনশৃঙ্খলা বিপন্ন না হয়। যদি আমরা দেখি এখানে জনশৃঙ্খলা বিঘ্ন হচ্ছে, তাহলে ব্যবস্থা নেবো। আমি বিএনপির কয়েকজন সিনিয়র নেতাকে অনুরোধ করেছি, আপনারা নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করেন। এদিকে বিএনপির পক্ষ থেকেও সন্ধ্যায় মাইকিং করে কার্যালয়ের সামনে থেকে কর্মীদের সরে যেতে বলা হয়। এতেও তারা স্থান ত্যাগ করেননি।
রাজনৈতিক বিশ্লষকরা বলছেন, প্রাথমিকভাবে সমাবেশের স্থান নিয়ে বিএনপি জয়ী হলেও সমাবেশ সফল করা সহজ হবে না বিএনপির জন্য। এর আগে ১০ ডিসেম্বর ও ২৮ জুলাইয়ের মতো পরিবেশ যাতে না তৈরি হয় সেটাই বড় চ্যালেঞ্জ এখন দলটির সামনে।
গত বছর ১০ ডিসেম্বর বিএনপির পক্ষ থেকে নয়াপল্টনে সমাবেশে অনড় থাকলেও, শেষমেষ গোলাপবাগে সমাবেশের অনুমতি পায় দলটি। সেদিন সমাবেশে সারা দেশ থেকে নেতাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি ঘটানো হয়। প্রাথমিকভাবে ১০ ডিসেম্বর সরকার পতনের চূড়ান্ত আন্দোলন ঘোষণার কথা থাকলেও তা হয়নি। পরে আবার বিএনপি সারাদেশে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে কর্মসূচী শুরু করে। পরে ২৭ জুলাই ঢাকায় আবারও মহাসমাবেশ করে। সমাবেশ থেকে পরের দিন ২৮ জুলাই ঢাকার প্রবেশমুখে অবস্থান কড়মসূচি ঘোষণা করা হলেও তা মুখ থুবড়ে পড়ে।
পূর্ববর্তী দুই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে বিএনপির অবস্থান এখন অনেকটাই শক্তপোক্ত। তবে আজকের সমাবেশ কতটা শান্তিপূর্ণ থাকবে সেটাই চিন্তার বিষয় দলটির জন্য। কারণ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারবার নৈরাজ্য সৃষ্টি হলে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। প্রশাসনের সুরে সুর মিলিয়েছে আওয়ামী লীগও। গত বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাাদের বলেন, হামলা হলে আমাদের কর্মীরাও পাল্টা হামলা করবে।
বিএনপি সূত্র বলছে, সমাবেশ থেকে তফসিলের আগেই চূড়ান্ত ঘোষণা আসতে পারে। তবে বিএনপির আন্দোলন থাকবে ঢাকামুখী। সেক্ষেত্রে অবস্থান কর্মসূচি, হরতাল, অবরোধের মতো কর্মসূচি আসতে পারে।
বিএনপির পক্ষ থেকে ডিএমপির দেওয়া চিঠিতে সোয়া দুই লাখ নেতাকর্মীর সমাগমের কথা বলা হয়েছে। সমাবেশ সফল করতে বাঁধা উপেক্ষা করেই গত কয়েকদিন ধরে ঢাকা ঢুকতে শুরু করে বিএনপি নেতাকর্মীরা। গতকাল শুক্রবার, সকাল থেকে নয়াপল্টন দলীয় কার্যালয়ে অবস্থান নিতে দেখা যায় নেতাকর্মীদের। তবে আওয়ামী লীগের শক্ত অবস্থান এবং রাজধানীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়াকড়িতে কত সংখ্যক নেতাকর্মী আদৌ ঢাকায় ঢুকতে পারবে তা নিয়ে শঙ্কা বিএনপি নেতাদেরও। কারণ বিএনপির টার্গেট অনুযায়ী নেতাকর্মী ঢাকায় না আসতে পারলে সমাবেশ ও সমাবেশ পরবর্তী কর্মসূচি সফল করা নিয়ে শঙ্কা খোদ বিএনপি নেতাদেরও।
সারাদেশ থেকে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বেশ কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছিল। যার মধ্যে, হোটেলে অবস্থান না করে স্বজনদের বাড়িতে অবস্থান করা। স্মার্টফোন ব্যবহার না করা। দলবদ্ধভাবে না ঢুকে এককভাবে রাজধানীতে আসা।
তবে রাজনৈতিক বিশ্লষকরা বলছেন, আওয়ামী লীগ ও প্রশাসনের শক্ত অবস্থায় ঢাকায় কর্মসূচি কতটা সহজ হবে বিএনপির জন্য তা দেখার বিষয়। কারণ নিরাপত্তার স্বার্থে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনো বিশৃঙ্খলা হলেই হার্ড লাইনে যাবে। এছাড়াও আওয়ামী লীগও কর্মীদের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে অবস্থান নিতে বলেছে। এছাড়াও ইতিমধ্যে সারা দেশে ধরপাকড় শুরু হয়েছে বিএনপি নেতাকর্মীদের।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে গত চার দিনে ১ হাজার ৩৫০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৩৩০ জনেরও অধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার এবং ১৮টি মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

