ময়মনসিংহের ভালুকায় মায়ের গড়া প্যাকেজিংয়ের ব্যবসা চালিয়ে সব খরচ বাদে জহিদুল ইসলাম শান্তর বছরে আয় প্রায় ৩ লাখ টাকা। শান্ত ভালুকা সরকারি কলেজ
থেকে স্নাতক শেষ করে মায়ের ওই প্যাকেজিংয়ের ব্যবসার হাল ধরেন। শান্ত জানান, করোনার সময় তার মা রাজিয়া খাতুন দীপালি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন মায়ের অসুখের কারণে প্যাকেজিংয়ের ব্যবসা তিনি নিজেই দেখাশুনা শুরু করেন। বর্তমানে ভালুকা বাসস্ট্যান্ড এলাকার কাইয়ূম মার্কেটে তাদের বক্স তৈরির কারখানা। কারখানায় তাদের চারজন কারিগর রয়েছে।
তিনি আরও জানান, আগের চেয়ে লাভের পরিমাণ অনেক কমে গেছে ব্যবসায়। এখন কাগজের দাম বেড়েছে। একটি বাক্স তৈরি করতে খরচ পড়ে ৬ টাকা, বিক্রি হয়
৭টাকা। আগে একটি বাক্স তৈরি করতে খরচ হতো ৪টাকা, আর বিক্রি হতো ৬ থেকে ৭ টাকা।
শান্ত জানান, ২০০০ সালে গফরগাঁও থেকে তার মা রাজিয়া খাতুন দীপালি ভালুকা পৌরসভার তোতা খাঁর ভিটায় বাসা ভাড়া নিয়ে নিজেই ঘরে বসে শুরু করেন ঠুংগা তৈরির কাজ। টানাপোড়েনের সংসারে পুঁজি তখন তার হাতে মাত্র ৫শ টাকা। ওই ঠুংগা বিক্রি করে সংসারের খরচ করে যে টাকা সঞ্চয় হতো সেটি দিয়ে একটু বেশি কাগজ কিনে উৎপাদন বাড়ানো শুরু করেন। এরপর স্থানীয় আসপাডা সমিতি থেকে কিছু টাকা ঋণ উত্তোলন করেন তার মা। পরে ঠুংগার পাশাপাশি মিষ্টির বাক্স, জুতার বাক্স ও কেকের বাক্সও তৈরি শুরু করেন। ২০০৫ সালের দিকে টুম্পা প্যাকেজিং নামে দোকান খুলেন তারা। সেসময় বক্সের প্রচুর অর্ডার আসে দোকানে। তখন স্থানীয় বাজারে বক্সের চাহিদা থাকায় উৎপাদন বাড়ানোর জন্য কর্মচারিও বাড়ায় তারা। কারখানায় তখন ৭জন কাজ করতো। বিক্রিও ছিল ভালো। সে সময় লাভের টাকা দিয়ে সংসার খরচ চালিয়েও কিছু জমিও কিনেছেন তার মা। বাক্স তৈরির কারিগর আলী হোসেন জানান, তারা এখানে চারজন কারিগর কাজ করছেন। মালিক ঠিক সময়ই তাদেরকে বেতন পরিশোধ করছেন। আরেক কারিগর মাহফুজ বলেন, তিনি ১৬ বছর ধরে কাজ করছেন। মালিকের ব্যবহার খুব ভালো। মালিক যদি ব্যবসায় আরো টাকা খাটাতে পারতো, তাহলে ভালো হতো, এখানে আরো লোক খাটতে পারতো। শান্ত আরো বলেন, বর্তমানে বাক্স তৈরির খরচ বেড়ে যাওয়ায় লাভের পরিমাণ কমে আসছে। এ ব্যবসার বিপরীতে ন্যাশনাল ব্যাংক ভালুকা শাখা থেকে তাদের ১০ লাখ টাকা সিসি লোন নেয়া আছে। ওই লোন বাড়াতে পারলে তাদের ব্যবসায় খাটিয়ে
আরো লাভের মুখ দেখতে পারতেন বলে আশা প্রকাশ করেন।


























