০৫:৩৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

উপজেলা নির্বাচনে ঈদের আমেজ

 

আসন্ন উপজেলা নির্বাচন ঘিরে আগ্রহী প্রার্থীদের প্রস্তুতি পুরোদমে চলছে। আসন্ন ঈদুল ফিতর ঘিরে প্রার্থীদের প্রস্তুতি আরো বেড়েছে। ঈদের ছুটির দিনগুলোকে কাজে লাগাচ্ছেন প্রার্থীরা। ঈদের সময় প্রার্থীরা তাদের নিজ এলাকার ভোটারদের কাছে যাবেন এবং তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন বলে জানান প্রার্থিতা প্রত্যাশীরা। প্রার্থীদের অনেকেই ইফতারের বিভিন্ন আয়োজনে যোগ দিচ্ছেন। ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন আয়োজনে জনগণের সঙ্গে কথা বলছেন। অনেক প্রার্থী নিজের ব্যক্তিগত সংগঠনের পক্ষে ইফতার, ঈদ উপহারসামগ্রী বিতরণ ও দোয়া মাহফিলে অংশ নিচ্ছেন।

বিভিন্ন এলাকার উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রার্থীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, তারা এবার ঈদ নিজ এলাকাতেই করবেন। সেখানে তারা ঈদগাহে এবং মনোনীত স্থানে ঈদের নামাজ শেষে এলাকাবাসীর সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। এরপর নিজেদের চেনা পরিচিতদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।

সিলেট বালাগঞ্জ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সুলতানা রহমান দিনা দৈনিক সবুজ বাংলাকে বলেন, ‘দল সুযোগ দিলে অবশ্যই নির্বাচন করব। সেরকমই ইচ্ছা আছে। ঈদ উপলক্ষে নিজ এলাকার ভোটারদের কাছে যাচ্ছি। সবার সঙ্গে সাক্ষাৎ করছি। এখন এই সাক্ষাৎ করাটাই সবচেয়ে বড় কাজ’।

ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. জাকারিয়া দৈনিক সবুজ বাংলাকে বলেন, ‘আমি প্রতিদিন আমার ভোটার এলাকায় যাচ্ছি। সেখানকার সব মানুষের সঙ্গে কথা বলছি। সালাম দিচ্ছি। সবার কাছে দোয়া নিচ্ছি। সবার সঙ্গে কথা বলছি, খুব ভালো লাগছে। এবার ঈদেও নির্বাচনী এলাকাতেই থাকব। সবার সঙ্গে কথা বলব। তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করব। দোয়া নিব’।

তিনি বলেন, এখন আর সেই দিন নেই যে, টাকা দিয়ে ভোট কেনা যাবে। এখন মানুষ পরিবর্তন চায়। সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকে ভোটে নির্বাচিত করতে চায়। আমাকে ভোটাররা এটাই বলেছে। ঈদের দিন স্থানীয় ঈদগাহে নামাজ আদায় করব আর এলাকার ভোটারদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করব।

সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী খালেদ আহমদ দৈনিক সবুজ বাংলাকে বলেন, ঈদ ঘিরে আলাদা কোনো প্রস্তুতি না। সারা রোজাই ভোটারদের কাছে যাচ্ছি। বিভিন্ন মাহফিল, ইফতারে যোগদান করছি। সবার সঙ্গে কথা বলছি। মানুষজনও বেশ সাড়া দিচ্ছে। তিনি বলেন, আমি দুবাই প্রবাসী। সেখানে ছোটখাট ব্যবসা করতাম। এখন দেশের টানে ফিরে এসেছি। দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে চাই।

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মো. মখদুম মাসুম মাশরাফি (যুক্তি) দৈনিক সবুজ বাংলাকে বলেন, আমি এখন এলাকাতেই আছি। এলাকার বিভিন্ন ইফতার মাহফিলে প্রতিদিন অংশগ্রহণ করছি। এখানে হিন্দুদের বিভিন্ন ধর্মীয় প্রোগ্রাম থাকছে সেখানে যাচ্ছি। এছাড়া ক্রিকেট খেলা হচ্ছে সেগুলোতে যাচ্ছি। ঈদের পরদিন আমাদের এখানকার ১৯৯৩ ব্যাচ থেকে শুরু করে ২০২৩ সাল পর্যন্ত এসএসসি ব্যাচের মধ্যে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সেখানেও থাকব। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হচ্ছে। সেগুলোতে যোগদান করছি। এলাকার মানুষের কাছ থেকে বেশ সাড়া পাচ্ছি।