রাজধানীর প্রবেশমুখে কড়া তল্লাশি
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ডাকা সমাবেশকে ঘিরে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শুক্রবার দিনভর রাজধানীর প্রবেশমুখগুলোতে কড়া তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ। রাজধানীর প্রবেশপথগুলোতে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। যা আজ শনিবারও অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঢাকায় ঢুকতে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। গাবতলী, বাবুবাজার ব্রিজ, সাইনবোর্ড, সায়দাবাদ, আব্দুল্লাহপুর দেখা গেছে, বিভিন্ন গন্তব্যে থেকে ছেড়ে আসা গণপরিবহন ও প্রাইভেট কার রাজধানীতে ঢোকার সময় পুলিশ তল্লাশি করছে। বাসের ভেতরে যাত্রীদের ব্যাগসহ বাসের বিভিন্ন জায়গা তল্লাশি করছে তারা। রাজধানীতে কে কোন গন্তব্যে যাচ্ছেন, জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এসব বিষয়ও। মোটরসাইকেল যাত্রীদের তল্লাশি করা হয়, চেক করা হয় পরিচয়পত্র। কাউকে সন্দেহজনক মনে হলেই তল্লাশি, প্রয়োজনে জিজ্ঞাসাবাদও করা হচ্ছে। তল্লাশির নামে কাউকে হয়রানি কিংবা আটক করা হচ্ছে না বলে দাবি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। তবে পুলিশের এই তল্লাশির কারণে রাজধানীতে ঢোকার মুখে বেশ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
সমাবেশ সফল করা নিয়ে মহাসচিব বলেন, সারাদেশের মানুষের প্রতি আমাদের উদাত্ত আহ্বান, শনিবার মহাসমাবেশে যোগ দিয়ে সরকারকে পরিষ্কার ভাষায় জানিয়ে দিন, ‘না আর নয়’।

সমাবেশ করতে অনড় জামায়াত
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেট এবং বিএনপিকে নয়াপল্টনে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। জামায়াতে ইসলামীকে সমাবেশের অনুমিিত দেওয়া হয়নি। তবে সমাবেশের বিষয়ে অনড় তারা। গতকাল এক বিবৃতিতে কর্মসূচি সর্বাত্মকভাবে সফল করার জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ২৮ অক্টোবর শনিবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঘোষিত মহাসমাবেশ সর্বাত্মকভাবে সফল করতে হবে এবং কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে সরকারকে বাধ্য করতে হবে। অনির্বাচিত ও অবৈধ সরকার জগদ্দল পাথরের মত জাতির ঘাড়ে চেপে বসেছে। এই সরকারের পতন ঘটানো ছাড়া জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করা যাবে না। জামায়াতের মহাসমাবেশ বানচাল করার জন্য কোনো কোনো মহলের পক্ষ থেকে নানাভাবে গুজব ও মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে।

