০৬:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

লালমনিরহাটের প্রতিবন্ধীদের আশার আলো জাগিয়েছে সাড়পুকুর অটিস্টিক এন্ড প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়

মোফাখখারুল ইসলাম মজনু ,লালমনিরহাট
চেতনা, মনন ও  বিকাশে স্বাভাবিকতা না থাকায় প্রতিবন্ধীদের নিয়ে স্বজনদের কষ্ট
আর দুর্ভোগের যেন শেষ নেই।বিশেষ করে দরিদ্র অতি দরিদ্র পরিবারগুলো তাদের এমন স্বজনদের ভবিষ্যত পথচলা নিয়ে মারাত্ব হতাশা আর অস্থির সময় পার করছে।
এমন অপরিসীম দুঃস্বপ্নে অসহায় পরিবার গুলোর মাঝে অনেকটাই আশার আলো জাগিয়েছে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার তালুক হরিদাশ গ্রামে প্রতিষ্ঠিত” সাড়পুকুর অটিস্টিক এন্ড প্রতিবন্ধী”- বিদ্যালয়টির প্রয়াস।
ব্যাক্তি উদ্যোগে গড়ে উঠা এই প্রতিষ্ঠানটির সাথে সংশিলিষ্ঠরা প্রতিবন্ধীদের বিশেষ শিক্ষা,একিভুত ও সমন্বিত শিক্ষা  পদ্ধতি প্রয়োগ, বিভিন্ন উপকরনের মাধ্যমে নিয়মিত কষরত ও অনুশীলনে শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঘটিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে এগিয়েছে সাফল্যের দ্বার প্রান্তে।
সীমান্ত জেলা লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার গ্রামীন জনপদ সারপুকুর ইউনিয়নের তালুক হরিদাশ গ্রামে গড়ে উঠা সারপুকুর প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়টি এখন প্রতিবন্ধী পরিবার গুলোর ভরসা স্থলে পরিনত হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে পরিবারের প্রতিবন্ধীদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে বুকভড়া আশা নিয়ে নিয়মিত তাদের স্বজনদের নিয়ে আসেন বিদ্যালয়টিতে।সেখানে পড়া লেখার পাশা-পাশি বিভিন্ন অনুশীলন পরিচর্যা ও খেলা ধুলায় সকাল পেড়িয়ে দুপুর বিকেল পার করেন প্রতিবন্ধীরা আর তা উপভোগ করার প্রানান্তকর চেষ্টায় থাকেন অভিভাবকরাও।
তৃনমুলের প্রতিবন্ধী সদস্যেদের পরিবার গুলো দরিদ্র ও অতিদরিদ্র হওয়ায় ওই উপজেলা সহ বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসেন তারা এই প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে।স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে বিদ্যালয়টি থেকে বিনা খরচে সেবা পেয়ে স্বস্তি প্রকাশ করেছে ন সেবা নেয়া প্রতিবন্ধীদের স্বজনরা।
বিভিন্নকারনে  অবহেলীত  প্রতিবন্ধীরা পরিবারেরর বড়ধরনের দুঃচিন্তার কারন হয়ে দাড়িয়েছিল।তবে সেটি যেন এখন স্বপ্নের রুপ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির কারনে ওই পরিবার গুলোর মাঝে ফিরেছে স্বস্থি আর জেগেছে  আশার আলো।
মোঃ হুমায়ন কবির,চেয়ারম্যান সাড়পুকুর ইউনিয়ন পরিষদ জানান,ব্যাক্তি উদ্যোগে এমন একটি প্রতিষ্টান প্রতিবন্ধীদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোর কাজ করছে দীর্ঘ দিন ধরে।নিঃসন্দেহে এটি একটি ভাল উদ্যোগ।তিনি আরো বলেন,আমাদের বর্তমান সমাজ কল্যান মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ লালমনিরহাট দুই আসনের এমপি।তিনি এই প্রতিষ্ঠানটিতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিলে প্রতিবন্ধীদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোর উদ্যোগ আরো কার্যকর হবে।
প্রতিষ্ঠানটির কর্নধার নির্বাহী পরিচালক রোকশাহানার বলেন,তিনি এক সময়ে চাকুরী করতেন স্থানীয় একটি এনজিতে ট্রেইনর হিসাবে।সেখানে বিভিন্ন কাজের পাশা-পাশি প্রতিবন্ধীদের নিয়েও কাজ করতেন তিনি।সেখান থেকেই মুলত তার ইচ্ছাশক্তি কাজ করে প্রতিবন্ধীদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে ও একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার।পরে বাবার একখন্ড জমিতে গড়ে তুলেন সাড়পুকুর অটিস্টিক এন্ড প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়টি।ওই প্রতিষ্ঠানটি থেকে এরই মধ্যে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছে অনেকেই।
 আবার একিভুত শিক্ষায় আওতায় এখানে চতর্থ শ্রেনী পর্যন্ত পড়া লেখা শেষে প্রাথমিক ও এসএসসি পাশ করে উচ্চশিক্ষা গ্রহন করে অনেকই হয়েছেন স্বাবলম্বী।
লালমবিরহাট সদর হাসপাতালে কর্মরত সমাজ সেবা বিষয়ক কর্মকর্তা মোঃ এরশাদ আলম সবুজ বাংলা পত্রিকাকে জানান, প্রতিষ্ঠানটি প্রতিবন্ধীদের স্বাভাকি জীবেন ফেরাতে ইতিমধ্যই এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা আর সহযোগিতা পেলে ওই প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে প্রতিবন্ধীদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোর কাজে গতি ফিরবে।যা দেশ ও জাতীকে এগিয়ে নিতে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে।
এদিকে সারপুকুর অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়টি বেশ কয়েকবার পরিদর্শন প্রতিবন্ধীদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোর যে কর্মতৎপরতা চলছে  স্বীকার করে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন জেলার শীর্ষ কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ উল্যা
২০১৫ সালের জানুয়ারী মাসে প্রতিষ্ঠিত হওয়া এই বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ২১৫ জন বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী  রয়েছে।
জনপ্রিয় সংবাদ

