শুরু হয়েছে ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা। অন্যদিকে, ঈদের কেনাকাটা বেড়েছে। আর এই অবস্থায় বেড়েছে নগরীতে তীব্র যানজট। অসহনীয় যানজটে তীব্র গরম আরো দুর্বিষহ অবস্থার সৃষ্টি করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসেও নগরীর সড়কগুলোতে দেখা গেছে এই চিত্র।
রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে ও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজধানীর প্রতিটি মোড়ে মোড়েই তীব্র যানজট বিরাজ করছে। যাত্রীদের দীর্ঘক্ষণ জ্যামে বসে থাকতে হচ্ছে।
রাজধানীর বাংলামোটরে শিকড় পরিবহনের ড্রাইভার সাইদুর রহমান বলেন, মতিঝিল থেকে বাংলা মোটর আসতে সময় লেগেছে আড়াই ঘণ্টা। উত্তরা পৌঁছাতে কতক্ষণ লাগবে বলতে পারছি না।
তিনি বলেন, সকালে অফিস শুরুর সময় যানজট থাকে। আবার শেষেও যানজট বাড়ে। এখন আবার ঈদের সময়। সবাই কেনাকাটা করতে বের হচ্ছেন। যার কারণে যানজটের মাত্রা বেশি। তবে ঢাকা শহরে যানজট তো সব সময়ই থাকে।
নিউমার্কেট এলাকার একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কাজ করেন বনানীর বাসিন্দা হাসানুজ্জামান। তিনি বলেন, প্রায় পৌনে এক ঘণ্টায় নিউমার্কেট থেকে ধানমন্ডি ২৭ নম্বর এসেছি। এরপর বিজয় সরণি পার হতে ঠিক এই সময়ই লাগবে। এতো রাস্তা তৈরি হচ্ছে, উন্নয়ন হচ্ছে, কিন্তু সড়কে যানজট তো কমছে না। তীব্র গরমে রোজা রেখে খুবই কষ্ট হচ্ছে।
সুরাইমা তানজিম বলেন, ঈদের সময় অনেকে কেনাকাটা করতে এসে রাস্তার ওপর গাড়ি রাখেন। এতে রাস্তা আরও সংকীর্ণ হয়। আর যানজট তো রাজধানীতে নতুন কিছু নয়। আমরা ভোগান্তি নিয়েই সব সময় চলাফেরা করছি।
রাজধানীর বড় বড় মার্কেটগুলোর সামনে তীব্র যানজট দেখা যায়। নিউমার্কেট এলাকায় একটি বাসে আটকে থাকা যাত্রী তাহমিন মেহরিন বলেন, ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল। বাসে বসে থাকা যাত্রীরা ঘামে ও গরমে অস্থির হয়ে ড্রাইভারকে গাড়ি চালাতে বলে। ড্রাইভার বিরক্ত হয়ে বলেন, গাড়ি কিভাবে চালাব? ট্রাফিক পুলিশ তো সিগন্যাল দিয়ে রেখেছে। এসময় একজন যাত্রী লাফ দিয়ে নিচে নামে। এবং সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাফিক পুলিশকে ধমক দেয়। কেন সে সিগন্যাল ছাড়ে না। এসময় ট্রাফিক পুলিশ সামনের লম্বা জ্যামের সারি দেখান। এটা দেখে ঐ যাত্রী হেসে ফেলে। আবার বাসে উঠে বসে। তখন বাসের যাত্রীরা সবাই হেসে ওঠেন। এই ঘটনার আধা ঘণ্টা পর রাস্তা ফাঁকা হলে ঐ সিগন্যাল ছাড়ে পুলিশ।
এই গরমে এবং জ্যামে যাত্রীরা পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ছেড়ে বিকল্প পথে যাবার চেষ্টা করেন। কিছু কিছু যাত্রী রিকশা নেয়ার চেষ্টা করলে দেখা যায়, তারা ভাড়ার জন্য বাক বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ছেন। রিকশাওয়ালারাও জ্যামের জন্য অনেক বেশি ভাড়া চায়। যা যাত্রীদের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব হয় না। প্রচুর গাড়ির হর্ন, চিৎকার- চেঁচামেচি, ঝগড়া, রাগারাগি এসবের মধ্যেই যাত্রীদের নিজ গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করতে দেখা যায়।