অন্যান্য দলের সমাবেশ যখন যেখানে
বিএনপির সাথে যুগপৎ আন্দোলনে যুক্ত ও সমমনা দল, জোটগুলোও রাজধানীজুড়ে সমাবেশ করবে আজ। বেলা ৩টা জাতীয় প্রেস ক্লাব সামনে সমাবেশ করবে গণতন্ত্র মঞ্চ, দুপুর ২টা বিজয় নগর পানির ট্যাংকি মোড়ে ১২ দলীয় জোট, দুপুর ২টা পুরানা পল্টন আলরাজী কমপ্লেক্স সামনে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, দুুপুর ১২টা মতিঝিল নটরডেম কলেজ উল্টো দিকে গণফোরাম চত্বরে গণ ফোরাম ও পিপলস পার্টি, বেলা ৩টা কাওরান বাজার এফডিসি সংলগ্ন এলডিপি অফিস সামনে এলডিপি, সকাল ১১টা বিজয় নগর পানির ট্যাংকি মোড়ে গণ অধিকার পরিষদ (নূর), দুপুর ৩টা মালিবাগ মোড়ে এনডিএম, দুপুর ১২টা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, বেলা ৩টায় পুরানা পল্টন কালভার্টে গণ অধিকার পরিষদ (ডক্টর রেজা কিবরিয়া ও ফারুক হাসান), দুপুর ৪টা পুরানা পল্টন মোড়ে লেবার পার্টি, সকাল ১১টা বিজয়নগর হোটেল ৭১ সামনে এবি পার্টি, দুপুর ২টা বিজয় নগর পানির ট্যাংকি মোড়ে জনতার অধিকার পার্টি, বেলা ৩টায় শাহবাগ জাতীয় জাদুঘর সামনে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী পেশাজীবী পরিষদ।

নজর কূটনীতিকদের
বাংলাদেশে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সহিংসতাহীন নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের দূতাবাসও এবার বেশ তৎপর। জানুয়ারির শুরুতে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশিদের জন্য নতুন ভিসা নীতি আরোপ করে তার প্রয়োগও শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই নীতির আওতায় নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্তকারী ও তাদের নিকটাত্মীয়দের ভিসা দিচ্ছে না দেশটি। অচলাবস্থা নিরসনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ‘অর্থবহ’ সংলাপের সুপারিশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল; ওই সুপারিশে সমর্থন দিয়েছে দেশটির সরকারও। সর্বশেষ সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেছেন, নির্বাচন ঘিরে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে যুক্তরাষ্ট্র। সব পক্ষের শান্তিপূর্ণভাবে অংশগ্রহণ করতে পারাটা অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। যার মধ্যে রয়েছে সরকারি কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, রাজনৈতিক দল, নির্বাচন কমিশন, গণমাধ্যম এবং অতি অবশ্যই ভোটাররা।

