০৯:৪৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আশায় শুরু অস্বস্তিতে শেষ

 

সিলেট টেস্টের প্রথম সেশনে বাংলাদেশের পেসারদের আগুনে বোলিংয়ে রীতিমতো খাবি খেয়েছে ‘টাইমড আউট লঙ্কা’। কিন্তু দ্বিতীয় সেশনে চিত্রপট গেল পাল্টে। এবার আর বোলাররা নায়ক হতে পারেননি। বোলারদের শাসিয়ে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস যখন ম্যাচটা যখন বের করে নিচ্ছিলেন, তখনই নাহিদের গতি জাদু। তার খুনে বোলিংয়ে দুই সেঞ্চুরিয়ানের ২০২ রানের জুটি গেল ভেঙ্গে। তৃতীয় সেশনে আবারও বোলাররা ঘুরে দাঁড়িয়ে ৩০০ রানের আগেই শ্রীলঙ্কাকে থামিয়ে দিয়েছে। তবুও সিলেট টেস্টের প্রথম দিনটা বাংলাদেশের নয়। কারণটা খুব সহজ। শেষ ঘণ্টায় এলোমেলো ব্যাটিংয়ে টাইগাররা আছে শঙ্কায়। ৩২ রানে ৩ উইকেট হারানো বাংলাদেশ তাইতো সিলেট টেস্টের প্রথম দিনটায় লঙ্কা থেকে পিছিয়ে ২৪৮ রানে ।

 

তৃতীয় ওভারেই প্রথম ধাক্কা খায় স্বাগতিকরা। বিশ্ব ফার্নেন্দোর ভেতরে ঢোকা বল পেছনের পায়ে খেলতে গিয়ে পরাস্ত হন জাকির হাসান। এলবিডব্লিউর আউটে রিভিউ নিয়েও লভ হয়নি। পঞ্চম ওভারে একইভাবে বিদায় অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর। বিশ্বকে পেছনের পায়ে খেলতে যান তিনিও। রিভিউও নষ্ট করে বিদায় নেন ৫ রান করে। চারে নামা মুমিনুল হক কাসুন রাজিতার বলে ব্যাটের ফেইস ওপেন করে থার্ডম্যান দিয়ে এক বাউন্ডারি পেয়েছিলেন। আরেকটু উপরে উঠা আরেক বল তার ব্যাটে ছোবল হেনে জমা পড়ে স্লিপ ফিল্ডারের হাতে। ৩১ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর বাকিটা সময় টিকে থাকার জন্য নাইটওয়াচম্যান তাইজুল ইসলামকে পাঠিয়ে দেয় বাংলাদেশ। শেষ দিকে আর কোন বিপদ না হওয়ায় তাইজুল ইসলাম (০*) ও ওপেনার মাহমুদুল হাসান (৯*) অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন।

 

 

দিনের শুরুটা টস জিতে বাংলাদেশের মনমতো হয়েছিল। প্রথম সেশনে খালেদ আহমেদ ও শরীফুল ইসলামের বোলিং তোপে ৫৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বসে শ্রীলঙ্কা। শুরুর সেই ধসের পর ধনাঞ্জয়া ও মেন্ডিস অষ্টম উইকেটে গড়া সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়েন। দিনের দ্বিতীয় সেশনেই শতকের সুবাস পেয়েছেন দুই শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যান ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস। দুজনই শতকের দেখা পেয়েছেন দিনের তৃতীয় ও শেষ সেশনে। যা খাদের কিনার থেকে লঙ্কানদের টেনে তোলে, স্বপ্ন দেখায় প্রথম ইনিংসে তিন শ ছাড়ানো স্কোরের। কিন্তু অভিষিক্ত নাহিদ রানা তা হতে দেননি। এক স্পেলে ৩ উইকেট নিয়ে লঙ্কান ব্যাটিংয়ে ধস নামান। বাকি কাজটা করেন তাইজুল ইসলাম। শেষ সেশনে এই দুই বোলারের সৌজন্যে শ্রীলঙ্কা ৬৮ ওভারে ২৮০ রানে অলআউট হয়। আর দিনের প্রথম সেশনে ৩ উইকেট নিয়ে লঙ্কানদের শুরুতেই ধাক্কা দেন খালেদ।

 

