০৫:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তৃতীয় দফায় পশ্চিমবঙ্গে লড়াই ৩ দলে

➢ দুর্নীতির দোকান খুলেছে তৃণমূল : মোদি
➢ উনি সাধু বাবা আর সবাই চোর : মমতা

ভারতের সাত ধাপের লোকসভা নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে ৭ মে পশ্চিমবঙ্গের চারটি আসনে ভোট গ্রহণ করা হবে। নির্বাচন সামনে রেখে একাধিকবার পশ্চিমবঙ্গে জনসভা করলেন মোদি। প্রথম দুটি পর্বে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছিল দ্বিমুখী। আর এবার হচ্ছে ত্রিমুখী লড়াই। তৃতীয় পর্বে পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি আসনের মধ্যে চারটিতে নির্বাচন হবে। এই চার আসনকে কংগ্রেসের ঘাঁটি হিসেবে ধরা হয়। তবে এখন এসব আসনে কংগ্রেসের প্রভাব অনেকটা কমে এসেছে। কংগ্রেসের ঘাঁটিতে লড়াই হচ্ছে ত্রিমুখী। প্রার্থী চার দল ও অন্যান্য দল এবং স্বতন্ত্র মিলিয়ে ৫৭ জন। লড়াই হবে তিন দল ও জোটের। একদিকে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি, অন্যদিকে কংগ্রেস-বাম দলের জোট। লড়াইয়ের ক্ষেত্র তিনটি হলো উত্তর মালদা, দক্ষিণ মালদা, মুর্শিদাবাদ ও জঙ্গিপুর আসন। এ চার আসনের এলাকা মূলত একসময়ের কংগ্রেস প্রভাবিত।

 

 

অন্যদিকে আরেকটি ইতিহাসখ্যাত আসন হলো মুর্শিদাবাদ। বাংলার এককালের রাজধানী। নবাব সিরাজের স্মৃতিবাহী। সেই আসনেও এবার লড়াই জোরদার হবে। তৃণমূল বিজেপি ছাড়া এ আসনে এবার লড়ছেন সিপিএম নেতা, সাবেক সংসদ সদস্য ও সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মুহাম্মদ সেলিম। তিনি লড়ছেন কংগ্রেস-বাম দলের জোটের প্রার্থী হয়ে। এই কংগ্রেস গড়ের উত্তর মালদা আসনে এবার লড়ছেন তৃণমূলের প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি নবাগত। সাবেক আইপিএস পুলিশ কর্মকর্তা। কংগ্রেসের হয়ে লড়ছেন মোস্তাক আলম, আর বিজেপির প্রার্থী হয়ে লড়ছেন বিদায়ী সংসদ সদস্য খগেন মুর্মু।

 

 

দক্ষিণ মালদায় লড়ছেন তৃণমূলের শাহনেওয়াজ আলী রায়হান, কংগ্রেসের ঈশা খান চৌধুরী। গণি খান চৌধুরীর বংশধর ঈশা খান। এই আসনের বিদায়ি সংসদ সদস্য হলেন ঈশা খানের বাবা আবু হাসেম খান চৌধুরী। বিজেপির প্রার্থী হয়ে লড়ছেন শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী। মুর্শিদাবাদে লড়ছেন তৃণমূলের আবু তাহের খান, বিজেপির গৌরী শঙ্কর ঘোষ এবং সিপিএমের মুহাম্মদ সেলিম। সেলিম লড়ছেন কংগ্রেস-বাম দলের জোট প্রার্থী হিসেবে।

 

আর জঙ্গিপুর আসনে লড়ছেন তৃণমূলের বিদায়ি সংসদ সদস্য খলিলুর রহমান, বিজেপির ধনঞ্জয় ঘোষ আর কংগ্রেসের মুর্তজা হোসেন। ফলে এই চার আসনে লড়াই হচ্ছে মূলত ত্রিমুখী। তৃণমূল, বিজেপি ও কংগ্রেস-বাম জোট প্রার্থীদের মধ্যে। গত নির্বাচনে এই চার আসনের মধ্যে দুই আসনে জিতেছিল তৃণমূল, একটি করে আসনে জিতেছিল কংগ্রেস ও বিজেপি।

 

গত শুক্রবার বিকালে পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমে বোলপুরের আমোদপুরে বিজেপির প্রার্থীদের সমর্থনে আয়োজিত জনসভায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যে দুর্নীতির দোকান খুলেছে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার উত্তরপত্র জালিয়াতি করে লাখ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে চাকরি দিয়েছে। তৃণমূল এখন এই বাংলায় দুর্নীতির দোকান খুলে বসেছে। তাই তো তৃণমূল কংগ্রেস শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষার উত্তরপত্র বা ওএমআর ফরম জালিয়াতি করে নম্বর দিয়ে লাখ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে চাকরি দিয়েছে। এবার দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের রক্ষা নেই। তাদের সবাইকে শাস্তি পেতে হবে। কেউ ছাড় পাবে না। এটা মোদির গ্যারান্টি।