জনপ্রিয় সংবাদ

সানজিদা তন্বীর বিয়ের খবর জানালেন ফেসবুকে নিজের হৃদয়গ্রাহী পোস্টে

চ্যালেঞ্জের মুখে বিএনপির মহাসমাবেশ

আপডেট সময় : ০৪:০৯:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৩

সাইফ আশরাফ  : দিনভর নাটকীয়তা শেষে পছন্দের স্থানেই সমাবেশের অনুমতি পেয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, আজকের মহাসমাবেশ হবে সরকার পতনের মহাযাত্রা। সমাবেশ থেকে সরকার পতনের চূড়ান্ত আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়ারও ইঙ্গিত দিয়েছেন বিএনপি নেতারা।
ডিএমপির পক্ষ থেকে সড়ক বাদ দিয়ে অন্য কোনো স্থানে সমাবেশের অনুরোধ করা হলেও দলীয় কার্যালয়ের সামনে নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে বিএনপির অবস্থান ছিল অনড়। শেষমেষ নয়াপল্টনেই সমাবেশের অনুমতি মিলেছে। তবে নয়াপল্টন এলাকায় সন্ধ্যা থেকেই ব্যাপক উপস্থিতি ছিল পুলিশের। লাগানো হয় উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন সিসি ক্যামেরা। বিকাল থেকেই বিএনপির কার্যালয়ের সামনে দলে দলে জড়ো হতে থাকে নেতাকর্মীরা। এছাড়া বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মী আজকের মহাসমাবেশকে সফল করতে নানা কায়দায় ঢাকায় ঢুকার অপেক্ষায় রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছেও এ সংক্রান্ত তথ্য রয়েছে। তবে আওয়ামী লীগের শক্ত অবস্থান এবং রাজধানীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়াকড়িতে কত সংখ্যক নেতাকর্মী আদৌ ঢাকায় ঢুকতে পারবে তা নিয়ে শঙ্কা বিএনপি নেতাদেরও।
গতকাল শুক্রবার রাতে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান জানান, বিএনপিকে কয়েকটি শর্তসাপেক্ষে নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগকেও তাদের পছন্দের জায়গা বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ ফটকে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (অপারেশনস) বিপ্লব কুমার সরকার নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে শুক্রবার সকালে বিএনপির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা তো বলেছি, মহাসমাবেশ আমরা নয়াপল্টনেই করতে চাই। চিঠি দিয়েছি, আর মুখেও বলে দিয়েছি। আর আজ আমাদের যে মহাসমাবেশ, এই মহাসমাবেশ সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে এখানে করতে চাই।
একদিন হাতে রাখতেই বিএনপির ডাকা মহাসমাবেশে উপস্থিত হতে দলীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন দলীয় নেতাকর্মীরা। শুক্রবার জুমার নামাজের পরপরই নয়াপল্টন এলাকায় নেতাকর্মীদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। বিকাল হতেই কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বড় ধরনের জনসমাগম হয়। এ সময় তারা খণ্ড খণ্ড দলে ভাগ হয়ে সরকারবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন। বিকালে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সংখ্যা কম থাকলেও, সন্ধ্যার পরই বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য উপস্থিত হয়ে সতর্ক অবস্থান নেন। এ সময় পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে একটি জলকামান ও একটি রায় কার প্রস্তুত রাখা হয়।
পরিস্থিতি পরিদর্শনে এসে পুলিশের মতিঝিল বিভাগের ডিসি হায়াতুল ইসলাম খান বলেন, যেহেতু সিদ্ধান্ত এখনও আসেনি, তাই আমরা নেতাকর্মীদের অনুরোধ করেছি, আপনারা কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবেন না। দুই পাশের রাস্তার যান চলাচল স্বাভাবিক রাখবেন। যাতে এখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও জনশৃঙ্খলা বিপন্ন না হয়। যদি আমরা দেখি এখানে জনশৃঙ্খলা বিঘ্ন হচ্ছে, তাহলে ব্যবস্থা নেবো। আমি বিএনপির কয়েকজন সিনিয়র নেতাকে অনুরোধ করেছি, আপনারা নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করেন। এদিকে বিএনপির পক্ষ থেকেও সন্ধ্যায় মাইকিং করে কার্যালয়ের সামনে থেকে কর্মীদের সরে যেতে বলা হয়। এতেও তারা স্থান ত্যাগ করেননি।
রাজনৈতিক বিশ্লষকরা বলছেন, প্রাথমিকভাবে সমাবেশের স্থান নিয়ে বিএনপি জয়ী হলেও সমাবেশ সফল করা সহজ হবে না বিএনপির জন্য। এর আগে ১০ ডিসেম্বর ও ২৮ জুলাইয়ের মতো পরিবেশ যাতে না তৈরি হয় সেটাই বড় চ্যালেঞ্জ এখন দলটির সামনে।
গত বছর ১০ ডিসেম্বর বিএনপির পক্ষ থেকে নয়াপল্টনে সমাবেশে অনড় থাকলেও, শেষমেষ গোলাপবাগে সমাবেশের অনুমতি পায় দলটি। সেদিন সমাবেশে সারা দেশ থেকে নেতাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি ঘটানো হয়। প্রাথমিকভাবে ১০ ডিসেম্বর সরকার পতনের চূড়ান্ত আন্দোলন ঘোষণার কথা থাকলেও তা হয়নি। পরে আবার বিএনপি সারাদেশে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে কর্মসূচী শুরু করে। পরে ২৭ জুলাই ঢাকায় আবারও মহাসমাবেশ করে। সমাবেশ থেকে পরের দিন ২৮ জুলাই ঢাকার প্রবেশমুখে অবস্থান কড়মসূচি ঘোষণা করা হলেও তা মুখ থুবড়ে পড়ে।
পূর্ববর্তী দুই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে বিএনপির অবস্থান এখন অনেকটাই শক্তপোক্ত। তবে আজকের সমাবেশ কতটা শান্তিপূর্ণ থাকবে সেটাই চিন্তার বিষয় দলটির জন্য। কারণ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারবার নৈরাজ্য সৃষ্টি হলে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। প্রশাসনের সুরে সুর মিলিয়েছে আওয়ামী লীগও। গত বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাাদের বলেন, হামলা হলে আমাদের কর্মীরাও পাল্টা হামলা করবে।
বিএনপি সূত্র বলছে, সমাবেশ থেকে তফসিলের আগেই চূড়ান্ত ঘোষণা আসতে পারে। তবে বিএনপির আন্দোলন থাকবে ঢাকামুখী। সেক্ষেত্রে অবস্থান কর্মসূচি, হরতাল, অবরোধের মতো কর্মসূচি আসতে পারে।
বিএনপির পক্ষ থেকে ডিএমপির দেওয়া চিঠিতে সোয়া দুই লাখ নেতাকর্মীর সমাগমের কথা বলা হয়েছে। সমাবেশ সফল করতে বাঁধা উপেক্ষা করেই গত কয়েকদিন ধরে ঢাকা ঢুকতে শুরু করে বিএনপি নেতাকর্মীরা। গতকাল শুক্রবার, সকাল থেকে নয়াপল্টন দলীয় কার্যালয়ে অবস্থান নিতে দেখা যায় নেতাকর্মীদের। তবে আওয়ামী লীগের শক্ত অবস্থান এবং রাজধানীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়াকড়িতে কত সংখ্যক নেতাকর্মী আদৌ ঢাকায় ঢুকতে পারবে তা নিয়ে শঙ্কা বিএনপি নেতাদেরও। কারণ বিএনপির টার্গেট অনুযায়ী নেতাকর্মী ঢাকায় না আসতে পারলে সমাবেশ ও সমাবেশ পরবর্তী কর্মসূচি সফল করা নিয়ে শঙ্কা খোদ বিএনপি নেতাদেরও।
সারাদেশ থেকে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বেশ কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছিল। যার মধ্যে, হোটেলে অবস্থান না করে স্বজনদের বাড়িতে অবস্থান করা। স্মার্টফোন ব্যবহার না করা। দলবদ্ধভাবে না ঢুকে এককভাবে রাজধানীতে আসা।
তবে রাজনৈতিক বিশ্লষকরা বলছেন, আওয়ামী লীগ ও প্রশাসনের শক্ত অবস্থায় ঢাকায় কর্মসূচি কতটা সহজ হবে বিএনপির জন্য তা দেখার বিষয়। কারণ নিরাপত্তার স্বার্থে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনো বিশৃঙ্খলা হলেই হার্ড লাইনে যাবে। এছাড়াও আওয়ামী লীগও কর্মীদের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে অবস্থান নিতে বলেছে। এছাড়াও ইতিমধ্যে সারা দেশে ধরপাকড় শুরু হয়েছে বিএনপি নেতাকর্মীদের।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে গত চার দিনে ১ হাজার ৩৫০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৩৩০ জনেরও অধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার এবং ১৮টি মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