স্মৃতিসৌধে তারেক রহমান

লালমনিরহাটের প্রতিবন্ধীদের আশার আলো জাগিয়েছে সাড়পুকুর অটিস্টিক এন্ড প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়

আপডেট সময় : ০৫:১৭:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৩
মোফাখখারুল ইসলাম মজনু ,লালমনিরহাট
চেতনা, মনন ও  বিকাশে স্বাভাবিকতা না থাকায় প্রতিবন্ধীদের নিয়ে স্বজনদের কষ্ট
আর দুর্ভোগের যেন শেষ নেই।বিশেষ করে দরিদ্র অতি দরিদ্র পরিবারগুলো তাদের এমন স্বজনদের ভবিষ্যত পথচলা নিয়ে মারাত্ব হতাশা আর অস্থির সময় পার করছে।
এমন অপরিসীম দুঃস্বপ্নে অসহায় পরিবার গুলোর মাঝে অনেকটাই আশার আলো জাগিয়েছে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার তালুক হরিদাশ গ্রামে প্রতিষ্ঠিত” সাড়পুকুর অটিস্টিক এন্ড প্রতিবন্ধী”- বিদ্যালয়টির প্রয়াস।
ব্যাক্তি উদ্যোগে গড়ে উঠা এই প্রতিষ্ঠানটির সাথে সংশিলিষ্ঠরা প্রতিবন্ধীদের বিশেষ শিক্ষা,একিভুত ও সমন্বিত শিক্ষা  পদ্ধতি প্রয়োগ, বিভিন্ন উপকরনের মাধ্যমে নিয়মিত কষরত ও অনুশীলনে শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঘটিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে এগিয়েছে সাফল্যের দ্বার প্রান্তে।
সীমান্ত জেলা লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার গ্রামীন জনপদ সারপুকুর ইউনিয়নের তালুক হরিদাশ গ্রামে গড়ে উঠা সারপুকুর প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়টি এখন প্রতিবন্ধী পরিবার গুলোর ভরসা স্থলে পরিনত হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে পরিবারের প্রতিবন্ধীদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে বুকভড়া আশা নিয়ে নিয়মিত তাদের স্বজনদের নিয়ে আসেন বিদ্যালয়টিতে।সেখানে পড়া লেখার পাশা-পাশি বিভিন্ন অনুশীলন পরিচর্যা ও খেলা ধুলায় সকাল পেড়িয়ে দুপুর বিকেল পার করেন প্রতিবন্ধীরা আর তা উপভোগ করার প্রানান্তকর চেষ্টায় থাকেন অভিভাবকরাও।
তৃনমুলের প্রতিবন্ধী সদস্যেদের পরিবার গুলো দরিদ্র ও অতিদরিদ্র হওয়ায় ওই উপজেলা সহ বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসেন তারা এই প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে।স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে বিদ্যালয়টি থেকে বিনা খরচে সেবা পেয়ে স্বস্তি প্রকাশ করেছে ন সেবা নেয়া প্রতিবন্ধীদের স্বজনরা।
বিভিন্নকারনে  অবহেলীত  প্রতিবন্ধীরা পরিবারেরর বড়ধরনের দুঃচিন্তার কারন হয়ে দাড়িয়েছিল।তবে সেটি যেন এখন স্বপ্নের রুপ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির কারনে ওই পরিবার গুলোর মাঝে ফিরেছে স্বস্থি আর জেগেছে  আশার আলো।