 

ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্দেশখালী এই বাংলায় মাফিয়ারাজের ফল। এখন সন্দেশখালীর জড়িতদের রক্ষা করার আপ্রাণ চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কিন্তু কেউ রক্ষা পাবে না। লুটেরাদের রক্ষা নেই। গরিবের ধনসম্পদ ও অর্থ যারা লুটেছে, তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে না। লুটেরাদের অর্থ আদায় করে বিলিয়ে দেওয়া হবে গরিবদের মধ্যে। তৃণমূলের লুটেরাদের দল বাংলার শিশুদেরও ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দিয়েছে, শিক্ষায় দুর্নীতি, কয়লায় দুর্নীতি- সবাই এবার শিক্ষা পাবে। তৃণমূলের দুর্নীতির এটা তো ট্রেলার মাত্র। সামনে আরো বহু ছবি আছে। এবার এই বাংলার মানুষ যোগ্য জবাব দেবে।

 

একই সময় পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমানের রায়নায় তৃণমূল আয়োজিত এক নির্বাচনী জনসভায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পশ্চিমবঙ্গের ২৬ হাজার শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি খেয়েছেন মোদিবাবু (নরেন্দ্র মোদি)। শিক্ষকদের চাকরি কেড়ে নিয়ে বড় বড় কথা বলছেন আজ। উনি সাধু বাবা আর সবাই চোর!’

 

 

রাজ্যবাসীর উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সাবধান! ওরা (বিজেপি) সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ), জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) কার্যকর করে আপনাদের অধিকার কেড়ে নেবে। অভিন্ন দেওয়ানি বিধিও কার্যকর করবে। ওদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন। ওরা সংবিধান বিক্রি করবে, দেশটাকে বিক্রি করে দেবে। আপনাদের অধিকার কেড়ে নেবে। রাজভবনে একটা ছোট্ট মেয়ের সঙ্গে কী ব্যবহার করেছেন রাজ্যপাল! আমি মেয়েটির কান্নার ভিডিও দেখেছি। মেয়েটি এখন কাজে যেতে পারছে না। পরপর দুদিন মেয়েটির শ্লীলতাহানি করেছেন রাজ্যপাল।

সভ্য ও মার্জিত সমাজ গঠনে সুশিক্ষিত জাতি গড়ে তুলতে হবে- মোতাহার হোসেন পাটওয়ারী

তৃতীয় দফায় পশ্চিমবঙ্গে লড়াই ৩ দলে

আপডেট সময় : ০৭:৩৭:৫২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ মে ২০২৪

➢ দুর্নীতির দোকান খুলেছে তৃণমূল : মোদি
➢ উনি সাধু বাবা আর সবাই চোর : মমতা

ভারতের সাত ধাপের লোকসভা নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে ৭ মে পশ্চিমবঙ্গের চারটি আসনে ভোট গ্রহণ করা হবে। নির্বাচন সামনে রেখে একাধিকবার পশ্চিমবঙ্গে জনসভা করলেন মোদি। প্রথম দুটি পর্বে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছিল দ্বিমুখী। আর এবার হচ্ছে ত্রিমুখী লড়াই। তৃতীয় পর্বে পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি আসনের মধ্যে চারটিতে নির্বাচন হবে। এই চার আসনকে কংগ্রেসের ঘাঁটি হিসেবে ধরা হয়। তবে এখন এসব আসনে কংগ্রেসের প্রভাব অনেকটা কমে এসেছে। কংগ্রেসের ঘাঁটিতে লড়াই হচ্ছে ত্রিমুখী। প্রার্থী চার দল ও অন্যান্য দল এবং স্বতন্ত্র মিলিয়ে ৫৭ জন। লড়াই হবে তিন দল ও জোটের। একদিকে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি, অন্যদিকে কংগ্রেস-বাম দলের জোট। লড়াইয়ের ক্ষেত্র তিনটি হলো উত্তর মালদা, দক্ষিণ মালদা, মুর্শিদাবাদ ও জঙ্গিপুর আসন। এ চার আসনের এলাকা মূলত একসময়ের কংগ্রেস প্রভাবিত।

 

 

অন্যদিকে আরেকটি ইতিহাসখ্যাত আসন হলো মুর্শিদাবাদ। বাংলার এককালের রাজধানী। নবাব সিরাজের স্মৃতিবাহী। সেই আসনেও এবার লড়াই জোরদার হবে। তৃণমূল বিজেপি ছাড়া এ আসনে এবার লড়ছেন সিপিএম নেতা, সাবেক সংসদ সদস্য ও সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মুহাম্মদ সেলিম। তিনি লড়ছেন কংগ্রেস-বাম দলের জোটের প্রার্থী হয়ে। এই কংগ্রেস গড়ের উত্তর মালদা আসনে এবার লড়ছেন তৃণমূলের প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি নবাগত। সাবেক আইপিএস পুলিশ কর্মকর্তা। কংগ্রেসের হয়ে লড়ছেন মোস্তাক আলম, আর বিজেপির প্রার্থী হয়ে লড়ছেন বিদায়ী সংসদ সদস্য খগেন মুর্মু।