রাজধানীর প্রবেশমুখে কড়া তল্লাশি
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ডাকা সমাবেশকে ঘিরে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শুক্রবার দিনভর রাজধানীর প্রবেশমুখগুলোতে কড়া তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ। রাজধানীর প্রবেশপথগুলোতে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। যা আজ শনিবারও অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঢাকায় ঢুকতে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। গাবতলী, বাবুবাজার ব্রিজ, সাইনবোর্ড, সায়দাবাদ, আব্দুল্লাহপুর দেখা গেছে, বিভিন্ন গন্তব্যে থেকে ছেড়ে আসা গণপরিবহন ও প্রাইভেট কার রাজধানীতে ঢোকার সময় পুলিশ তল্লাশি করছে। বাসের ভেতরে যাত্রীদের ব্যাগসহ বাসের বিভিন্ন জায়গা তল্লাশি করছে তারা। রাজধানীতে কে কোন গন্তব্যে যাচ্ছেন, জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এসব বিষয়ও। মোটরসাইকেল যাত্রীদের তল্লাশি করা হয়, চেক করা হয় পরিচয়পত্র। কাউকে সন্দেহজনক মনে হলেই তল্লাশি, প্রয়োজনে জিজ্ঞাসাবাদও করা হচ্ছে। তল্লাশির নামে কাউকে হয়রানি কিংবা আটক করা হচ্ছে না বলে দাবি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। তবে পুলিশের এই তল্লাশির কারণে রাজধানীতে ঢোকার মুখে বেশ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
সমাবেশ সফল করা নিয়ে মহাসচিব বলেন, সারাদেশের মানুষের প্রতি আমাদের উদাত্ত আহ্বান, শনিবার মহাসমাবেশে যোগ দিয়ে সরকারকে পরিষ্কার ভাষায় জানিয়ে দিন, ‘না আর নয়’।