মোঃ হুমায়ন কবির,চেয়ারম্যান সাড়পুকুর ইউনিয়ন পরিষদ জানান,ব্যাক্তি উদ্যোগে এমন একটি প্রতিষ্টান প্রতিবন্ধীদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোর কাজ করছে দীর্ঘ দিন ধরে।নিঃসন্দেহে এটি একটি ভাল উদ্যোগ।তিনি আরো বলেন,আমাদের বর্তমান সমাজ কল্যান মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ লালমনিরহাট দুই আসনের এমপি।তিনি এই প্রতিষ্ঠানটিতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিলে প্রতিবন্ধীদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোর উদ্যোগ আরো কার্যকর হবে।
প্রতিষ্ঠানটির কর্নধার নির্বাহী পরিচালক রোকশাহানার বলেন,তিনি এক সময়ে চাকুরী করতেন স্থানীয় একটি এনজিতে ট্রেইনর হিসাবে।সেখানে বিভিন্ন কাজের পাশা-পাশি প্রতিবন্ধীদের নিয়েও কাজ করতেন তিনি।সেখান থেকেই মুলত তার ইচ্ছাশক্তি কাজ করে প্রতিবন্ধীদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে ও একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার।পরে বাবার একখন্ড জমিতে গড়ে তুলেন সাড়পুকুর অটিস্টিক এন্ড প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়টি।ওই প্রতিষ্ঠানটি থেকে এরই মধ্যে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছে অনেকেই।
 আবার একিভুত শিক্ষায় আওতায় এখানে চতর্থ শ্রেনী পর্যন্ত পড়া লেখা শেষে প্রাথমিক ও এসএসসি পাশ করে উচ্চশিক্ষা গ্রহন করে অনেকই হয়েছেন স্বাবলম্বী।
লালমবিরহাট সদর হাসপাতালে কর্মরত সমাজ সেবা বিষয়ক কর্মকর্তা মোঃ এরশাদ আলম সবুজ বাংলা পত্রিকাকে জানান, প্রতিষ্ঠানটি প্রতিবন্ধীদের স্বাভাকি জীবেন ফেরাতে ইতিমধ্যই এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা আর সহযোগিতা পেলে ওই প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে প্রতিবন্ধীদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোর কাজে গতি ফিরবে।যা দেশ ও জাতীকে এগিয়ে নিতে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে।
এদিকে সারপুকুর অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়টি বেশ কয়েকবার পরিদর্শন প্রতিবন্ধীদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোর যে কর্মতৎপরতা চলছে  স্বীকার করে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন জেলার শীর্ষ কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ উল্যা
২০১৫ সালের জানুয়ারী মাসে প্রতিষ্ঠিত হওয়া এই বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ২১৫ জন বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী  রয়েছে।