 

 

দক্ষিণ মালদায় লড়ছেন তৃণমূলের শাহনেওয়াজ আলী রায়হান, কংগ্রেসের ঈশা খান চৌধুরী। গণি খান চৌধুরীর বংশধর ঈশা খান। এই আসনের বিদায়ি সংসদ সদস্য হলেন ঈশা খানের বাবা আবু হাসেম খান চৌধুরী। বিজেপির প্রার্থী হয়ে লড়ছেন শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী। মুর্শিদাবাদে লড়ছেন তৃণমূলের আবু তাহের খান, বিজেপির গৌরী শঙ্কর ঘোষ এবং সিপিএমের মুহাম্মদ সেলিম। সেলিম লড়ছেন কংগ্রেস-বাম দলের জোট প্রার্থী হিসেবে।

 

আর জঙ্গিপুর আসনে লড়ছেন তৃণমূলের বিদায়ি সংসদ সদস্য খলিলুর রহমান, বিজেপির ধনঞ্জয় ঘোষ আর কংগ্রেসের মুর্তজা হোসেন। ফলে এই চার আসনে লড়াই হচ্ছে মূলত ত্রিমুখী। তৃণমূল, বিজেপি ও কংগ্রেস-বাম জোট প্রার্থীদের মধ্যে। গত নির্বাচনে এই চার আসনের মধ্যে দুই আসনে জিতেছিল তৃণমূল, একটি করে আসনে জিতেছিল কংগ্রেস ও বিজেপি।

 

গত শুক্রবার বিকালে পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমে বোলপুরের আমোদপুরে বিজেপির প্রার্থীদের সমর্থনে আয়োজিত জনসভায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যে দুর্নীতির দোকান খুলেছে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার উত্তরপত্র জালিয়াতি করে লাখ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে চাকরি দিয়েছে। তৃণমূল এখন এই বাংলায় দুর্নীতির দোকান খুলে বসেছে। তাই তো তৃণমূল কংগ্রেস শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষার উত্তরপত্র বা ওএমআর ফরম জালিয়াতি করে নম্বর দিয়ে লাখ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে চাকরি দিয়েছে। এবার দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের রক্ষা নেই। তাদের সবাইকে শাস্তি পেতে হবে। কেউ ছাড় পাবে না। এটা মোদির গ্যারান্টি।

 

ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্দেশখালী এই বাংলায় মাফিয়ারাজের ফল। এখন সন্দেশখালীর জড়িতদের রক্ষা করার আপ্রাণ চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কিন্তু কেউ রক্ষা পাবে না। লুটেরাদের রক্ষা নেই। গরিবের ধনসম্পদ ও অর্থ যারা লুটেছে, তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে না। লুটেরাদের অর্থ আদায় করে বিলিয়ে দেওয়া হবে গরিবদের মধ্যে। তৃণমূলের লুটেরাদের দল বাংলার শিশুদেরও ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দিয়েছে, শিক্ষায় দুর্নীতি, কয়লায় দুর্নীতি- সবাই এবার শিক্ষা পাবে। তৃণমূলের দুর্নীতির এটা তো ট্রেলার মাত্র। সামনে আরো বহু ছবি আছে। এবার এই বাংলার মানুষ যোগ্য জবাব দেবে।

 

একই সময় পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমানের রায়নায় তৃণমূল আয়োজিত এক নির্বাচনী জনসভায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পশ্চিমবঙ্গের ২৬ হাজার শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি খেয়েছেন মোদিবাবু (নরেন্দ্র মোদি)। শিক্ষকদের চাকরি কেড়ে নিয়ে বড় বড় কথা বলছেন আজ। উনি সাধু বাবা আর সবাই চোর!’

 

 

রাজ্যবাসীর উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সাবধান! ওরা (বিজেপি) সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ), জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) কার্যকর করে আপনাদের অধিকার কেড়ে নেবে। অভিন্ন দেওয়ানি বিধিও কার্যকর করবে। ওদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন। ওরা সংবিধান বিক্রি করবে, দেশটাকে বিক্রি করে দেবে। আপনাদের অধিকার কেড়ে নেবে। রাজভবনে একটা ছোট্ট মেয়ের সঙ্গে কী ব্যবহার করেছেন রাজ্যপাল! আমি মেয়েটির কান্নার ভিডিও দেখেছি। মেয়েটি এখন কাজে যেতে পারছে না। পরপর দুদিন মেয়েটির শ্লীলতাহানি করেছেন রাজ্যপাল।