এদিকে, প্রার্থীদের জন্য আপিল কর্তৃপক্ষ হিসেবে নিয়োগ পেলেন ৬৩ জেলা প্রশাসক। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) উপসচিব (নির্বাচন পরিচালনা-২) মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত এক নোটিসে এ তথ্য জানা গেছে। নোটিসে বলা হয়েছে, ‘উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা, ২০১৩ এর বিধি ১৮ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন এতদ্বারা উল্লিখিত বিধিমালার ১৭ বিধির অধীন রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক মনোনয়নপত্র বাতিল বা গ্রহণের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত আপীল মীমাংসার জন্য নিম্নবর্ণিত কর্মকর্তাগণকে আপিল কর্তৃপক্ষ হিসেবে নিয়োগ করছে।’ নোটিসে দেখা যায়, দেশের ৬৩ জেলার জেলা প্রশাসককে এই পদের জন্য নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন। মোট ১৬০টি উপজেলার নির্বাচনের ক্ষেত্রে এই নির্দেশনা বলবৎ থাকবে।

এদিকে, ইসি সূত্র জানায়, দেশের উপজেলা নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করতে বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করছেন নির্বাচন কমিশনাররা। তারা বিভাগীয় কমিশনার, বিভাগীয় রেঞ্জের ডিআইজিসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক, ম্যাজিস্ট্রেট, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা-উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ে অংশ নিচ্ছেন।

 

নির্বাচন কমিশনার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান বলেছেন, আমাদের একমাত্র উদ্দেশ্য অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর পরিবেশে কোনো সহিংসতা ছাড়া একটি নির্বাচন উপহার দেওয়া। নির্বাচন কমিশনার আরো বলেন, একটি ভালো নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন কয়েকটি ধাপে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র অনলাইনে জমা দেওয়ার ব্যবস্থা থাকছে, ফলে মনোনয়ন জমা দেওয়ায় বাধা দেওয়ার সুযোগ থাকবে না।

ইসি রাশেদা সুলতানা বলেন, আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিতভাবে প্রয়োগ করবেন। বাইরে গিয়ে যেন তারা বলতে পারেন, আমার ভোট আমি দিয়েছি। এ ভোটের অধিকার নিশ্চিত করাটাই এখন নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব।

 

তিনি বলেন, এ নির্বাচন কমিশনের অধীনে যত ভোট দেশে হবে, অবাধ, সুষ্ঠু ও সুন্দরই হবে। ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। ইচ্ছেমতো প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন। নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ কথা আমরা সবাই বলেছি। তবে এ গুরুত্বপূর্ণ কাজ নির্বাচন কমিশনের পক্ষে একা সম্ভব না। নির্বাচন সফল করতে সব বাহিনীকে এক ধারায় নিয়ে যাওয়াটাই এখন কমিশনের প্রধান কাজ। সমন্বয় ছাড়া কখনো এমন মহাযজ্ঞ করা সম্ভব নয়।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবেন এমন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম আগামী ২০ এপ্রিলের পর শুরু হবে। এতে প্রথম ধাপে ১৫২টি উপজেলার মাঠপর্যায়ে বিপুলসংখ্যক কর্মকর্তারা অংশ নেবেন।

 

কমিশনের জনসংযোগ শাখার পরিচালক মো. শরিফুল আলম জানান, সচিবালয়ের নিজস্ব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার, প্রিসাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারসহ সব নির্বাচন সংশ্লিষ্ট এবং ভোটার তালিকা হালনাগাদকরণ সংক্রান্ত বিধি-বিধানের ওপর নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (ইটিআই) প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। এর আওতায় আগামী ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তাদের জন্য ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহার সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের তফসিলে রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

 

 

ইসির সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানিয়েছেন আগামী ৮, ২৩ ও ২৯ মে এবং ৫ জুন চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। প্রথম ধাপে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমার শেষ তারিখ ১৫ এপ্রিল, বাছাই ১৭ এপ্রিল, প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। ভোট হবে ৮ মে। ইভিএমে ভোট হবে ২২টি উপজেলায় এবং বাকিগুলোয় ব্যালট পেপারে নির্বাচন হবে। নির্বাচন হবে দলীয় প্রতীকে। পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও নির্বাচন করতে পারবেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

