০২:২৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে রাবি শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হল শাখা ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে মারধর ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আব্দুল লতিফ হলে এ ঘটনা ঘটে।  আজ মঙ্গলবার সকালে নিরাপত্তা চেয়ে হল প্রাধ্যক্ষ ও প্রক্টর দপ্তর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ।

অভিযোগকারী মফিজুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের মাস্টার্স ও ওই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।

মফিজুর রহমান অভিযোগ করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আব্দুল লতিফ হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা তাসকিফ আল তৌহিদ তাঁকে মারধর করেছেন। কমিটি হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান তাঁর পক্ষ থেকে তৌহিদকে ওই হল দেখাশোনা করার দায়িত্ব দিয়েছেন। এর আগে গতবছরের জুনে ওই হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে মারধর ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছিল তৌহিদসহ তিন জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় প্রাধ্যক্ষ পরিষদের এক জরুরি সভায় তৌহিদকে হল থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়।

লিখিত অভিযোগ ও মফিজুর রহমানের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল সোমবার বিকালে (১৮ ডিসেম্বর) ডাক্তারের কাছে রিপোর্ট নিতে যাওয়ার পথে হল গেটে ছাত্রলীগ নেতা তাসকিফ আল তৌহিদের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। তৌহিদ তাঁকে জিজ্ঞেস করেন কোথায় যাচ্ছেন? তিনি ডাক্তারের কাছে যাচ্ছেন শুনে তৌহিদ তাঁর রিপোর্টটা হাতে নেন এবং বাবা কি করেন জানতে চান। বাবা রিক্সা চালান জানার পর তৌহিদ বলেন, ‘বাবা রিক্সা চালায় অথচ তুই এত টাকা দিয়ে ডাক্তার দেখাস কি করে?’ এছাড়া তাঁর বাবাকে হেয় করে বিভিন্ন কথা বলতে থাকেন।
এসময় তিনি একটি সামাজিক সংগঠন থেকে আর্থিক সাহায্য নিয়ে চিকিৎসা করছেন বলে জানান। এ কথা শোনার পর তৌহিদ বিদ্রুপ করে বলেন, ‘তুই দশজনকে রান্না করে খাওয়াবি।’ তখন তিনি প্রতিবাদ করলে তৌহিদ কারও নাম উল্লেখ না করে বলেন, ‘অমুক নাকি তিন হাজার টাকা পায়।’

তাঁর কাছে কেউ কেউ টাকা পায় না বললে বিষয়টি নিয়ে উভয়ের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তৌহিদ ও তাঁর কয়েকজন অনুসারী তাঁকে অতিথিকক্ষে (গেস্টরুম) নিয়ে যায় এবং পিঠে আঘাত করেন। এছাড়া তাঁর সঙ্গে অসদাচরণ করে  হল থেকে বের হয়ে যাওয়ার হুমকি দেন। পরে হলের নিরাপত্তা প্রহরীরা এগিয়ে আসলে তাঁকে ছেড়ে দেন।

মারধর ও হুমকি দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে অভিযুক্ত তাসকিফ আল তৌহিদ প্রথম আলোকে বলেন, হলের ছোট ভাইদের সঙ্গে একটু ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল। সেখানে মারধর ও হুমকি দেওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। পরে হলের প্রাধ্যক্ষ স্যার আজ সকালে বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছেন। মূলত তাঁকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করার জন্য একটি পক্ষের প্ররোচনায় এসব অভিযোগ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। ওই ছেলের সঙ্গে শিবিরের সম্পৃক্ততার তথ্য থাকায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। তিনি সাংগঠনিক সফরে ঢাকায় আছেন। তিনি ফিরে এসে বিষয়টা দেখবেন।

নবাব আব্দুল লতিফ হলের প্রাধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমান বলেন, এবিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। পরে উভয়পক্ষকে ডেকে বিষয়টি মিমাংসা করে দিয়েছেন। অভিযোগকারী শিক্ষার্থীর যেন আর কোনো সমস্যা না হয়; বিষয়টি হল প্রশাসন খেয়াল রাখবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে রাবি শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৬:২৩:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হল শাখা ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে মারধর ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আব্দুল লতিফ হলে এ ঘটনা ঘটে।  আজ মঙ্গলবার সকালে নিরাপত্তা চেয়ে হল প্রাধ্যক্ষ ও প্রক্টর দপ্তর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ।

