১০:১৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বৈশ্বিক সংঘর্ষের হুঁশিয়ারি পুতিনের

❖ইউক্রেনে সেনা পাঠানো নিয়ে ন্যাটোকে রাশিয়ার সতর্কতা
❖ ইউক্রেন ইস্যুতে আলোচনা করতে হাঙ্গেরিতে শি জিনপিং

বৈশ্বিক সংঘাতের ঝুঁকি সৃষ্টির জন্য পশ্চিমা দেশগুলোকে অভিযুক্ত করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। তিনি বলেছেন, কাউকেই বিশ্বের বৃহত্তম পারমাণবিক শক্তিধর দেশকে হুমকি দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে না। গতকাল মস্কোর রেড স্কোয়ারে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসি জার্মানির পরাজয়ের বিরুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিজয়ের বার্ষিকীতে তিনি এ সতর্কতা উচ্চারণ করেন। বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলছে, টানা দুই বছরের বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। রাশিয়ান সৈন্যরা ইউক্রেনের পশ্চিমা-সমর্থিত বাহিনীর বিরুদ্ধে সাফল্যের সঙ্গে অগ্রসর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রেসিডেন্ট পুতিন ‘অহংকারী’ পশ্চিমা অভিজাত দেশগুলোকে নাৎসি জার্মানিকে পরাজিত করার ক্ষেত্রে সোভিয়েত ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ভুলে যাওয়ার এবং বিশ্বজুড়ে সংঘাত সৃষ্টি করার অভিযোগ এনেছেন।

পুতিন বলেন, আমরা জানি এই ধরনের উচ্চাকাক্সক্ষার অত্যধিকতা কোন দিকে নিয়ে যায়। রাশিয়া বিশ্বব্যাপী সংঘর্ষ প্রতিরোধে সবকিছু করবে। তবে একই সঙ্গে আমরা কাউকে আমাদের হুমকি দেওয়ার সুযোগ দেব না। আমাদের কৌশলগত বাহিনী সবসময় যুদ্ধের প্রস্তুতির অবস্থায় থাকে। পশ্চিমা দেশগুলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শিক্ষা ভুলে যেতে চাইবে। তবে নাৎসি জার্মানির পরাজয়ের সঙ্গে জড়িত সমস্ত মিত্রদের সম্মান জানিয়েছে রাশিয়া।

জাপানি সামরিকবাদের বিরুদ্ধে চীনা জনগণের লড়াইয়ের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তবে আমরা মনে রেখেছি- মস্কো এবং লেনিনগ্রাদ, রজেভ, স্ট্যালিনগ্রাদ, কুরস্ক এবং খারকিভের কাছে, মিনস্ক, স্মোলেনস্ক এবং কিয়েভের কাছে, মুরমানস্ক থেকে ককেশাস এবং ক্রিমিয়া পর্যন্ত ভারী, রক্তক্ষয়ী যুদ্ধগুলোতে মানবজাতির ভাগ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল।

এদিকে পশ্চিমাদের সামরিক জোট ন্যাটো ইউক্রেনে সেনা পাঠালে তা অত্যন্ত বিপজ্জনক হবে বলে সতর্কতা জারি করেছে রাশিয়া। গত বুধবার রাশিয়া বলেছে, ন্যাটো’র কাছে ইউক্রেনের সাধারণ মানুষের সহযোগিতার আবেদনটি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে রাশিয়া। এই আবেদন অনুযায়ী ন্যাটো যদি ইউক্রেনে সেনা পাঠায় তাহলে তা খুব বিপজ্জনক হবে।

জেলেনস্কির অনুমোদন বা প্রত্যাহারের জন্য ২৫ হাজার ভোট আবশ্যক। তবে এখন পর্যন্ত স্পষ্ট নয় এত সংখ্যক ভোট আবেদনটি পাবে কি না। গত বুধবার সকাল পর্যন্ত ১৫৯৪টি ভোট পেয়েছে তা। ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের ওয়েবসাইটে করা আবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য মিত্রদেরে কাছে ইউক্রেনের সেনা সহায়তা চাওয়া উচিত। পিটিশনের বিষয়ে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ইউক্রেন নিয়ে পূর্বানুমান করা কঠিন। আমরা বারবার বলেছি, ইউক্রেন যুদ্ধে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর সেনাবাহিনীর সরাসরি হস্তক্ষেপ বিশাল বিপদ বয়ে নিয়ে আসবে। তাই এটিকে চ্যালেঞ্জিং উসকানি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এটি খুব সতর্কতার সঙ্গে দেখছি। ইউক্রেনকে ট্যাংক ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রসহ ক্রমবর্ধমান শক্তিশালী অস্ত্র সরবরাহের সমর্থন দিয়েছে ন্যাটো। কিন্তু সেনাদের বিষয়ে কিছু বলেনি এই পশ্চিমা জোটটি।

অন্যদিকে ইউক্রেন যুদ্ধ এবং অবকাঠামো প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করতে হাঙ্গেরি সফরে গেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। গত বুধবার সন্ধ্যায় বুদাপেস্টে পৌঁছান তিনি। গতকাল দেশটির প্রেসিডেন্ট ভিক্টর অরবানের সঙ্গে শির বৈঠক করার কথা ছিল। পাঁচ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো ইউরোপ সফরে গেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট। এই সফরের তৃতীয় দেশ হিসেবে হাঙ্গেরিতে এসেছেন তিনি। শি এমন সময় ইউরোপ সফর করছেন যখন অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলো বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনের ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর চেষ্টা করছে। তাই হাঙ্গেরিতে শির এই সফর বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