সপরিবারে হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছেছেন তারেক রহমান

উপজেলা নির্বাচনে ঈদের আমেজ

আপডেট সময় : ০৪:৪৩:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ এপ্রিল ২০২৪

 

আসন্ন উপজেলা নির্বাচন ঘিরে আগ্রহী প্রার্থীদের প্রস্তুতি পুরোদমে চলছে। আসন্ন ঈদুল ফিতর ঘিরে প্রার্থীদের প্রস্তুতি আরো বেড়েছে। ঈদের ছুটির দিনগুলোকে কাজে লাগাচ্ছেন প্রার্থীরা। ঈদের সময় প্রার্থীরা তাদের নিজ এলাকার ভোটারদের কাছে যাবেন এবং তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন বলে জানান প্রার্থিতা প্রত্যাশীরা। প্রার্থীদের অনেকেই ইফতারের বিভিন্ন আয়োজনে যোগ দিচ্ছেন। ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন আয়োজনে জনগণের সঙ্গে কথা বলছেন। অনেক প্রার্থী নিজের ব্যক্তিগত সংগঠনের পক্ষে ইফতার, ঈদ উপহারসামগ্রী বিতরণ ও দোয়া মাহফিলে অংশ নিচ্ছেন।

বিভিন্ন এলাকার উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রার্থীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, তারা এবার ঈদ নিজ এলাকাতেই করবেন। সেখানে তারা ঈদগাহে এবং মনোনীত স্থানে ঈদের নামাজ শেষে এলাকাবাসীর সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। এরপর নিজেদের চেনা পরিচিতদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।

সিলেট বালাগঞ্জ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সুলতানা রহমান দিনা দৈনিক সবুজ বাংলাকে বলেন, ‘দল সুযোগ দিলে অবশ্যই নির্বাচন করব। সেরকমই ইচ্ছা আছে। ঈদ উপলক্ষে নিজ এলাকার ভোটারদের কাছে যাচ্ছি। সবার সঙ্গে সাক্ষাৎ করছি। এখন এই সাক্ষাৎ করাটাই সবচেয়ে বড় কাজ’।

ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. জাকারিয়া দৈনিক সবুজ বাংলাকে বলেন, ‘আমি প্রতিদিন আমার ভোটার এলাকায় যাচ্ছি। সেখানকার সব মানুষের সঙ্গে কথা বলছি। সালাম দিচ্ছি। সবার কাছে দোয়া নিচ্ছি। সবার সঙ্গে কথা বলছি, খুব ভালো লাগছে। এবার ঈদেও নির্বাচনী এলাকাতেই থাকব। সবার সঙ্গে কথা বলব। তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করব। দোয়া নিব’।

তিনি বলেন, এখন আর সেই দিন নেই যে, টাকা দিয়ে ভোট কেনা যাবে। এখন মানুষ পরিবর্তন চায়। সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকে ভোটে নির্বাচিত করতে চায়। আমাকে ভোটাররা এটাই বলেছে। ঈদের দিন স্থানীয় ঈদগাহে নামাজ আদায় করব আর এলাকার ভোটারদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করব।

সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী খালেদ আহমদ দৈনিক সবুজ বাংলাকে বলেন, ঈদ ঘিরে আলাদা কোনো প্রস্তুতি না। সারা রোজাই ভোটারদের কাছে যাচ্ছি। বিভিন্ন মাহফিল, ইফতারে যোগদান করছি। সবার সঙ্গে কথা বলছি। মানুষজনও বেশ সাড়া দিচ্ছে। তিনি বলেন, আমি দুবাই প্রবাসী। সেখানে ছোটখাট ব্যবসা করতাম। এখন দেশের টানে ফিরে এসেছি। দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে চাই।

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মো. মখদুম মাসুম মাশরাফি (যুক্তি) দৈনিক সবুজ বাংলাকে বলেন, আমি এখন এলাকাতেই আছি। এলাকার বিভিন্ন ইফতার মাহফিলে প্রতিদিন অংশগ্রহণ করছি। এখানে হিন্দুদের বিভিন্ন ধর্মীয় প্রোগ্রাম থাকছে সেখানে যাচ্ছি। এছাড়া ক্রিকেট খেলা হচ্ছে সেগুলোতে যাচ্ছি। ঈদের পরদিন আমাদের এখানকার ১৯৯৩ ব্যাচ থেকে শুরু করে ২০২৩ সাল পর্যন্ত এসএসসি ব্যাচের মধ্যে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সেখানেও থাকব। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হচ্ছে। সেগুলোতে যোগদান করছি। এলাকার মানুষের কাছ থেকে বেশ সাড়া পাচ্ছি।

