- মৌচাকে নিরাপত্তাকর্মী জানান বুথে টাকা নেই
- চাঁনখারপুলে ‘টাকা নেই’ লেখা কাগজ টাঙানো
- মিরপুরে অন্য ব্যাংকের কার্ড ব্যবহারের সেবা বন্ধ
রাজধানীতে এটিএম কার্ড দিয়ে ইসলামী ব্যাংকের ৫টি বুথ ঘুরেও টাকা পাননি রায়হান নামে এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী। তার বাবা মোহাম্মদ আব্দুর রহিম ইসলামী ব্যাংক মৌচাক শাখার একজন পুরোনো গ্রাহক। গত বুধবার রায়হান বাবার কার্ড নিয়ে টাকা তুলতে গিয়েছিলেন। দুটি বুথে কোনো নিরাপত্তাকর্মী ছিল না। একটিতে টাকা না থাকায় নিরাপত্তাকর্মী বুথের ভেতরে ঢুকতে দেয়নি। আরেকটি বুথের ভেতরে কাগজে লেখা ছিল ‘টাকা নাই’। আরেকটিতে গিয়ে দেখলেন বুথের সাটার বন্ধ।
এছাড়া, ইউনিয়ন ব্যাংকের কার্ড দিয়ে নিয়মিত ইসলামী ব্যাংকের বুথ থেকে টাকা তোলেন এমন একজনও গত মঙ্গলবার টাকা তুলতে পারেননি বলে অভিযোগ করেছেন।
মৌচাক শাখার গ্রাহক মোহাম্মদ আব্দুর রহিমের ছেলে রায়হান দৈনিক সবুজ বাংলাকে বলেন, আমাদের বাসা মগবাজার শেরে বাংলা স্কুলের কাছে। আমরা সব সময় বাসার কাছে থাকা বুথ থেকেই টাকা উঠাই। গত বুধবার আমি প্রথমে শেরে বাংলা স্কুলের কাছে অবস্থিত ইসলামী ব্যাংকের এটিএম বুথে যাই আমার প্রয়োজনীয় টাকা উঠানোর জন্য। বুথের ভেতর গিয়ে মেশিনে কার্ড ঢুকিয়ে পিন নম্বর দিয়ে টাকার পরিমাণ লেখার পরই মেসেজ এলো ট্রানজেকশন ফেইল। এখানে ব্যর্থ হয়ে মগবাজার ওয়্যারলেস রেলগেটের কাছে থাকা বুথে যাই। কিন্তু সেখানে গিয়েও দেখি একই অবস্থা। দুটি বুথেই কোনো নিরাপত্তাকর্মী ছিল না। যার ফলে কারণও জানতে পারিনি।
রায়হান বলেন, দুই বুথে টাকা না পেয়ে গেলাম মৌচাক হোসাফ টাওয়ারে ইসলামী ব্যাংক শাখার নিকটস্থ বুথে। সেখানে তিনটি মেশিন আছে। দুটি দিয়ে টাকা তোলা যায়, আর বাকিটা টাকা জমা নেয়। কিন্তু দায়িত্বরত নিরাপত্তা কর্মী বুথে টাকা নেই বলে আমাকে ভেতর ঢুকতে দেননি। পরে উপায় না দেখে গেলাম চাঁনখারপুলে। ওই বুথে দুটি মেশিন আছে। সেখানে ‘টাকা নাই’ লেখা কাগজের একটা পোস্টার টাঙানো। তারপর গেলাম ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পেছনের কর্নারে অর্থাৎ বকশিবাজার মোড়ে। সেখানে গিয়ে দেখি বুথের সাটার বন্ধ। এভাবে ৫টি বুথ ঘুরেও সেদিন টাকা তুলতে পারলাম না।
রায়হানের বাবা মোহাম্মদ আব্দুর রহিম ক্ষোভ প্রকাশ করে দৈনিক সবুজ বাংলাকে বলেন, আমি ইসলামী ব্যাংকের মৌচাক শাখার একজন পুরোনো গ্রাহক। দীর্ঘদিন ধরে এ ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন করি। নিয়মিত ছেলেকে দিয়েই বুথ থেকে টাকা উঠাই। কিন্তু এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন এর আগে কখনো হইনি। দুয়েকটা বুথে মাঝে মধ্যে টাকা নাও থাকতে পারে। কিন্তু একই দিনে ঢাকা শহরের ৫টি বুথে টাকা থাকবে নাÑ এটা আমার কাছে অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে।
তিনি বলেন, এটিএম সুবিধা দেওয়াই হয়েছে যাতে গ্রাহকরা যে কোনো সময় তাদের প্রয়োজনীয় টাকা উঠাতে পারেন। কিন্তু পাঁচটি বুথে টাকা না থাকার কারণটা বুঝতে পারছি না। একজন গ্রাহক হিসেবে আমার জানার অধিকার আছে কেন তারা বুথে টাকা রাখছে না। তাদের টেকনিক্যাল কোনো সমস্যা থাকলেও তো সেটা নোটিস দিয়ে গ্রাহকদেরকে জানিয়ে দেবে। তাহলে গ্রাহকদের আর হয়রানির শিকার হতে হবে না।
অপরদিকে, ইউনিয়ন ব্যাংকের কার্ড দিয়ে মিরপুরের মণিপুরে ইসলামী ব্যাংকের বুথ থেকে নিয়মিত টাকা উঠান ওই এলাকা বসবাসকারী একজন গণমাধ্যমকর্মী। কিন্তু গত মঙ্গলবার টাকা উঠানোর জন্য ওই বুথে গেলে নিরাপত্তাকর্মী তাকে জানান- অন্য ব্যাংকের কার্ড দিয়ে টাকা উত্তোলনের সেবাটি এখন বন্ধ।
ওই গণমাধ্যকম কর্মী এই প্রতিবেদককে বলেন, নিরাপত্তাকর্মীর কথা শুনে আমি অবাক হলাম। বুঝতে পারছি না ইসলামী ব্যাংক কী কারণে এই সেবাটি বন্ধ করলো। বিষয়টা কি এরকম যে তারা নিজেদের গ্রাহকদেরকেই টাকা দিতে পারছেন না?
এ বিষয়ে জানতে ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মনিরুল মওলার মোবাইল নম্বরে ফোন দিলেও রিসিভ হয়নি। পরে তার হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ দিলেও তিনি কোনো উত্তর দেননি।


























