যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে রোগীর চিকিৎসায় বিনামূল্যের দামি ইনজেকশন কোথায় যাচ্ছে ? হাসপাতাল থেকে চাহিদা অনুযায়ী মিলছে না। এ কারণে ভর্তির পর ওষুধ কিনতে না পারায় অনেক রোগীর যথাযথ চিকিৎসা হচ্ছে না।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ভর্তি রোগীদের চিকিৎসার জন্য অধিকাংশ ইনজেকশন বাইরে কিনে আনতে হয়। বিনামূল্যের ইনজেকশন ঠিক মতো দেয়া হয়না। বাইরে থেকে কেনার জন্য স্লিপ করে দেয়া হচ্ছে। ইনজেকশন মেরোপেনাম ১ গ্রাম, সেফুরক্সিম ৭৫০ এমজি, সেফট্রিঅ্যাকসন ১ গ্রাম ও ওমেপ্রাজল রোগীর চিকিৎসার জন্য কিনে আনছেন স্বজনরা। বিগত দিনে হাসপাতালের মহিলা সার্জারী ওয়ার্ডে শিশু বিভাগে চিকিৎসাধীন ১১ বছরের আসিফ হোসেন। পড়ে গিয়ে তার পা ভেঙে গেছে। তার চিকিৎসায় প্রতিদিন দুই টি মেরোপেনাম ইনজেকশন প্রয়োজন। ওয়ার্ডে দায়িত্বরত সেবিকা স্লিপ করে দিয়েছেন বাইরে থেকে কেনার জন্য। তার চিকিৎসায় ৭ দিনে ১৪ টি ইনজেকশন লাগবে। রোগীর পাশে থাকা নানী লিলি বেগম জানান, প্রতিটি ইনজেকশনের দাম সাড়ে ১৩শ’ টাকা। এতো টাকা দিয়ে ওষুধ কেনার মতো সামর্থ্য নেই। তিনি জানান, আসিফের বাবা আবু হানিফ একজন শ্রমিক। অর্থের অভাবে ওষুধ কিনতে না পারায় তার চিকিৎসা বন্ধ ছিলো। মুনিয়া নামে আরেক রোগীর স্বজন শরিফা বেগম জানান, তাদের পারিবারিক অবস্থা খুব বেশি ভালো না। প্রতিদিন দুইটা করে মেরোপেনাম ইনজেকশন কিনতে গিয়ে হাপিয়ে ওঠার মতো অবস্থা। এছাড়া অন্যান্য ওষুধ সামগ্রী তো আছেই।
রাজু আহমেদ নামে একজন জানান, তার স্বজন শাহানারা বেগম নামে এক রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কিন্তু প্রতিদিন দুইটা করে সেফট্রিঅ্যাকসোন এবং ওমেপ্রাজল ইনজেকশন কিনতে হচ্ছে। বিনামূল্যের এসব ইনজেকশন দেয়া হচ্ছেনা।
অর্থো সার্জারী ওয়ার্ডে থাকা কয়েক রোগীর স্বজন জানান, ওয়ার্ডে দায়িত্বরত সেবিকারা বলেছেন বিনামূল্যের সেফুরক্সিম ৭৫০ এমজি ও সেফট্রিঅ্যাকসন ১ গ্রাম ইনজেকশন শেষ। ফলে রোগীর চিকিৎসার জন্য কিনে আনছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এছাড়াও ইনজেকশন হার্টম্যান ,সিপ্রোফ্লক্সাসিন, ম্যাটরোনিডাজল, রোগীদের মাঝে সরবরাহ করা হচ্ছে না।
ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, জীবনদায়ী কিছু ওষুধের তীব্র অভাব ও কিছু অতি প্রয়োজনীয় অনেক ওষুধ শূন্য হয়ে যাওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষ বিপাকে পড়েছেন। বাইরে থেকে দামি এসব ইনজেকশন কেনার মতো সামর্থ না থাকায় তারা হাফিয়ে উঠছেন।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ জানান, দামি ইনজেকশন গুলো শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে সংকট দেখা দিয়েছে। চাহিদাপত্র এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডে পাঠানো হয়েছে। খুব শিগগির এই সংকট কেটে যাবে।


