অভিযোগকারী মফিজুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের মাস্টার্স ও ওই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।

মফিজুর রহমান অভিযোগ করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আব্দুল লতিফ হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা তাসকিফ আল তৌহিদ তাঁকে মারধর করেছেন। কমিটি হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান তাঁর পক্ষ থেকে তৌহিদকে ওই হল দেখাশোনা করার দায়িত্ব দিয়েছেন। এর আগে গতবছরের জুনে ওই হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে মারধর ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছিল তৌহিদসহ তিন জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় প্রাধ্যক্ষ পরিষদের এক জরুরি সভায় তৌহিদকে হল থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়।

লিখিত অভিযোগ ও মফিজুর রহমানের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল সোমবার বিকালে (১৮ ডিসেম্বর) ডাক্তারের কাছে রিপোর্ট নিতে যাওয়ার পথে হল গেটে ছাত্রলীগ নেতা তাসকিফ আল তৌহিদের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। তৌহিদ তাঁকে জিজ্ঞেস করেন কোথায় যাচ্ছেন? তিনি ডাক্তারের কাছে যাচ্ছেন শুনে তৌহিদ তাঁর রিপোর্টটা হাতে নেন এবং বাবা কি করেন জানতে চান। বাবা রিক্সা চালান জানার পর তৌহিদ বলেন, ‘বাবা রিক্সা চালায় অথচ তুই এত টাকা দিয়ে ডাক্তার দেখাস কি করে?’ এছাড়া তাঁর বাবাকে হেয় করে বিভিন্ন কথা বলতে থাকেন।
এসময় তিনি একটি সামাজিক সংগঠন থেকে আর্থিক সাহায্য নিয়ে চিকিৎসা করছেন বলে জানান। এ কথা শোনার পর তৌহিদ বিদ্রুপ করে বলেন, ‘তুই দশজনকে রান্না করে খাওয়াবি।’ তখন তিনি প্রতিবাদ করলে তৌহিদ কারও নাম উল্লেখ না করে বলেন, ‘অমুক নাকি তিন হাজার টাকা পায়।’

তাঁর কাছে কেউ কেউ টাকা পায় না বললে বিষয়টি নিয়ে উভয়ের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তৌহিদ ও তাঁর কয়েকজন অনুসারী তাঁকে অতিথিকক্ষে (গেস্টরুম) নিয়ে যায় এবং পিঠে আঘাত করেন। এছাড়া তাঁর সঙ্গে অসদাচরণ করে  হল থেকে বের হয়ে যাওয়ার হুমকি দেন। পরে হলের নিরাপত্তা প্রহরীরা এগিয়ে আসলে তাঁকে ছেড়ে দেন।

মারধর ও হুমকি দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে অভিযুক্ত তাসকিফ আল তৌহিদ প্রথম আলোকে বলেন, হলের ছোট ভাইদের সঙ্গে একটু ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল। সেখানে মারধর ও হুমকি দেওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। পরে হলের প্রাধ্যক্ষ স্যার আজ সকালে বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছেন। মূলত তাঁকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করার জন্য একটি পক্ষের প্ররোচনায় এসব অভিযোগ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। ওই ছেলের সঙ্গে শিবিরের সম্পৃক্ততার তথ্য থাকায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। তিনি সাংগঠনিক সফরে ঢাকায় আছেন। তিনি ফিরে এসে বিষয়টা দেখবেন।

নবাব আব্দুল লতিফ হলের প্রাধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমান বলেন, এবিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। পরে উভয়পক্ষকে ডেকে বিষয়টি মিমাংসা করে দিয়েছেন। অভিযোগকারী শিক্ষার্থীর যেন আর কোনো সমস্যা না হয়; বিষয়টি হল প্রশাসন খেয়াল রাখবে।