এদিকে, প্রার্থীদের জন্য আপিল কর্তৃপক্ষ হিসেবে নিয়োগ পেলেন ৬৩ জেলা প্রশাসক। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) উপসচিব (নির্বাচন পরিচালনা-২) মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত এক নোটিসে এ তথ্য জানা গেছে। নোটিসে বলা হয়েছে, ‘উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা, ২০১৩ এর বিধি ১৮ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন এতদ্বারা উল্লিখিত বিধিমালার ১৭ বিধির অধীন রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক মনোনয়নপত্র বাতিল বা গ্রহণের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত আপীল মীমাংসার জন্য নিম্নবর্ণিত কর্মকর্তাগণকে আপিল কর্তৃপক্ষ হিসেবে নিয়োগ করছে।’ নোটিসে দেখা যায়, দেশের ৬৩ জেলার জেলা প্রশাসককে এই পদের জন্য নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন। মোট ১৬০টি উপজেলার নির্বাচনের ক্ষেত্রে এই নির্দেশনা বলবৎ থাকবে।

এদিকে, ইসি সূত্র জানায়, দেশের উপজেলা নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করতে বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করছেন নির্বাচন কমিশনাররা। তারা বিভাগীয় কমিশনার, বিভাগীয় রেঞ্জের ডিআইজিসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক, ম্যাজিস্ট্রেট, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা-উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ে অংশ নিচ্ছেন।

 

নির্বাচন কমিশনার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান বলেছেন, আমাদের একমাত্র উদ্দেশ্য অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর পরিবেশে কোনো সহিংসতা ছাড়া একটি নির্বাচন উপহার দেওয়া। নির্বাচন কমিশনার আরো বলেন, একটি ভালো নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন কয়েকটি ধাপে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র অনলাইনে জমা দেওয়ার ব্যবস্থা থাকছে, ফলে মনোনয়ন জমা দেওয়ায় বাধা দেওয়ার সুযোগ থাকবে না।

ইসি রাশেদা সুলতানা বলেন, আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিতভাবে প্রয়োগ করবেন। বাইরে গিয়ে যেন তারা বলতে পারেন, আমার ভোট আমি দিয়েছি। এ ভোটের অধিকার নিশ্চিত করাটাই এখন নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব।

 

তিনি বলেন, এ নির্বাচন কমিশনের অধীনে যত ভোট দেশে হবে, অবাধ, সুষ্ঠু ও সুন্দরই হবে। ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। ইচ্ছেমতো প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন। নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ কথা আমরা সবাই বলেছি। তবে এ গুরুত্বপূর্ণ কাজ নির্বাচন কমিশনের পক্ষে একা সম্ভব না। নির্বাচন সফল করতে সব বাহিনীকে এক ধারায় নিয়ে যাওয়াটাই এখন কমিশনের প্রধান কাজ। সমন্বয় ছাড়া কখনো এমন মহাযজ্ঞ করা সম্ভব নয়।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবেন এমন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম আগামী ২০ এপ্রিলের পর শুরু হবে। এতে প্রথম ধাপে ১৫২টি উপজেলার মাঠপর্যায়ে বিপুলসংখ্যক কর্মকর্তারা অংশ নেবেন।

 

কমিশনের জনসংযোগ শাখার পরিচালক মো. শরিফুল আলম জানান, সচিবালয়ের নিজস্ব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার, প্রিসাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারসহ সব নির্বাচন সংশ্লিষ্ট এবং ভোটার তালিকা হালনাগাদকরণ সংক্রান্ত বিধি-বিধানের ওপর নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (ইটিআই) প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। এর আওতায় আগামী ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তাদের জন্য ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহার সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের তফসিলে রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

 

 

ইসির সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানিয়েছেন আগামী ৮, ২৩ ও ২৯ মে এবং ৫ জুন চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। প্রথম ধাপে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমার শেষ তারিখ ১৫ এপ্রিল, বাছাই ১৭ এপ্রিল, প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। ভোট হবে ৮ মে। ইভিএমে ভোট হবে ২২টি উপজেলায় এবং বাকিগুলোয় ব্যালট পেপারে নির্বাচন হবে। নির্বাচন হবে দলীয় প্রতীকে। পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও নির্বাচন করতে পারবেন।