অ্যামি এবং অ্যানো দুই যমজ বোন। তাদের জন্মের পরপরই মায়ের কাছ থেকে আলাদা হয়ে যান তারা। তাদের নিয়ে বিক্রি করে দেয়া হয়। ১৯ বছর পরে তারা একে অপরকে খুঁজে পেয়েছেন। তাদের এই মিলিত হওয়ার পেছেন রয়েছে প্রযুক্তির অবদান। একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠান ও এক টিকটক ভিডিওর মাধ্যমে দুই বোনের পুনর্মিলন ঘটেছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।
ঘটনাটি ইউরোপের দেশ জর্জিয়ার। জন্মের পর দুই বোনের বিচ্ছিন্ন হওয়া ও নাটকীয় পুনর্মিলনের উচ্ছ্বাসিত তারা। বিবিসির বলছে, জর্জিয়ার একটি গুরুতর সমস্যা হাসপাতাল থেকে উদ্বেগজনক হারে শিশু চুরি ও বিক্রি। দশকের পর দশক ধরে জর্জিয়ায় এই সমস্যা চলছে। কিন্তু সমস্যাটির কোনো সুরাহা হচ্ছে না।
অ্যামি ও অ্যানোর পরস্পরকে খুঁজে পাওয়ার এই গল্পের শুরু তাদের বয়স ১২ বছর থেকে। অ্যামি বাড়িতে বসে তার প্রিয় টিভি অনুষ্ঠান ‘জর্জিয়া’স গট ট্যালেন্ট’ দেখছিলেন। প্রতিভা খোঁজের এই অনুষ্ঠানে একটি মেয়েকে নাচতে দেখে অ্যামি রীতিমতো চমকে যান। কারণ মেয়েটি দেখতে অবিকল তার মতোই ছিল। তবে অ্যামি তখনো জানতেন না, এই মেয়েটি তার হারিয়ে যাওয়া যমজ বোন।
এই ঘটনার সাত বছর পর ২০২১ সালের নভেম্বরে অ্যামি টিকটকে নিজের একটি ভিডিও পোস্ট করেন। নীল রঙের চুলের অ্যামির ওই ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায়। ভাইরাল ভিডিওটি অ্যানোকে পাঠান তার এক বন্ধু। অ্যানো দেখেন, ভিডিওতে থাকা মেয়েটি দেখতে একদম তারই মতো।
তখন থেকে ভিডিওর মেয়েটিকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন অ্যানো। কিন্তু তাকে খুঁজে পেতে সে ব্যর্থ হয়। পরে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ভিডিওটি শেয়ার করেন অ্যানো। অ্যামিকে চেনেন, এমন কেউ এই বার্তা দেখে দুজনকে ফেসবুকে যুক্ত করে দেন।
অ্যামির মনে পড়ে যায়, এই মেয়েটিকেই (অ্যানো) তো তিনি বছর সাতেক আগে ‘জর্জিয়া’স গট ট্যালেন্ট’ অনুষ্ঠানে দেখেছিলেন। তিনিও তো এই মেয়েটিকে খুঁজছিলেন। পরে অ্যামি ও অ্যানো পরস্পরের সঙ্গে কথা বলতে বলতে নিজেদের মধ্যকার নানা মিল বের খুঁজে পান। এমনকি দুজনের একই জিনগত রোগ থাকার তথ্যও সামনে আসে।
এক সপ্তাহ পরে তারা দুজনে দেখা করে। অ্যামি যখন তিবিলিসির রুস্তাভেলি মেট্রো স্টেশনে এসকেলেটরের চূড়ান্ত সিঁড়িতে পৌঁছেছিল, তখন সে এবং অ্যানো একে অপরকে প্রথমবারের মতো দেখতে পায়। অ্যামি জানান, ‘এই ঘটনা একটি আয়না দেখার মতো ছিল, ঠিক একই মুখ, একই কণ্ঠ।’ বলেছেন অ্যামি। তখন তিনি জানতেন যে তারা যমজ। অ্যানো জানান, ‘আমি আলিঙ্গন করা পছন্দ করি না, কিন্তু আমি তাকে জড়িয়ে ধরেছিলাম।’
স/মিফা


