প্রথম সেশনে দাপুটে শুরুর পর তা দ্বিতীয় সেশনে ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ দল। ধনাঞ্জয়া ও মেন্ডিসের প্রতি আক্রমণে খেই হারিয়ে বসেন পেসাররা। দীর্ঘ অপেক্ষার পর ইনিংসের ৫৭তম ওভারে ব্রেক থ্রুর দেখা পায় বাংলাদেশ। নাহিদের বাড়তি বাউন্স মেশানো বলে ব্যাট ছুঁইয়ে উইকেটকিপার লিটন দাসের গ্লাভসে ক্যাচ তোলেন মেন্ডিস। ফেরার আগে ১১ চার ও ২ ছক্কায় ১২৭ বলে ১০২ রান করেছেন, এটি ছিল তাঁর টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম শতক। মেন্ডিসের বিদায়ে ধনাঞ্জয়ার ২০২ রানের জুটিও ভেঙেছে। শতক করা ধনাঞ্জয়ার উইকেটও নিয়েছেন নাহিদ। পরের ওভারে নাহিদের আরও একটি বাউন্সারের ফাঁদে পা দেন ধনাঞ্জয়া। পুল করতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে ধরা পড়েন লঙ্কান অধিনায়ক। ১২ চার ও ১ ছক্কায় ১৩১ বলে ১০২ রান করেন তিনি। নাহিদের গতি সামলাতে পারেননি প্রবাত জয়সুরিয়াও। ১১ বলে ১ রান করে উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ দেন এই বাঁহাতি স্পিনার। মাত্র ৬ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে তখন আরও একবার চাপে পড়ে লঙ্কানরা। সেখান থেকে বেশি দূর এগোয়নি লঙ্কান ইনিংস। লাহিরু কুমারা দ্রুত রান নিতে গিয়ে রান আউট হয়েছেন। এর আগে তাইজুল ইসলাম এসে আউট করেন বিশ্ব ফার্নান্ডোকে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৬৮ ওভারে ২৮০ (ধনাঞ্জয়া ১০২, কামিন্দু ১০২, খালেদ ১৭-২-৭২-৩, নাহিদ ১৪-২-৮৭-৩)

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১০ ওভারে ৩২/৩ (জয় ৯*, তাইজুল ০*; বিশ্ব ৫-১-৯-২, রাজিথা ৫-১-২০-১)

জনপ্রিয় সংবাদ

আশায় শুরু অস্বস্তিতে শেষ

আপডেট সময় : ০৭:৩১:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ মার্চ ২০২৪

 

সিলেট টেস্টের প্রথম সেশনে বাংলাদেশের পেসারদের আগুনে বোলিংয়ে রীতিমতো খাবি খেয়েছে ‘টাইমড আউট লঙ্কা’। কিন্তু দ্বিতীয় সেশনে চিত্রপট গেল পাল্টে। এবার আর বোলাররা নায়ক হতে পারেননি। বোলারদের শাসিয়ে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস যখন ম্যাচটা যখন বের করে নিচ্ছিলেন, তখনই নাহিদের গতি জাদু। তার খুনে বোলিংয়ে দুই সেঞ্চুরিয়ানের ২০২ রানের জুটি গেল ভেঙ্গে। তৃতীয় সেশনে আবারও বোলাররা ঘুরে দাঁড়িয়ে ৩০০ রানের আগেই শ্রীলঙ্কাকে থামিয়ে দিয়েছে। তবুও সিলেট টেস্টের প্রথম দিনটা বাংলাদেশের নয়। কারণটা খুব সহজ। শেষ ঘণ্টায় এলোমেলো ব্যাটিংয়ে টাইগাররা আছে শঙ্কায়। ৩২ রানে ৩ উইকেট হারানো বাংলাদেশ তাইতো সিলেট টেস্টের প্রথম দিনটায় লঙ্কা থেকে পিছিয়ে ২৪৮ রানে ।

 

তৃতীয় ওভারেই প্রথম ধাক্কা খায় স্বাগতিকরা। বিশ্ব ফার্নেন্দোর ভেতরে ঢোকা বল পেছনের পায়ে খেলতে গিয়ে পরাস্ত হন জাকির হাসান। এলবিডব্লিউর আউটে রিভিউ নিয়েও লভ হয়নি। পঞ্চম ওভারে একইভাবে বিদায় অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর। বিশ্বকে পেছনের পায়ে খেলতে যান তিনিও। রিভিউও নষ্ট করে বিদায় নেন ৫ রান করে। চারে নামা মুমিনুল হক কাসুন রাজিতার বলে ব্যাটের ফেইস ওপেন করে থার্ডম্যান দিয়ে এক বাউন্ডারি পেয়েছিলেন। আরেকটু উপরে উঠা আরেক বল তার ব্যাটে ছোবল হেনে জমা পড়ে স্লিপ ফিল্ডারের হাতে। ৩১ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর বাকিটা সময় টিকে থাকার জন্য নাইটওয়াচম্যান তাইজুল ইসলামকে পাঠিয়ে দেয় বাংলাদেশ। শেষ দিকে আর কোন বিপদ না হওয়ায় তাইজুল ইসলাম (০*) ও ওপেনার মাহমুদুল হাসান (৯*) অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন।