জনপ্রিয় সংবাদ

মূল্যস্ফীতি এখনো ঊর্ধ্বমুখী

বৈশ্বিক সংঘর্ষের হুঁশিয়ারি পুতিনের

আপডেট সময় : ০৭:০২:২৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪

❖ইউক্রেনে সেনা পাঠানো নিয়ে ন্যাটোকে রাশিয়ার সতর্কতা
❖ ইউক্রেন ইস্যুতে আলোচনা করতে হাঙ্গেরিতে শি জিনপিং

বৈশ্বিক সংঘাতের ঝুঁকি সৃষ্টির জন্য পশ্চিমা দেশগুলোকে অভিযুক্ত করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। তিনি বলেছেন, কাউকেই বিশ্বের বৃহত্তম পারমাণবিক শক্তিধর দেশকে হুমকি দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে না। গতকাল মস্কোর রেড স্কোয়ারে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসি জার্মানির পরাজয়ের বিরুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিজয়ের বার্ষিকীতে তিনি এ সতর্কতা উচ্চারণ করেন। বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলছে, টানা দুই বছরের বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। রাশিয়ান সৈন্যরা ইউক্রেনের পশ্চিমা-সমর্থিত বাহিনীর বিরুদ্ধে সাফল্যের সঙ্গে অগ্রসর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রেসিডেন্ট পুতিন ‘অহংকারী’ পশ্চিমা অভিজাত দেশগুলোকে নাৎসি জার্মানিকে পরাজিত করার ক্ষেত্রে সোভিয়েত ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ভুলে যাওয়ার এবং বিশ্বজুড়ে সংঘাত সৃষ্টি করার অভিযোগ এনেছেন।

পুতিন বলেন, আমরা জানি এই ধরনের উচ্চাকাক্সক্ষার অত্যধিকতা কোন দিকে নিয়ে যায়। রাশিয়া বিশ্বব্যাপী সংঘর্ষ প্রতিরোধে সবকিছু করবে। তবে একই সঙ্গে আমরা কাউকে আমাদের হুমকি দেওয়ার সুযোগ দেব না। আমাদের কৌশলগত বাহিনী সবসময় যুদ্ধের প্রস্তুতির অবস্থায় থাকে। পশ্চিমা দেশগুলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শিক্ষা ভুলে যেতে চাইবে। তবে নাৎসি জার্মানির পরাজয়ের সঙ্গে জড়িত সমস্ত মিত্রদের সম্মান জানিয়েছে রাশিয়া।

জাপানি সামরিকবাদের বিরুদ্ধে চীনা জনগণের লড়াইয়ের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তবে আমরা মনে রেখেছি- মস্কো এবং লেনিনগ্রাদ, রজেভ, স্ট্যালিনগ্রাদ, কুরস্ক এবং খারকিভের কাছে, মিনস্ক, স্মোলেনস্ক এবং কিয়েভের কাছে, মুরমানস্ক থেকে ককেশাস এবং ক্রিমিয়া পর্যন্ত ভারী, রক্তক্ষয়ী যুদ্ধগুলোতে মানবজাতির ভাগ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল।

এদিকে পশ্চিমাদের সামরিক জোট ন্যাটো ইউক্রেনে সেনা পাঠালে তা অত্যন্ত বিপজ্জনক হবে বলে সতর্কতা জারি করেছে রাশিয়া। গত বুধবার রাশিয়া বলেছে, ন্যাটো’র কাছে ইউক্রেনের সাধারণ মানুষের সহযোগিতার আবেদনটি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে রাশিয়া। এই আবেদন অনুযায়ী ন্যাটো যদি ইউক্রেনে সেনা পাঠায় তাহলে তা খুব বিপজ্জনক হবে।

জেলেনস্কির অনুমোদন বা প্রত্যাহারের জন্য ২৫ হাজার ভোট আবশ্যক। তবে এখন পর্যন্ত স্পষ্ট নয় এত সংখ্যক ভোট আবেদনটি পাবে কি না। গত বুধবার সকাল পর্যন্ত ১৫৯৪টি ভোট পেয়েছে তা। ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের ওয়েবসাইটে করা আবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য মিত্রদেরে কাছে ইউক্রেনের সেনা সহায়তা চাওয়া উচিত। পিটিশনের বিষয়ে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ইউক্রেন নিয়ে পূর্বানুমান করা কঠিন। আমরা বারবার বলেছি, ইউক্রেন যুদ্ধে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর সেনাবাহিনীর সরাসরি হস্তক্ষেপ বিশাল বিপদ বয়ে নিয়ে আসবে। তাই এটিকে চ্যালেঞ্জিং উসকানি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এটি খুব সতর্কতার সঙ্গে দেখছি। ইউক্রেনকে ট্যাংক ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রসহ ক্রমবর্ধমান শক্তিশালী অস্ত্র সরবরাহের সমর্থন দিয়েছে ন্যাটো। কিন্তু সেনাদের বিষয়ে কিছু বলেনি এই পশ্চিমা জোটটি।

অন্যদিকে ইউক্রেন যুদ্ধ এবং অবকাঠামো প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করতে হাঙ্গেরি সফরে গেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। গত বুধবার সন্ধ্যায় বুদাপেস্টে পৌঁছান তিনি। গতকাল দেশটির প্রেসিডেন্ট ভিক্টর অরবানের সঙ্গে শির বৈঠক করার কথা ছিল। পাঁচ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো ইউরোপ সফরে গেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট। এই সফরের তৃতীয় দেশ হিসেবে হাঙ্গেরিতে এসেছেন তিনি। শি এমন সময় ইউরোপ সফর করছেন যখন অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলো বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনের ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর চেষ্টা করছে। তাই হাঙ্গেরিতে শির এই সফর বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।