পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট এবার শতভাগ অনলাইনে বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে কমলাপুর রেল স্টেশনে নেই টিকিটের জন্য দীর্ঘ লাইন আর ভোগন্তির চিরচেনা চিত্র। অনলাইনে টিকিট বিক্রির শুরুর দিন গত রোববার থেকেই যাত্রীদের ব্যাপক সাড়া পাওয়ার কথা জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। গতকাল সোমবার সকাল থেকে বিক্রি হয় ঈদ যাত্রার দ্বিতীয় দিন ৪ এপ্রিলের টিকিট। সকাল ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত পশ্চিমাঞ্চলের ১৪ হাজারের বেশি টিকিট বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার। তিনি বলেন, সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী সকাল ১১টা পর্যন্ত ঢাকা থেকে পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন রুটের ট্রেনের ১৪ হাজারের বেশি টিকিট বিক্রি হয়েছে। এই অঞ্চলের মোট আসন সংখ্যা প্রায় ১৬ হাজার। এর আগে রোববার সকালের পর্বে পশ্চিমাঞ্চলের ১৬ হাজার টিকিটের জন্য প্রথম আধা ঘণ্টায় ওয়েবসাইটে হিট হয় ১৫ লাখ বার।
ভিড়, ঠেলাঠেলির বদলে সহজেই অনলাইনে টিকিট পাওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, এবার খুব সহজে টিকিট পেয়েছি অনলাইনে। আগে যেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে কষ্ট করেও অনেক সময় টিকিট পেতাম না।
আবার বিভিন্ন কারণে টিকিটি না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, মানুষের ব্যস্ততা, সমস্যা থাকতেই পারে। আমি গতকাল ইন্টারন্টে সমস্যার জন্য টিকিট নিতে পারিনি। তারা এমনভাবে সিস্টেম করেছে এক দিনের টিকিটি একদিন, পরে কাটার সুযোগ নেই। আবার টিকিটও অপর্যাপ্ত তাদের।
এদিকে টিকিটবিহীন যাত্রী ঠেকাতে গতবারের মতো এবারও ৪টি স্টেশনে বাঁশ বেঁধে সারিবদ্ধভাবে প্রবেশের অস্থায়ী পথ তৈরি করছে বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা বিভাগ। ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, গতবারের মতো এবারও বাঁশের এই অস্থায়ী পথ তৈরি করা হচ্ছে। পাঁচটি পথ রয়েছে এই অস্থায়ী ব্যবস্থায়। প্রথম পথটি গিয়ে মিলেছে কাউন্টারের সামনে। যেখান থেকে যাত্রীরা ট্রেন ঢাকা স্টেশন ছেড়ে দেওয়ার আগে স্ট্যান্ডিং টিকিট কিনতে পারবেন। তার পরের তিনটি পথ দিয়ে মূলত যাত্রীদের প্রবেশ করতে হবে স্টেশন অংশে। আর পঞ্চম পথটি তৈরি করা হয়েছে, যেসব যাত্রী ট্রেন থেকে নেমে ঢাকায় প্রবেশ করবেন তাদের জন্য।
স্টেশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যারা টিকিট সংগ্রহ করেছেন তারা নির্বিঘ্নে যেন ট্রেনে চড়তে পারেন এবং কেউ যেন বিনা টিকিটে প্ল্যাটফর্মে যেতে না পারেন সেজন্যই এই আয়োজন। মূলত বাঁশ দিয়ে তৈরি এসব অস্থায়ী পথ বোটলনেক সিস্টেমে ৩টি থেকে ২টি প্রবেশ পথে গিয়ে মিলেছে। এসব পথের মুখেই চেক করা হবে যাত্রী ও সহযাত্রীদের টিকিট ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি)। এজন্য বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াতে সব যাত্রীকে ভ্রমণকালে টিকিটসহ জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে অনুরোধ করেছে রেলওয়ে। একই সঙ্গে সময় নিয়ে যাত্রীদের স্টেশনে আসতে বলা হয়েছে।
আগামী ৩ এপ্রিল ভোর ৬টায় রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেন ঢাকা স্টেশন ছেড়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হবে ট্রেনে ঈদ যাত্রা। ঈদ স্পেশাল ট্রেনসহ ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া আন্তঃনগর ট্রেনের মোট আসন সংখ্যা ৩৩ হাজার ৫০০টি। গতবারের চেয়ে এবার আসন সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ৪ হাজার ৭২২টি।

