 

 

দিনের শুরুটা টস জিতে বাংলাদেশের মনমতো হয়েছিল। প্রথম সেশনে খালেদ আহমেদ ও শরীফুল ইসলামের বোলিং তোপে ৫৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বসে শ্রীলঙ্কা। শুরুর সেই ধসের পর ধনাঞ্জয়া ও মেন্ডিস অষ্টম উইকেটে গড়া সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়েন। দিনের দ্বিতীয় সেশনেই শতকের সুবাস পেয়েছেন দুই শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যান ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস। দুজনই শতকের দেখা পেয়েছেন দিনের তৃতীয় ও শেষ সেশনে। যা খাদের কিনার থেকে লঙ্কানদের টেনে তোলে, স্বপ্ন দেখায় প্রথম ইনিংসে তিন শ ছাড়ানো স্কোরের। কিন্তু অভিষিক্ত নাহিদ রানা তা হতে দেননি। এক স্পেলে ৩ উইকেট নিয়ে লঙ্কান ব্যাটিংয়ে ধস নামান। বাকি কাজটা করেন তাইজুল ইসলাম। শেষ সেশনে এই দুই বোলারের সৌজন্যে শ্রীলঙ্কা ৬৮ ওভারে ২৮০ রানে অলআউট হয়। আর দিনের প্রথম সেশনে ৩ উইকেট নিয়ে লঙ্কানদের শুরুতেই ধাক্কা দেন খালেদ।

 

প্রথম সেশনে দাপুটে শুরুর পর তা দ্বিতীয় সেশনে ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ দল। ধনাঞ্জয়া ও মেন্ডিসের প্রতি আক্রমণে খেই হারিয়ে বসেন পেসাররা। দীর্ঘ অপেক্ষার পর ইনিংসের ৫৭তম ওভারে ব্রেক থ্রুর দেখা পায় বাংলাদেশ। নাহিদের বাড়তি বাউন্স মেশানো বলে ব্যাট ছুঁইয়ে উইকেটকিপার লিটন দাসের গ্লাভসে ক্যাচ তোলেন মেন্ডিস। ফেরার আগে ১১ চার ও ২ ছক্কায় ১২৭ বলে ১০২ রান করেছেন, এটি ছিল তাঁর টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম শতক। মেন্ডিসের বিদায়ে ধনাঞ্জয়ার ২০২ রানের জুটিও ভেঙেছে। শতক করা ধনাঞ্জয়ার উইকেটও নিয়েছেন নাহিদ। পরের ওভারে নাহিদের আরও একটি বাউন্সারের ফাঁদে পা দেন ধনাঞ্জয়া। পুল করতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে ধরা পড়েন লঙ্কান অধিনায়ক। ১২ চার ও ১ ছক্কায় ১৩১ বলে ১০২ রান করেন তিনি। নাহিদের গতি সামলাতে পারেননি প্রবাত জয়সুরিয়াও। ১১ বলে ১ রান করে উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ দেন এই বাঁহাতি স্পিনার। মাত্র ৬ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে তখন আরও একবার চাপে পড়ে লঙ্কানরা। সেখান থেকে বেশি দূর এগোয়নি লঙ্কান ইনিংস। লাহিরু কুমারা দ্রুত রান নিতে গিয়ে রান আউট হয়েছেন। এর আগে তাইজুল ইসলাম এসে আউট করেন বিশ্ব ফার্নান্ডোকে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৬৮ ওভারে ২৮০ (ধনাঞ্জয়া ১০২, কামিন্দু ১০২, খালেদ ১৭-২-৭২-৩, নাহিদ ১৪-২-৮৭-৩)

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১০ ওভারে ৩২/৩ (জয় ৯*, তাইজুল ০*; বিশ্ব ৫-১-৯-২, রাজিথা ৫-১-২০-১)