কাকডাকা ভোরে দলবেঁধে আসা পাখির কলরব কানে আসে। বলতে গেলে রোজ ঘুম ভাঙে এসব পাখির কিচিরমিচির শব্দে। ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখি এসে পড়ছে ঘোপ বাঁওড়ে। অতিথি পাখির কলতানে মুখর হয়ে উঠেছে মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা সদরের ঘোপ বাঁওড়।
শীতের শুরুতেই যেন অপার সৌন্দর্যের মেলা বসেছে এখানে। ঝাঁকে ঝাঁকে নানা প্রজাতির অতিথি পাখির আগমনে বৈচিত্র্যময় নৈসর্গিক সৌন্দর্যের মেলা বসেছে ঘোপ বাঁওড়ে।
উপজেলা সদরের ঘোপ বাঁওড়টি অতিথি পাখিদের নিরাপদ অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। কয়েক বছর আগেও অতিথি পাখি শিকার করে নিয়ে যেতো অসাধু একটি চক্র। দুই তিন বছর ধরে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও প্রচারণায় তা বন্ধ হয়েছে।
মহম্মদপুরের ঘোপ বাঁওড়, নালিয়ার বিল, কাঁনার বিল, ইছামতির বিলসহ বেশ কয়েকটি বিলেও এসেছে হরেক রকমের দেশি-বিদেশি অতিথি পাখি। রয়েছে বক, বালি হাঁস, পানকৌড়ে, শামুকভাঙ্গাসহ হরেক রকমের পাখি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঝাঁকে ঝাঁকে নানা প্রজাতির অতিথি পাখির ডানা মেলে উড়ছে আকাশে, পানিতে ডুব দিয়ে আহার শিকারের মতো মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখা মেলে। মনে হয় যেন দল বেঁধে নেমে পড়েছে খাদ্য সংগ্রহের প্রতিযোগিতায়।
মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য উপভোগ করতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন নানা শ্রেণি- পেশার মানুষ ছুটে আসেন বাওড়ের তীরে। অতিথিরা দূর থেকেই উপভোগ করেন পাখিদের কলরব, মিতালী আর মাতামাতি। যা অন্যরকম এক অনুভূতি এনে দেয়।
বাঁওড় পাড়ের বাসিন্দা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘প্রতিবছর শীতের শুরুতেই বাঁওড়ে অতিথি পাখির দেখা মেলে। পাখিরা ঝাঁক বেধে খাবার সংগ্রহ করে। কিচিরমিচির শব্দে বাঁওড়ের পানিতে নেমে আহার শিকারের প্রতিযোগিতায় মেতে উঠা অতিথি পাখি।’
স্থানীয় নিজাম উদ্দিন বলেন, প্রতি বছর শীতের সময় অতিথি পাখিদের আগমনে মুখরিত থাকে ঘোপ বাঁওড়। শীত কমতে শুরু করলেই এসব পাখি আবার তাদের দেশে পাড়ি জমায়।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) বাসুদেব কুমার মালো বলেন, ‘অতিথি পাখি শুধু প্রকৃতির সৌন্দর্য নয়। এরা ভারসাম্যও রক্ষা করে। জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ঘোপ বাঁওড়ের সৌন্দর্য বৃদ্ধি এবং অতিথি পাখিদের এই অভয়ারণ্য নিরাপদ রাখতে আমাদের লোকজন নিয়মিত খোঁজখবর রাখছেন। এসব পাখি কোন শিকারি যেন শিকার না করতে পারে সে ব্যাপারে প্রশাসন যথেষ্ট তৎপর রয়েছে।’


