সমাবেশ করতে অনড় জামায়াত
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেট এবং বিএনপিকে নয়াপল্টনে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। জামায়াতে ইসলামীকে সমাবেশের অনুমিিত দেওয়া হয়নি। তবে সমাবেশের বিষয়ে অনড় তারা। গতকাল এক বিবৃতিতে কর্মসূচি সর্বাত্মকভাবে সফল করার জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ২৮ অক্টোবর শনিবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঘোষিত মহাসমাবেশ সর্বাত্মকভাবে সফল করতে হবে এবং কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে সরকারকে বাধ্য করতে হবে। অনির্বাচিত ও অবৈধ সরকার জগদ্দল পাথরের মত জাতির ঘাড়ে চেপে বসেছে। এই সরকারের পতন ঘটানো ছাড়া জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করা যাবে না। জামায়াতের মহাসমাবেশ বানচাল করার জন্য কোনো কোনো মহলের পক্ষ থেকে নানাভাবে গুজব ও মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে।

অন্যান্য দলের সমাবেশ যখন যেখানে
বিএনপির সাথে যুগপৎ আন্দোলনে যুক্ত ও সমমনা দল, জোটগুলোও রাজধানীজুড়ে সমাবেশ করবে আজ। বেলা ৩টা জাতীয় প্রেস ক্লাব সামনে সমাবেশ করবে গণতন্ত্র মঞ্চ, দুপুর ২টা বিজয় নগর পানির ট্যাংকি মোড়ে ১২ দলীয় জোট, দুপুর ২টা পুরানা পল্টন আলরাজী কমপ্লেক্স সামনে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, দুুপুর ১২টা মতিঝিল নটরডেম কলেজ উল্টো দিকে গণফোরাম চত্বরে গণ ফোরাম ও পিপলস পার্টি, বেলা ৩টা কাওরান বাজার এফডিসি সংলগ্ন এলডিপি অফিস সামনে এলডিপি, সকাল ১১টা বিজয় নগর পানির ট্যাংকি মোড়ে গণ অধিকার পরিষদ (নূর), দুপুর ৩টা মালিবাগ মোড়ে এনডিএম, দুপুর ১২টা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, বেলা ৩টায় পুরানা পল্টন কালভার্টে গণ অধিকার পরিষদ (ডক্টর রেজা কিবরিয়া ও ফারুক হাসান), দুপুর ৪টা পুরানা পল্টন মোড়ে লেবার পার্টি, সকাল ১১টা বিজয়নগর হোটেল ৭১ সামনে এবি পার্টি, দুপুর ২টা বিজয় নগর পানির ট্যাংকি মোড়ে জনতার অধিকার পার্টি, বেলা ৩টায় শাহবাগ জাতীয় জাদুঘর সামনে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী পেশাজীবী পরিষদ।

নজর কূটনীতিকদের
বাংলাদেশে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সহিংসতাহীন নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের দূতাবাসও এবার বেশ তৎপর। জানুয়ারির শুরুতে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশিদের জন্য নতুন ভিসা নীতি আরোপ করে তার প্রয়োগও শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই নীতির আওতায় নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্তকারী ও তাদের নিকটাত্মীয়দের ভিসা দিচ্ছে না দেশটি। অচলাবস্থা নিরসনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ‘অর্থবহ’ সংলাপের সুপারিশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল; ওই সুপারিশে সমর্থন দিয়েছে দেশটির সরকারও। সর্বশেষ সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেছেন, নির্বাচন ঘিরে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে যুক্তরাষ্ট্র। সব পক্ষের শান্তিপূর্ণভাবে অংশগ্রহণ করতে পারাটা অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। যার মধ্যে রয়েছে সরকারি কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, রাজনৈতিক দল, নির্বাচন কমিশন, গণমাধ্যম এবং অতি অবশ্যই ভোটাররা।